ইলেকট্রিক বিলে রাশ টানুন কিছু কৌশলে। ছবি: শাটারস্টক।
আট থেকে আশি, গরমে নাকাল সকলে। প্রত্যেকেই চাইছেন বাড়ি ফিরে এসি-র হাওয়ায় সেঁধিয়ে যেতে। সারা রাত চলছে এসি। ভাবছেন গরমটা কোনও মতে উতরে দিই। কিন্তু বিদ্যুতের বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছে ওঠার জোগাড়।
অথচ একটু বুদ্ধি খরচ করলেই বাঁচানো যায় বিদ্যুৎ বিল। সে ক্ষেত্রে প্রথমে প্রয়োজন অভ্যাস বদল। নিজের ভুলগুলিকে চিহ্ণিত করা। বিদ্যুৎ খরচেও ডায়েট আনতে প্রধান হাতিয়ারই কিন্তু সতর্কতা।
জানেন কি, কোন কোন বিশেষ ভুলের দিকে নজর দিলেই একটু বেশি এসি চালানোর পরেও আপনার বিদ্যুতের বিল নিয়ন্ত্রণে থাকবে? দেখে নিন সে সব কৌশল বা অভ্যাস বদলের প্রাথমিক কিছু নিয়ম।
আরও পড়ুন: এ সব জানলে স্ট্র ব্যবহারের আগে দু’বার ভাববেন
বৈদ্যুতিন যন্ত্রাদি ব্যবহারের কিছু নিয়ম মেনে খরচ বাঁচান।
প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিন অহেতুক অপচয় রোধ করবেন। বাড়িতে তিন-চারটি ঘর হলে অপচয় রুখতে সতর্ক থাকুন। যে ঘরটিতে আছেন, সেই ঘরটি ছাড়া অন্য ঘরে যেন আলো বা পাখা না জ্বলে। ঘর থেকে বার হওয়ার সময় আলো, পাখা ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সুইচ বন্ধ করা অভ্যেস করুন। বাড়ি থেকে কিছু দিনের জন্য কোথাও বেড়াতে গেলে মেন সুইচ বন্ধ করতে ভুলবেন না। প্রাকৃতিক আলো-হাওয়ায় ভরসা রাখুন। দিনের বেলায় যতটা কম সম্ভব আলো জ্বালান। ঘরের দেয়াল, ছাদ, পর্দা ও আসবাবপত্র সমূহে সাদা রঙের ব্যবহার ঘরকে উজ্জ্বলতর করে । এতে অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়ে থাকে ।
এ তো গেল প্রাথমিক কিছু সতর্কতা। এ ছাড়াও ঘরের প্রতিটি যন্ত্রের ব্যবহারেও সামান্য রদবদলে ঘটিয়ে আপনার বিদ্যুৎ বিলের অঙ্ক কমানো যেতেই পারে।
ফ্রিজ
ফ্রিজে গরম খাবার রাখবেন না। খাবারের পরিমান বেশি না হলে ফ্রিজ খুব নিম্ন তাপমাত্রায় রাখা প্রয়োজনীয় নয়। মাসে এক দিন ফ্রিজ খালি করুন। ফ্রিজ পরিষ্কার করে রেগুলেটারকে বিশ্রাম দিন। অদরকারে ফ্রিজ চালাবেন না।
কম্পিউটার
একটি কম্পিউটার চব্বিশ ঘণ্টা চললে ফ্রিজের সমান বিদ্যুৎ খরচ হয়। আমরা অজ্ঞানতার বশেই ব্যবহার করি। যদি কম্পিউটার অন রাখতেই হয় সে ক্ষেত্রে মনিটর বন্ধ রাখা উচিত। কারণ মনিটর একাই সিস্টেমের ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। কম্পিউটার স্লিপ-মোডে রাখলে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে পারে।
এসি
‘ব্যুরো অব এনার্জি এফিসিয়েন্সি’ বা বিইই রেটিং করে বাজারের সমস্ত এসি-কে। কুলিং ক্যাপাসিটি, পাওয়ার কনসাম্পশন এবং এনার্জি এফিসিয়েন্সির অনুপাতের উপরে এসির ১ স্টার, ২ স্টার, ৫ স্টার রেটিং দেওয়া হয় এসিকে। যত বেশি স্টার তত কম বিদ্যুৎক্ষয় হবে। পাশাপাশি স্টার রেটিং যত বেশি হবে ততই বাড়বে এসির দাম। তাই অনেকেই ফাইভ স্টার এসি কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু সব সময় ফাইভ স্টার এসি কেনার দরকার হয় না। এসি যদি বছরে গড়ে ১০০০ ঘণ্টার কম চলে এবং বিদ্যুতের ইউনিট পিছু খরচ যদি ৫ টাকা হয় তবে ৩ স্টার স্প্লিট এসি কিনলেই চলবে।
আরও পড়ুন: গরমে ঘামাচিতে নাকাল? এ সব উপায়ে দূরে থাকুক ত্বকের জ্বালাপোড়া থেকে
এলইডি আলো প্রচুর বিদ্যুৎ বাঁচায়।
এর পাশাপাশি এসি চালানোর ব্যাপারে সতর্ক হন। এমনকী এই প্রচন্ড গরমেও সারা রাত এসি চালাতে হয় না। ঘন্টা তিনেক এসি চালিয়ে ঘর ঠাণ্ডা করে নিয়ে, ফ্যান চালিয়ে দিন। প্রতি দিন সারারাত এসি চলাটা রুখতে পারলে, বিদ্যুৎ বিল অর্ধেক হয়ে যাবে।
আলো
নোংরা টিউব লাইট এবং বাল্ব প্রায় ৫০ শতাংশ আলো শোষন করে নেয়। আপনার টিউব লাইট এবং বাল্ব নিয়মিত পরিস্কার করুন। এলইডি আলো প্রচুর বিদ্যুৎ বাঁচায়। বাড়ির আলোগুলি একে একে বদলে এলইডি করে নিন।
ইস্ত্রি
আগে থেকে পরিকল্পনা করে একবারে অনেকগুলি কাপড় একসঙ্গে ইস্ত্রি করুন। বিদ্যুৎ বাঁচবে অনেকটা।
চার্জার
ব্যাটারি চার্জার (যেমন— ল্যাপটপ, সেল ফোন এবং ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদির) সমূহ প্লাগ ইন করে রাখলে তারা শক্তি গ্রহন করতে থাকে সুতরাং চার্জার বৈদ্যুতিক পয়েন্ট থেকে খুলে রাখা উচিত। অনেকেই চার্জার থেকে ফোন খোলেন কিন্তু সুইচটি আর বন্ধ করেন না। এমন হলে সচেতন হোন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy