Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম, মানলেন দিগ্বিজয়

শুধু নির্বাচন লড়াইতে নয়। ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’-এর লড়াইয়েও কংগ্রেস বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়ল। নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রীকে নিয়ে যিনি মাঠে নেমেছিলেন, সেই দিগ্বিজয় সিংহ আজ স্বীকার করতে বাধ্য হলেন, এক সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর গোপন প্রেম চলছে।

অমৃতা রাই ও দিগ্বিজয় সিংহ

অমৃতা রাই ও দিগ্বিজয় সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০৪:৩৪
Share: Save:

শুধু নির্বাচন লড়াইতে নয়। ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’-এর লড়াইয়েও কংগ্রেস বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়ল।

নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রীকে নিয়ে যিনি মাঠে নেমেছিলেন, সেই দিগ্বিজয় সিংহ আজ স্বীকার করতে বাধ্য হলেন, এক সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর গোপন প্রেম চলছে। অথচ নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রী কিন্তু গুজরাতে আজ শুধু লাইন দিয়ে ভোটই দিলেন, তা নয়। জানালেন, রীতিমতো পাঁজিতে সময়ক্ষণ দেখেই তিনি ভোট দিয়েছেন।

শিকার শুধু ফস্কালোই না। শিকারি এখন নিজেই শিকার হলেন।

বিজেপির মীনাক্ষি লেখিরা এখন বলছেন, “দিগ্বিজয় তো নীতি-নৈতিকতার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করলেন! অন্যকে জ্ঞান দেওয়ার আগে নিজের দিকে তাকানো উচিত!”

কানাঘুষোটা চলছিল অনেক দিন ধরেই। সাতষট্টি বছরের দিগ্বিজয় সিংহের সঙ্গে বছর চল্লিশের অমৃতা রাইয়ের সম্পর্ক ছিল দিল্লির রাজনীতিকদের আড্ডার রসালো বিষয়। কিছু দিন আগে মন্দিরে পুজো দেওয়ার একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল দু’জনকে। এর মধ্যেই ভোটের বাজারে কে যেন দু’জনের একগুচ্ছ ঘনিষ্ঠ ছবি প্রকাশ করে দেয়। কংগ্রেসের হয়ে বিজেপি নেতাদের দিকে কাদা ছোঁড়ায় এত দিন দিগ্বিজয় সিংহই নেতৃত্ব দিতেন। ছবির কোলাজ দেখে এ বার নিজেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার সারাদিন এই ছবির কোলাজ নিয়ে জোর চর্চা চলে। বিজেপি শিবির থেকেও প্রশ্ন ওঠে। তার পরে বাধ্য হয়ে আজ দিগ্বিজয় অমৃতার সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের কথা ঘোষণা করে দেন। জানিয়ে দেন, “অমৃতার সঙ্গে সম্পর্কটা স্বীকার করে নিতে আমার কোনও দ্বিধা নেই।”

অমৃতা রাই দিল্লির সাংবাদিক জগতে পরিচিত নাম। একাধিক বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম, বর্তমানে রাজ্যসভা টেলিভিশনের উপস্থাপিকা হিসেবে চেনা মুখ। মনে করা হচ্ছে, কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা দিগ্বিজয়ের সঙ্গে কাজের সূত্রেই তাঁর আলাপ। তার পরই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে রাজনীতিকের সঙ্গে সাংবাদিকের প্রেম।

এই প্রেমের পরিণতি কী? বিয়ে?

এমনিতে অবশ্য বিয়েতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। দিগ্বিজয়ের স্ত্রী আশা সিংহ ফেব্রুয়ারি মাসে প্রয়াত হয়েছেন। অনেক দিন ধরেই তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন। উল্টো দিকে অমৃতা বিবাহিত হলেও স্বামীর থেকে ইতিমধ্যেই আলাদা হয়ে গিয়েছেন। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। আজ অমৃতা জানিয়েছেন, বিবাহবিচ্ছেদ

হয়ে গেলেই তাঁর সঙ্গে দিগ্বিজয় সিংহের বিয়ে হবে। অমৃতার স্বামী জানিয়েছেন, অমৃতা স্বাধীন ভাবে নিজের জীবনের যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি সেটাকেই সম্মান করবেন।

দিগ্বিজয় নিজে অবশ্য সরাসরি বিয়ের কথা বলেননি। চার কন্যা, এক পুত্রের পিতা তিনি। পুত্র রাজ্যবর্ধন মধ্যপ্রদেশের রাঘোগড় থেকে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ছেন। দিগ্বিজয় শুধু বলেছেন, প্রেমিকার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেলেই এই সম্পর্ক পরিণতি পাবে। তবে প্রেমিকার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ ছবি যে ভাবে প্রকাশ হয়ে গিয়েছে, তাতে ঠাকুর দিগ্বিজয় সিংহ ভয়ানক চটেছেন। কিছু দিন আগেই তিনি নরেন্দ্র মোদীর ‘ব্যক্তিগত জীবন’ নিয়ে খোঁচা মারায় বিরাম দিচ্ছিলেন না। আজ সেই তিনিই বলছেন, ছবি ফাঁস করে দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানো হয়েছে।

কে ছবি ফাঁস করে দিল, তা এখনও কেউ জানে না। প্রশ্ন উঠেছে, ছবিগুলো তুলল কে?

মোবাইল-ইন্টারনেটের অভিধানে এখন নতুন একটি শব্দের প্রচলন হয়েছে। তা হল ‘সেল্ফি’ বা নিজস্বী। মোবাইলের ক্যামেরায় নিজেই নিজের ছবি তোলা। তারপর তা ইন্টারনেটে তুলে দেওয়া। দিগ্বিজয়-অমৃতার ছবি দেখে কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, এগুলোও আসলে নিজস্বী। প্রণয়িনীর বয়স কম। তাই তাঁর সঙ্গে নিজস্বী তোলার আবদার বৃদ্ধ প্রেমিককে মেনে নিতে হয়েছে। তার পর প্রেমিকা তা কম্পিউটার বা ই-মেলে রেখেছিলেন। সেখান থেকেই ইন্টারনেটের হানাদাররা ছবি চুরি করেছেন বলে অমৃতার নালিশ।

দিগ্বিজয়-অমৃতা গোপন প্রেমের কথা সর্বসমক্ষে ঘোষণা করে দিয়েছেন বলে অবশ্য কেউ নালিশ করছেন না। তবে গুপ্ত প্রণয় নিয়ে এটায় কংগ্রেসের দ্বিতীয় উইকেট পড়ল। প্রথম উইকেটটি ছিল নারায়ণ দত্ত তিওয়ারির। তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা উজ্জ্বলা শর্মার পুত্র রোহিত শেখর মামলা করে বলেছিলেন, তিওয়ারিই তাঁর বাবা। তিওয়ারি প্রথমে মানতে চাননি। ডিএনএ-পরীক্ষা, মামলা-মোকদ্দমার পরে গত মাসেই রোহিতকে নিজের পুত্র বলে স্বীকার করেন ৮৯ বছরের তিওয়ারি। এ বার চাপে পড়ে গোপন প্রেম মানতে বাধ্য হলেন ‘ডিগ্গি-রাজা’ দিগ্বিজয়ও।

অন্য বিষয়গুলি:

digvijay singh amrita rai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE