নয়াদিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর ইফতার পার্টিতে লালুপ্রসাদ যাদব। ছবি: পিটিআই
সরকার গড়ার সেমিফাইনাল ম্যাচে এ বার ৪-৪-২ ছকে খেলতে নামছেন লালু-নীতীশ। প্রতিপক্ষ এই মুহূর্তে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিজেপি ও তাদের সঙ্গী রামবিলাস পাসোয়ানের দল। এই লড়াইয়ে রক্ষণ সামলাতে কংগ্রেসকেও সামিল করেছেন তাঁরা। বড় ম্যাচের আগে আর পাঁচ জন নেতা যা বলে থাকেন, লালু প্রসাদ ও নীতীশ কুমার ঠিক সেই কথাই বোঝাচ্ছেন খোলোয়াড়দের আগে যা হয়েছে মনে না-রেখে, সমস্ত ইগোর লড়াই শিকেয় তুলে রেখে এ বার ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ো। মনে রেখো বাছারা, এটা নক-আউট ম্যাচ।
বিজেপির মোকাবিলায় বিহারে বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে এক সঙ্গে লড়ছেন লালু-নীতীশ। তিক্ততা ছেড়ে ২০ বছর পরে এক অন্যের কাছাকাছি এসেছেন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ এবং জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। এই জোটে সামিল হয়েছে বিহারে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা দল কংগ্রেসও। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন যদি ফাইনাল ম্যাচ হয়, এই উপনির্বাচনকে সেমিফাইনাল বলেই ধরছে তিন দলের জোট। মানুষ এই জোটকে কতটা গ্রহণ করছে, তার একটা ধারণা অবশ্যই দেবে ২১ অগস্ট বিধানসভার এই উপনির্বাচন। ১০টি আসনে আরজেডি লড়ছে ৪টিতে, জেডিইউ ৪ এবং কংগ্রেস ২টি আসনে। নরকাটিয়াগঞ্জ, রাজনগর, জালে, ছাপরা, হাজিপুর, মহিউদ্দিননগর, পরবত্তা, ভাগলপুর, বাঁকা এবং মোহনিয়া এই ১০টি আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। ৫ বিধায়ক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় উপনির্বাচন হচ্ছে তাঁদের আসনগুলিতে। বাকি ৫টি আসন শূন্য হয়েছে দল বদলের কারণে। ১০টির মধ্যে বিজেপির দখলে ছিল ৬টি, আরজেডি-র ৩টি এবং জেডিইউ-র একটি। এর পর পরিস্থিতি বদলেছে। পুরনো এনডিএ-র সময়ে নীতীশ-বিজেপি এক সঙ্গে লড়ে বেশির ভাগ আসন দখলে রেখেছিল। এ বার এনডিএ জোটের শরিক বদলেছে। নীতীশ সরে সেখানে এসেছে রামবিলাস পাসোয়ানের এলজেপি এবং রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি।
নীতীশ কুমার আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বিজেপি-বিরোধী জোট বিহার থেকে শুরু হবে। জেডিইউ সভাপতি বশিষ্ঠনারায়ণ সিংহ এ দিন বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।” আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদও বলেছেন, “বিজেপিকে ঠেকাতে কোনও দলই আমাদের কাছে ব্রাত্য নয়।” কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রেমচন্দ্র মিশ্র বলেন, “বিজেপি-বিরোধী লড়াইকে জোরদার করার জন্যই কংগ্রেস এই জোটে সামিল হচ্ছে।” লোকসভায় বিজেপির বিপুল সাফল্যে জেডিইউ এবং আরজেডি কোণঠাসা। লোকসভা ভোটে আরজেডি ২০%, জেডিইউ ১৫.৮% এবং কংগ্রেস ৮% ভোট পায়। সেখানে বিজেপি ২৯%, লোক জনশক্তি ৬% এবং লোক সমতা পার্টি পেয়েছে ৩% ভোট। অঙ্কের হিসেবে বিজেপি-বিরোধী এই জোটে ৪৩%-এর বেশি ভোট আসার কথা। অন্য দিকে, এনডিএ জোটে আসবে ৩৮%।
লালু-নীতীশের দিকে সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশের সমর্থন আছে। সঙ্গে যাদবদের সমর্থন আছে লালুর দিকে। তেমনি অধিকাংশ পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভোটও পড়ে নীতীশের পক্ষে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের দিকে রয়েছে উচ্চ বর্ণের কিছু ভোটারের সমর্থন। যোটের নেতারা মনে করছেন, ফলে এই সমীকরণ ভোটের ফলে প্রতিফলিত হলে বিজেপিকে অবশ্যই মোকাবিলা করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy