ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: বিকাশ মশান।
তিন রোগীর মৃত্যুতে ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত নিয়ে অভিযোগ ওঠায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) হাসপাতালে তদন্তে এল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। রবিবার সারা রাত ওই দলের সাত সদস্য ব্লাড ব্যাঙ্কের নানা নথিপত্র পরীক্ষা করেন। কথা বলেন কর্মীদের সঙ্গেও। যদিও তদন্তে কী মিলেছে, সে ব্যাপারে তাঁরা কিছু বলতে চাননি। হাসপাতালের ডিরেক্টর অশোককুমার সিংহ বলেন, ‘‘কী ঘটেছে তা তদন্ত শেষ হওয়ার পরে বোঝা যাবে।’’
ডিএসপি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া রক্ত শরীরে যাওয়ার পরে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েক জন রোগীর অবস্থার অবনতি হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের অন্য নানা হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরে তিন জনের মৃত্যুও হয়। এর পরেই ওই সব রোগীর পরিজনেরা দাবি করেন, ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে খারাপ রক্ত দেওয়া হয়েছিল। ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে সংস্থার তরফে তিন সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকেও বিষয়টি জানানো হয়।
রবিবার রাতে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের প্রতিনিধিরা হাসপাতালে পৌঁছন। প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে তদন্ত করার পরে ভোরে হাসপাতাল ছাড়েন তাঁরা। কী মিলেছে, সে প্রশ্নে দলের এক সদস্য শুধু বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের থেকে অবশ্য জানা গিয়েছে, প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কথা মতো তাঁদের হাতে সমস্ত নথিপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। বেশ কিছু জিনিস তাঁরা সিল করে রেখে গিয়েছেন। তার মধ্যে কিছু কাগজপত্র ছাড়াও রয়েছে রক্তের কিট। কে কখন রক্ত দিয়েছে, সে সংক্রান্ত নথিপত্রও দেখেছেন তাঁরা। মৃত্যু হয়েছে এমন দুই রোগীকে যে সব কিট থেকে রক্ত দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিও সংগ্রহ করেছে প্রতিনিধি দলটি। সিল করে রেখে যাওয়া সমস্ত জিনিস নিয়ে মঙ্গলবার বর্ধমানের পূর্ত ভবনে যেতে বলা হয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের।
রাতে তদন্ত চলাকালীন ব্লাড ব্যাঙ্কে ছিলেন হাসপাতালের ডিরেক্টর অশোকবাবু। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময়ে তিনি বলেন, ‘‘কীসের প্রতিক্রিয়ায় দুই রোগীর মৃত্যু হল, তা তদন্তের পরেই পরিষ্কার হবে।’’ ডিএসপি-র অন্যতম জনসংযোগ আধিকারিক চিন্ময় সমাজদারেরও বক্তব্য, ‘‘প্রতিনিধি দল তদন্ত করে গিয়েছেন। এখনও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। কয়েক দিন পরে রিপোর্ট পেলে সব জানা যাবে।’’
এই ঘটনা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে সরব হয়েছে সিটু এবং আইএনটিইউসি। এ দিন তারা হাসপাতাল চত্বরে মৌনী মিছিল করে। পরে সিটু অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, শুধু ব্লাড ব্যাঙ্ক নয়, গোটা হাসাপাতালেই উপযুক্ত কর্মী ও চিকিৎসক নিয়োগ করা দরকার। যন্ত্রপাতিরও আধুনিকীকরণ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই রোগীমৃত্যুর ঘটনার পরে আমাদের কাছে এ সব তথ্য উঠে এসেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে আবেদনও জানিয়েছি।’’ সিটু নেতাদের দাবি, এই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে সেলের চেয়ারম্যানকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy