ছেলের বকলমে কী লালুপ্রসাদ নিজেই দফতর চালাচ্ছেন? গত কাল সন্ধ্যায় ইন্দিরা গাঁধী মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (আইজিএমএস) তাঁর ‘আচমকা অভিযানে’ সেই প্রশ্নই উঠছে। যদিও লালুপ্রসাদ সাফাই দিয়েছেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্কে থাকতে গেলে রাজনৈতিক নেতাদের এ ভাবে দেখা করতে যেতে হয়।’’ তবে সেই সাফাইয়ে থামতে চাইছে না রাজনৈতিক বির্তক। এর আগে দফতরের সচিবদের ফোনে নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিরোধী দল বিজেপি ইতিমধ্যেই লালুপ্রসাদকে ‘সংবিধান-বহির্ভূত ক্ষমতাভোগী’ বলে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। তবে সরকারের তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিষয়টি নিয়ে খুশি নন বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত কাল সন্ধ্যায় আচমকা আইজিএমএসে হাজির হন আরজেডি প্রধান তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ যাদবের বাবা। প্রথমে প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করেছিলেন পরিচিত কাউকে দেখতে এসেছেন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সংস্থার অধিকর্তা এবং সিনিয়র চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন কাউকে দেখতে নয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাবা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছেন। হাসপাতালে পৌঁছেই নিজের অননুকরণীয় ভঙ্গিতে তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডেও ঘোরাঘুরি করেন।
এর পরে তিনি ফিরে যান। লালুপ্রসাদের আচমকা হাসপাতাল অভিযানের খবর পাওয়ার পরেই রাতে বিজেপি নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। দলের নেতা নন্দকিশোর যাদব তাঁকে ‘সংবিধান-বহির্ভূত ক্ষমতাভোগী’ বলে কটাক্ষ করেন।
তবে হাসপাতালের চিকিৎসকদের বক্তব্য, গত ১০ বছরে মুখ্যমন্ত্রী তো দূরের কথা, স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা পর্যন্ত বিহারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাসপাতাল ইন্দিরা গাঁধী মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (আইজিএমএস) পা দেননি। এই অবস্থায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের শাসক জোটের প্রধান শরিক দলের নেতাকে কাছে পেয়ে নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা।
এ ভাবে সরকারি হাসপাতালে তাঁর অভিযানে অন্যায় কিছু দেখছেন না খোদ লালুপ্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘পাশেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে আমার এক পরিচিত ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে ফিরছিলাম। পথে ইন্দিরা গাঁধী মেডিক্যাল সায়েন্সেস। সেখানে পরিস্থিতি কেমন তা দেখতে ঢুকে গেলাম।’’
১৯৯৭ সালে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়ার পরে এই হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনেই ভর্তি হয়েছিলেন লালুপ্রসাদ। সে সময়ে বেশ কয়েক মাস এখানেই ছিলেন তিনি। এখান থেকেই দলের কাজ চালাতেন লালু। বাবার
এই সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ কী মনে করছেন তা জানতে বারবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। জেডিইউ নেতারাও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy