অবশেষে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের মনোরোগীদের চিকিৎসা শুরু হল। সোমবার সাত জন মনোরোগীকে তুফানগঞ্জ মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত প্রায় তিন মাস ধরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের একটি ঘরে বিবস্ত্র অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছিল ১৬-১৭ বছরের এক মনোরোগীকে। ঘটনাটি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেখা যায় ওই হাসপাতালে মনোরোগীদের রাখা বা চিকিৎসার কোনও পরিকাঠামো নেই। কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছে মনোরোগীদের। তাঁদের মানসিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য সরকারি আইনজীবীদের পরামর্শ নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরকারি আইনজীবীরা জানান, হাসপাতালে রাখা রোগীরা যে মনোরোগী তা মানসিক রোগের চিকিৎসক ছাড়া কী ভাবে আদলতকে জানাবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? কীসের ভিত্তিতে আদালত ওই রোগীদের স্থানান্তরিত করার অনুমতি দেবে? এর পরেই শুরু হয় তৎপরতা।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাজা সাহা বলেন, “এক জন পুরুষ-সহ সাত জন মনোরোগীকে তুফানগঞ্জ হাসপাতালের বহির্বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে বহরমপুরে রেফার করা হয়েছে। আমরা মঙ্গলবার ওই তিন রোগিণীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করব।”
অভিযোগ, মনোরোগীদের হাসপাতালে দিয়ে যায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পুলিশ। তার পর তাঁদের আর খোঁজ নেয় না। হাসপাতালে মনোরোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকেন তাঁরা। প্রায় তিন মাস ধরে এক মনোরোগিণীকে একটি ঘরে বিবস্ত্র অবস্থায় তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। জানলা দিয়ে গলিয়ে দেওয়া হতো খাবার। ওই ঘরেই চলছিল মনোরোগীর মল মূত্র ত্যাগ। কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, ওই উনি হিংস্র। মাঝেমধ্যেই কামড়ে আচঁড়ে দেন।
এ দিন সাত জন মনোরোগীকে গাড়ি করে তুফানগঞ্জে নিয়ে যাওয়ার সময়ে অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই বসেছিলেন তাঁরা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, ‘‘হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসকের প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি বার বার আমারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy