ঘুমের ওষুধ ছেড়ে স্বাভাবিক ঘুমে আস্থা রাখার পরামর্শ চিকিৎসকদের। ছবি: শাটারস্টক।
আধুনিক জীবনযাপন, মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ততা— এ সব নানাবিধ সমস্যা অনেকের নিশ্চিন্তের ঘুম কেড়েছে। হয় সারা রাত জেগে কাটাতে হয়, নয়তো, মাঝে মাঝেই ভেঙে যায় ঘুম। ফলে অনিদ্রার ক্লান্তি ঘিরে ধরে সহজেই। উপায়ন্তর না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হন ঘুমের ওষুধ খেতে।
কখনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তো কখনও নিজে থেকেই ঘুমের ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা আজকাল কমবেশি অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। কিন্তু এই ঘুমের ওষুধ আসলে প্রবল ক্ষতি করে জীবনের৷ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ঘুমের ওষুধের বাড়াবাড়ি ডেকে আনতে পারে কঠিন অসুখ, এমনকি এর প্রভাবে হতে পারে মৃত্যুও।
‘‘আমার ঘুম হয় না’’— এই ভয় বা বিশ্বাস থেকেই বেশির ভাগ মানুষ ঘুমের ওষুধ খান। প্রথমেই এই বিশ্বাসকে সরিয়ে ফেলা জরুরি। কখনও কোনও অসুখে সাময়িক ভাবে চিকিৎসকরাও এই ওষুধ খেতে দেন ঠিকই, কিন্তু কখনও তা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলা উচিত নয়।’’— জানালেন সুবর্ণবাবু।
আরও পড়ুন: এ বার ঘুমের ওষুধ ছাড়াই নিশ্চিন্তে ঘুমোন, শুধু বদলে ফেলুন এ সব স্বভাব
চিকিৎসকদের মতে, কম-বেশি সব ঘুমের ওষুধেই নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে তোলা তার মধ্যে অন্যতম। ঘুমের ওষুধের প্রভাব সরাসরি থ্যালামাসে পড়ে। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকে নিস্তেজ করে ঘুম আনার এই প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন অনুসরণ করলে তা থাবা বসাবে স্মৃতির ভাণ্ডারে। দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা কড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধে অভ্যস্ত তাঁদের শ্বেত রক্তকণিকার কার্যকারিতাও কমে যায়। শুধু তাই-ই নয়, এই অভ্যাস ক্লান্তি ও অবসাদ ডেকে আনে। হাড়ের সমস্যা থাকলে আজই ছাড়ুন ঘুমের ওষুধ। ঘুমের ওষুধ স্নায়ুর সমস্যা বাড়ানোর সঙ্গে হাড়ের ক্যালসিয়াম কমিয়ে হাড়কেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরের আগে সন্তানের হাতে মোবাইল নয়, বললেন বিল গেটস
রোজের ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস সরাসরি ক্ষতি করে হার্টের। হৃদস্পন্দনের গতি কমিয়ে ফেলার সঙ্গে হার্টের কপাটিকাগুলোর ক্ষতি করে এই ওষুধ। প্রতি দিন স্নায়ুর কার্যকারিতাকে শিথিল করে ঘুম আনা এই ওষুধের অন্যতম কাজ। দীর্ঘ দিন এই ওষুধ সেবনে স্নায়ুর নানা জটিলতা আসে। অতিরিক্ত পরিমাণে এই ধরনের ওষুধ খেলে উচ্চ রক্তচাপ, মাথার যন্ত্রণা বাড়ে।
আরও পড়ুন: ব্রাশ পুরনো হলেই ফেলে দেন? এ সব জানলে আর ফেলবেন না
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গর্ভবতী অবস্থায় এই ওষুধের অতিরিক্ত সেবন বিকলাঙ্গ শিশু জন্মানোর সম্ভাবনাকে উস্কে দেয়। তাই ঘুমের ওষুধ এড়িয়ে স্বাভাবিক উপায়ে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসক বা মনোবিদদের সাহায্য নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy