গরমের দাপট পাড়ছে। পিপাসা মেটাতে জল খেলেও তা সব সময়ে শরীরের জন্য পর্যাপ্ত হচ্ছে না। ফলে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। সেই চাপ গিয়ে পড়ছে কিডনির উপর। পরিসংখ্যান বলছে, হার্টের পাশাপাশি প্রতি বছর কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। এবং সেই সংখ্যাটা দিনে দিনে বাড়ছে।
কিডনি শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। শরীরে জমা বর্জ্য ছেঁকে বার করার কাজটি মূলত কিডনিকেই করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে একটি কিডনি বিকল হয়ে গেলে অন্যটি দিয়ে কাজ চলতে থাকে। ফলে চট করে সমস্যা ধরা পড়ে না। তবে কিডনির সমস্যা ঠেকিয়ে রাখতে খাওয়াদাওয়ায় যেমন লাগাম টানতে হয়, তেমন নিয়ম করে যোগাসন করলেও উপকার হয়।
যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, রোজ নটরাজাসন অভ্যাস করলে সামগ্রিক ভাবে কিডনি ভাল থাকে। রেচনতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটির কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। সংস্কৃতে ‘নট’ শব্দের অর্থ ‘নাচ’। ‘রাজ’ শব্দের অর্থ ‘রাজা’ বা ‘গুরু’। পুরাণে বর্ণিত নটরাজ আসলে নৃত্যরত শিব। ইংরেজিতে এই ভঙ্গিটি ‘লর্ড অফ দ্য ডান্স পোজ়’ নামেও পরিচিত। কী ভাবে নটরাজাসন করবেন, পদ্ধতি শিখে নিন।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। কোমর, পিঠ যেন টান টান থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে।
এ বার ডান হাঁটু ভাঁজ করে যতটা সম্ভব পিছন, অর্থাৎ পিঠের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। ডান হাতটি ডান কানের পাশ দিয়ে কাঁধের উপর তুলুন। এমন অবস্থানে রাখবেন যেন ডান পায়ের পাতা বা বৃদ্ধাঙ্গুল ডান হাত দিয়ে ধরা যায়। সেই অনুযায়ী শরীরটাকেও সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে নেবেন।
পুরো শরীরের ভার থাকবে বাঁ পায়ের উপর। সেই ভাবে ভারসাম্য বা ব্যালান্স ধরে রাখতে হবে।
অন্য হাতটি সামনের দিকে প্রসারিত করুন। হাতের তালু থাকবে ঘরের ছাদের দিকে।
এই অবস্থান ধরে রাখুন ৩০ সেকেন্ড। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। শুরুতেই দীর্ঘ ক্ষণ ব্যালান্স ধরে রাখা কঠিন।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
নটরাজাসন অভ্যাস করলে কাঁধ, পিঠ, কোমর এবং পায়ের পেশি মজবুত হয়। বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে এই আসন। হাত, তলপেট, ঊরুর পেশিও টোন্ড হয়। শরীরের পাশাপাশি মনেরও খেয়াল রাখে এই আসন। একাগ্রতা বাড়িয়ে তোলে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে নটরাজাসন।
সতর্কতা:
হার্টের সমস্যা কিংবা অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এই আসন করবেন না। কোমর কিংবা মেরুদণ্ডে কোনও ভাবে চোট লেগে থাকলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ভার্টিগো বা মাথা ঘোরার প্রবণতা থাকলেও নটরাজাসন অভ্যাস করতে যাবেন না।