প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
টিকাকরণ নিয়ে ফের নতুন নিয়ম। বিদেশে পড়তে বা কাজে যাবেন, এমন ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজের জন্য নয়া নির্দেশিকা সোমবার জারি করল কেন্দ্র। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে গেলে পরিচয়পত্র হিসেবে পাসপোর্ট দেখাতে হবে তাঁদের। এবং সেই পাসপোর্টের সঙ্গে টিকার শংসাপত্রের সংযুক্তিকরণ করা হবে। আগামী ৩১ অগস্ট থেকে এই নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
এখনকার নিয়ম অনুযায়ী কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নেওয়ার ৮৪ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন নাগরিকরা। কিন্তু যাঁরা বিদেশে পড়তে বা কাজের জন্য যাবেন, তাঁদের তরফ থেকে সেই সময়কে এগিয়ে আনার জন্য আর্জি জানানো হয় সরকারের কাছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করার পরই বিদেশে যাবেন এমন ব্যক্তিত্বদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময়সীমা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিনের মধ্যেই তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন। কিছু মানুষের জন্য হঠাৎ এই বিরতি কমিয়ে দেওয়ায় নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে মানুষের মনে।
আগের নিয়ম কেন তৈরি হয়েছিল
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী টিকার দু’টি ডোজের মধ্যে ৮ সপ্তাহের বিরতি বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করে দেওয়া হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ কমিটির উপদেশেই এমন নিয়ম বদল। এতে অনেক বেশি সংখ্যায় দেশের মানুষের অর্ধেক টিকাকরণ করিয়ে ফেলা সম্ভব বলেই নতুন নিয়ম। তা ছাড়াও বিশ্বজুড়ে নানা রকম গবেষণায় জানা যায়, কিছু প্রতিষেধকের দুই ডোজের মধ্যে বিরতি বাড়ালে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা আরও বেশি কার্যকরী করে তোলা সম্ভব।
বিরতি বাড়ালে কি প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে
ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিষেধকের এফিকেসি এবং মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা নির্ভর করে প্রতিষেধকের দুই ডোজের বিরতির মধ্যে। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, কিছু প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে দু’টো ডোজের মধ্যে বিরতি বাড়ালে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও বাড়ে। তাদের মধ্যে রয়েছে কোভিশিল্ডও। ৬ সপ্তাহ বিরতিতে দ্বিতীয় ডোজ নিলে এফিকেসি ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। একই ডোজ ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহের বিরতিতে নিলে সেটা বেড়ে ৮০ শতাংশের বেশি হয়ে যায়।
বিরতি কমালে সুরক্ষা কতটা
কোভিশিল্ডের দুই ডোজের বিরতি কমালে কি প্রতিষেধকের কার্যকারিতা কমে যাবে? যাঁরা নতুন নিয়মে আগেই দ্বিতীয় ডোজ নেবেন, প্রতিষেধক কি ঠিক মতো কাজ করবে না তাঁদের শরীরে? এই ধরনের দ্বিধা এর আগেও মানুষের মনে জেগেছিল। যাঁরা নিয়ম বদলানোর আগেই কম বিরতিতে দু’টো ডোজ পেয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের একই রকম আশঙ্কা হয়েছিল। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে প্রতিষেধকের কার্যকারিতা কোনও পরিস্থিতিতেই কমে যাবে না। বিরতি বাড়ালে অ্যান্টিবডির সংখ্যা বাড়তে পারে। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে গেলে যে প্রতিষেধক কাজ করবে না, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই।
বিশ্বজুড়ে কী নিয়ম
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রতিষেধক (ভারতে যেটা কোভিশিল্ড) বিভিন্ন দেশে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশে, কানাডা, শ্রীলঙ্কা এবং ব্রিটেনে দেওয়া হচ্ছে এই প্রতিষেধক। নতুন নিয়ম মেনে দুই ডোজের বিরতি বাড়ানোর হয়েছে বিভিন্ন দেশেই।
ব্রিটেন এবং কানাডায় ৪ মাসের বিরতিতে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার নিয়ম শুরু হয়েছে। অন্য অনেক দেশে দু’টো ভিন্ন প্রতিষেধকের ডোজ কতটা কার্যকরী, তা নিয়ে চলছে নানা রকম গবেষণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy