ক্রনিক কিডনি ডিসঅর্ডার ঠেকাতে মেনে চলুন কিছু বিশেষ নিয়ম।
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও কর্মব্যস্ত জীবনের জটিলতায় যে সব অসুখ নিঃশব্দে থাবা বসাচ্ছে আমাদের শরীরে, তার অন্যতম ক্রনিক কিডনি ডিজওর্ডার বা ‘সিকেডি’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত অনুযায়ী, প্রতি বছরই গোটা বিশ্বে কয়েক লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এই অসুখে। ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর নেফ্রোলজি’ এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব কিডনি ফাউন্ডেশন’-এর চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই এই রোগের শিকার হন বিশ্বের ১৪-১৫ শতাংশ মহিলা ও ১২ শতাংশ পুরুষ।
সাধারণত রোজের জীবনে কিছু অনিয়ম ও অসতর্কতার বশবর্তী হয়ে বেশ কিছু ভুল পদক্ষেপ আমাদের এই অসুখের দিকে ঠেলে দেয়। আর এর আক্রমণ এতই নিঃশব্দে ও ধীরে ধীরে হয় যে ধরা পড়ার আগেই শরীরের ভিতরে তা অনেকটা ক্ষতি সাধন করে ফেলে। তাই সাবধান হতে গেলে এর উপসর্গগুলো জেনে আগে থেকেই সতর্ক থাকা খুব প্রয়োজন। ঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এই অসুখ প্রাথমিক স্তরেই আটকে দিয়ে সুস্থ থাকা যায়। তবে দেরি হলেই তা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় আমাদের।
এই অসুখের প্রভাবে কিডনির স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। শরীরে ছাঁকনির কাজ করে কিডনি। বিপাক ক্রিয়ার পর শরীরে থেকে যাওয়া বর্জ্য ও টক্সিক পদার্থকে রক্ত থেকে ছেঁকে মল-মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বার করে দেয় কিডনি। তাই এটি ক্ষমতা হারালে শরীরে টক্সিক পদার্থ জমে যায়। এর সঙ্গে দূষিত পদার্থ না বার হওয়ায় শরীরে জল ও পিএইচ-এর ভারসাম্য লঙ্ঘিত হয়। কী ভাবে বুঝবেন, অজান্তেই এই রোগের শিকার আপনিও কি না!
আরও পড়ুন: রোগ রুখতে প্রোবায়োটিক চাই, জানালেন ডাক্তাররা
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিজিৎ তরফদারের মতে, সিকেডি-র অন্যতম উপসর্গ বার বার মূত্রনালীতে সংক্রমণ হওয়া। এতে হালকা জ্বরও আসে। সংক্রমণের হাত ধরেই ঘুরে ঘুরে আসে এই জ্বর। জ্বর, সংক্রমণের পাশাপাশি খুব কম পরিশ্রম করলেও হাঁফিয়ে যাওয়া ও শ্বাসকষ্টের শিকার হওয়া মানেও এই অসুখে পড়তে পারেন। হঠাৎই প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা ও তার সঙ্গে রক্তাল্পতা ধরা পড়লে সচেতন হন। হাত-পা-মুখের দিকে নজর রাখুন, পর পর কয়েক দিন অস্বাভাবিক ফোলা দেখলে থাইরয়েডের সঙ্গে কিডনি ফাংশন টেস্টও করিয়ে নিন।
আরও পড়ুন: একা থাকলেও অক্ষম ! বন্ধ্যাত্বের সংজ্ঞা বদলাচ্ছে হু
প্রতিরোধের উপায়
এই অসুখ ঠেকাতে প্রাথমিক ভাবে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন নুন। বেশি নুন বা জলযুক্ত খাবার কিডনির উপর চাপ ফেলে।
অনেকে ভাবেন, প্রচুর জল খেলেই শরীর ভাল থাকে। তা একেবারেই ভুল ধারণা। বরং চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে জানুন ঠিক কতটুকু জল আপনার শরীরের প্রয়োজন। খান ততটুকুই।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
ডায়াবিটিস বা রক্তচাপজনিত সমস্যা থাকলে সে সব নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নইলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এই সব অসুখ।
দরকারি ডায়েট মানার পাশে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। বছরে একবার নিয়মিত কিডনি ফাংশন টেস্ট করিয়ে রাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy