অন্য রূপে। ইটানগরের প্রচারসভায় নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি: পিটিআই।
নিছক নির্বাচনী সভা নয়। আক্ষরিক অর্থেই জবাবি আক্রমণ! গত কাল কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী অসমের জনসভায় বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ ও অসমের চারটি জনসভায় সনিয়াকে পাল্টা আক্রমণ হানলেন নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির ‘দেশপ্রেম’ নিয়ে সনিয়ার কটাক্ষের জবাবে মোদী জানিয়ে দিলেন, তাঁদের কারও, কোনও শংসা পত্রের প্রয়োজন নেই।
আজ উত্তর-পূর্বে মোদীর প্রথম সভাটি ছিল ইটানগরে। মাথায় ধনেশের ঠোঁট-শোভিত স্থানীয় তাজ। হাতে উপজাতি তরবারি। প্রথম থেকেই যুদ্ধংদেহি মেজাজে মোদী উত্থাপন করেন দিল্লিতে উত্তর-পূর্বের ছাত্রছাত্রীদের উপরে লাগাতার হেনস্থা ও নিদো টানিয়ার মৃত্যুর ঘটনা।
তাঁর কথায়, “দেশের রাজধানী ধর্ষণ-নগরীতে পরিণত হয়েছে। উত্তর-পূর্বের ছাত্রকে সেখানে হত্যা করা হচ্ছে। এখানকার মেয়েদের সেখানে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অথচ সনিয়াজি গত কাল উত্তর-পূর্বে এসে এ নিয়ে সামান্য সমবেদনাটুকুও জানাননি।” অরুণাচলে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নামার আগেই কংগ্রেস বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১১টি আসনে জিতে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বিজেপি প্রার্থীর সই নকল করে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, “এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো লড়তেই ভয় পান। ভোটের আগে বাহুবলে, অর্থবলে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। অরুণাচলে সবজি বাজারের মতো বিধায়ক কেনাবেচার বাজার বসিয়েছে কংগ্রেস।” এরপরেই রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির উদ্দেশে মোদীর স্পষ্ট হুমকি, “১৬ মে-র পর দিল্লিতে আপনাকে কে বাঁচায় দেখব!”
শোণিতপুরে জনসভায় নরেন্দ্র মোদী।
সোমবার উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
সনিয়া গত কাল বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, “স্বাধীনতার সময় বিজেপির পাত্তা ছিল না। স্বাধীনতার পরে ওরা কেবল কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে।” তাঁর মোকাবিলায় গুজরাতি নরেনভাই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লন আর এক গুজরাতিকেই। তিনি বলেন, “গাঁধীজি কংগ্রেস নেতাদের সবচেয়ে ভাল বুঝতেন। তাই স্বাধীনতার পরে তিনি বলেছিলেন, এ বার কংগ্রেস ভেঙে দেওয়া হোক।” মোদীর কটাক্ষ, “কংগ্রেসের হাতে পড়ে দেশের কী অবস্থা হবে তা গাঁধীজি বুঝেছিলেন। আসুন, এ বার বাপুর স্বপ্ন সফল করি। কংগ্রেসকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিই।”
সনিয়া বিজেপি নেতাদের ‘অতি দেশভক্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। অরুণাচল ও অসমের বিশ্বনাথ চারিয়ালি, গোগামুখ, শিবসাগরের সভায় মোদী ফের তুলে আনেন সেই বিদেশিনী-বিতর্ক। প্রশ্ন তোলেন, “ইতালিয় সনিয়া গাঁধী কেরলের মৎসজীবীদের হত্যাকারী দুই ইতালিয় নৌসেনাকে দেশে পালাতে সাহায্য করেন। সুপ্রিম কোর্টের কঠোর মনোভাবই ওই খুনি ইতালিয় নৌসেনাদের ফের ভারতে ফিরতে বাধ্য করেছে। সুতরাং দেশভক্তি নিয়ে কারও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই।”
অসমে রাহুল গাঁধী, মনমোহন সিংহ, সনিয়ার সভায় ভিড় এ বার অনেকটাই পাতলা। উল্টো দিকে মোদীর সব ক’টি সভাতেই ছিল মানুষের ভিড়। তিনি বলেন, “এত বড় জনসভা আমি দেখিনি। আমার আর কোনও সমীক্ষার প্রয়োজন নেই। ভোটের দিন ঘোষণার আগেই মানুষ রায় দিয়ে দিয়েছেন। আমি নিশ্চিন্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy