Advertisement
E-Paper

অস্বস্তিকর বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন? বিপদে নেই তো আপনার সন্তান? ৫ বিষয়ে আজই সরাসরি কথা বলুন

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী! আর সেই জন্য বাইরে থেকে অর্ধসত্য জানার আগেই ছেলেমেয়েদের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য দেওয়া উচিত প্রত্যেক বাবা-মায়ের।

এড়িয়ে না গিয়ে সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা উচিত।

এড়িয়ে না গিয়ে সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা উচিত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৮
Share
Save

‘আজকালকার ছেলেমেয়ে’, এই ধরনের শব্দবন্ধগুলির প্রয়োগই দূরে ঠেলে দিচ্ছে নতুন প্রজন্মকে। সেই দূরত্ব বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় যাচ্ছে যে, নাগাল পাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু কৈশোরে মা-বাবা বা অভিভাবকদের সঙ্গে এই ব্যবধানই বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সন্তানদের সঙ্গে সময়মতো কিছু বিষয়ে সরাসরি কথা বলা খুব জরুরি, যেগুলিকে ‘অস্বস্তিকর কথোপকথন’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনই পাঁচ বিষয়ের উল্লেখ করা হল নীচে।

যৌনতা

স্বাভাবিক প্রবৃত্তির কারণেই কৈশোরে যৌনতা নিয়ে প্রবল আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরি হয়। স্কুলে বা টিউশনের সহপাঠীদের সঙ্গে গোপন আলোচনার আসর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ছোটরা। এ দিকে, যাদের থেকে জানার চেষ্টা, তারাও অর্ধসত্য অথবা সম্পূর্ণ ভুল জেনে বসে আছে। এখানেই দায়িত্ব বেড়ে যায় বাবা-মায়ের। অস্বস্তি কাটিয়ে ফেলে কথা বলতে হবে সন্তানদের সঙ্গে। তারা নিজেরা জিজ্ঞাসা করতে সাহস পায় না অধিকাংশ সময়ে, বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে। যৌনতা কী, যৌন সঙ্গম কী, কী ভাবে প্রজনন ঘটে, বয়স অনুযায়ী যতটুকু দরকার, সব বলতে হবে। তবে কেবল এখানেই শেষ নয়, যৌন ইচ্ছা, যৌন পছন্দ, অর্থাৎ প্রান্তিক যৌনতা বা প্রান্তিক লিঙ্গ সম্পর্কে সহজ ভাষায় তথ্য দিতে হবে এবং জানতে হবে সন্তানের চাহিদা কী ধরনের। পাশাপাশি ঋতুচক্র, বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক পরিবর্তন এবং অনুমতি ছাড়া স্পর্শ যে অন্যায়, সে সব বিষয়েও শিক্ষিত করে তুলতে হবে ছোটদের।

সমাজমাধ্যম এবং ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার

কোকিলাবেন ধীরুবাই অম্বানী হাসপাতাল মনোরোগ চিকিৎসক শৌনক অজিঙ্ক বলেন, ‘‘একাধিক কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণী রোগীর চিকিৎসা করতে হয়, যারা অত্যন্ত মানসিক চাপে রয়েছে। সমাজমাধ্যম, অনলাইন বুলিংয়ের শিকার তারা। এই সব মাধ্যমে কুমন্তব্য, অপমান, অবাস্তব জীবনযাত্রার উদাহরণ, ইত্যাদি ছোটদের মনে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তা সৃষ্টি করছে। আন্তর্রজালের অ্যালগরিদম এমন ভাবে তৈরি হয়ে যায়, যা নেতিবাচক চিন্তাভাবনাকে রসদ জোগায়। তা ছাড়া, ছবিতে লাইক, শেয়ার এবং ফলোয়ার সংখ্যা অনেক সময়ে একমাত্র মাপকাঠি হয়ে ওঠে। এগুলির সংখ্যা কম হলে নিজেদের প্রতি বিশ্বাস কমে যায় অথবা বঞ্চিত মনে হয়।’’ সুতরাং সমাজমাধ্যম থেকে কী কী খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে বন্ধুর মতো কথা বলতে হবে মা-বাবাকে। তা ছাড়া, এই সব মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার কী ভাবে হতে পারে, তা-ও বলতে হবে। তা হলে ছোটদের আর মনে হবে না যে, বাবা-মা তাকে বঞ্চিত করতে চাইছে সমাজমাধ্যম মিডিয়া থেকে।

যৌনতা থেকে সমাজমাধ্যমের প্রভাব, কী কী নিয়ে আলোচনা করবেন জানুন।

যৌনতা থেকে সমাজমাধ্যমের প্রভাব, কী কী নিয়ে আলোচনা করবেন জানুন।

নিজের শরীরের প্রতি সম্মান (বডি-ইমেজ)

কৈশোরে শরীরের পরিবর্তনগুলি অনেক সময়ে সন্তানের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্বস্তি বা আত্মবিশ্বাসের অভাব সৃষ্টি করতে পারে। তা ছাড়া, সমাজমাধ্যমের প্রভাবে নিজের শরীর, গায়ের রং, চেহারা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে ছেলেমেয়েরা। সেই সময়ে সন্তানকে বুঝিয়ে বলতে হবে, প্রতিটি শরীরের গঠন আলাদা এবং সেটিই স্বাভাবিক। কোনওটিই মাপকাঠি নয়। ‘আদর্শ শরীর’ বা ‘নিখুঁত দেহগঠন’ বলে আদৌ কিছু হয় না। সমাজমাধ্যম বা বিজ্ঞাপনে যা দেখানো হয়, তা বাস্তব নয়। শরীরের আকৃতি, উচ্চতা, ও গঠন যার যেমন, সে ভাবেই গ্রহণ করা উচিত।

প্রেম ও বন্ধুত্ব

প্রেমের অনুভূতির সঙ্গে পরিচয় শুরু হয় এই বয়স থেকে। কিন্তু সেই অনুভূতি নিয়ে কী করতে হবে, অনেক সময় তা বুঝতে পারে না ছোটরা। কেউ কেউ ভুল করে বসে। প্রেম ও বন্ধুত্ব এবং যে কোনও ধরনের সম্পর্কই মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। মা-বাবার উচিত সন্তানদের সঠিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে সচেতন করে তোলা। প্রেম ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখন এগিয়ে যেতে হবে আর কখন ইতি টানতে হবে, কখনই বা প্রতিবাদ করতে হবে, তা নিয়েও আলোচনা দরকার। সম্পর্কের প্রতি সৎ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির শিক্ষা দিতে হবে।

যেগুলিকে ‘অস্বস্তিকর কথোপকথন’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনই পাঁচ বিষয়ে কথা বলুন।

যেগুলিকে ‘অস্বস্তিকর কথোপকথন’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনই পাঁচ বিষয়ে কথা বলুন।

মানসিক স্বাস্থ্য

কৈশোরে আবেগের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। সে কারণে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। তা ছাড়া উপরোক্ত সব কারণে উদ্বেগ, অবসাদ বা হতাশা তৈরি হয়। সন্তানদের সঙ্গে এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমন ভাবে আলোচনায় প্রবেশ করতে হবে, যাতে তারা বন্ধু হিসেবে মা-বাবাকে সব কথা বলার সাহস পায়।

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী। আর সেই জন্য বাইরে থেকে অর্ধসত্য জানার আগেই ছেলেমেয়েদের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য দেওয়া উচিত প্রত্যেক বাবা-মায়ের। সব প্রসঙ্গে খোলামেলা আলোচনা না হলে ছোটরা বাইরের জগতের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। আর সন্তান সমস্যায় পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগে থেকেই আলোচনা করা দরকার।

Parent-Teen Topics Parental Tips care during puberty child care Lifestyle Tips Healthy Relation of Parents and Child

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}