Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রশ্নের মুখে শশী

সুনন্দা-হত্যায় কি আইপিএল কাণ্ডের যোগ

চার ঘণ্টারও বেশি সময় জেরায় সহযোগিতাই করেছেন পুলিশের সঙ্গে। কখনও হেসে কথা বলেছেন, কখনও বা জিজ্ঞাসু অফিসারের চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে। সোমবার রাত আটটা থেকে প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত স্ত্রীর মৃত্যু প্রসঙ্গে দিল্লির বসন্ত বিহার থানায় বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) বহু প্রশ্নের ধৈর্য ধরে উত্তর দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শশী তারুর। বলেছেন, সুনন্দার সঙ্গে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখে পুলিশ এ বার নজর ঘোরাচ্ছে আইপিএল কেলেঙ্কারির দিকে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৯
Share: Save:

চার ঘণ্টারও বেশি সময় জেরায় সহযোগিতাই করেছেন পুলিশের সঙ্গে। কখনও হেসে কথা বলেছেন, কখনও বা জিজ্ঞাসু অফিসারের চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে।

সোমবার রাত আটটা থেকে প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত স্ত্রীর মৃত্যু প্রসঙ্গে দিল্লির বসন্ত বিহার থানায় বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) বহু প্রশ্নের ধৈর্য ধরে উত্তর দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শশী তারুর। বলেছেন, সুনন্দার সঙ্গে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখে পুলিশ এ বার নজর ঘোরাচ্ছে আইপিএল কেলেঙ্কারির দিকে। তারুর-পত্নীর খুনে আইপিএল-এর কোনও ভূমিকা ছিল কি না, তা জানতে ফের ডাকা হতে পারে প্রাক্তন মন্ত্রীকে। মঙ্গলবার তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন দিল্লি পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্সি।

তাঁর বক্তব্য, “আইপিএল নিয়ে এত দিন পর্যন্ত যা যা তথ্য হাতে এসেছে, তার সবটাই প্রাসঙ্গিক। এ নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলবে।” আইপিএল-দুর্নীতির জেরেই ২০১০ সালে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছিল তারুরকে। বিদেশ মন্ত্রকের তদানীন্তন প্রতিমন্ত্রী তারুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, আইপিএলে কোচি দল কেনার ক্ষেত্রে মন্ত্রী হিসেবে প্রভাব খাটিয়েছেন তিনি। এবং তার জেরে কোচি দলের ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ১৯ শতাংশ অংশীদারি মুফতে পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল সুনন্দার সংস্থা রাঁদেভু স্পোর্টসকে। তিনি তখনও তারুরের বন্ধু। তাঁদের বিয়ে হয়নি। সে সময়ে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন সুনন্দা। পরে তিনি রাঁদেভু স্পোর্টস থেকে সরে যান। ৭০ কোটির অংশীদারিও ছেড়ে দিয়ে শেষ বারের মতো তারুরকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন। শেষমেশ অবশ্য অনিয়মের অভিযোগে কোচি দলকেই বাতিল করে দেয় বিসিসিআই।

এই সব তথ্যই ফের নাড়াচাড়া করতে চায় পুলিশ। তবে তারা একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে। শশীকে এখনও পর্যন্ত সুনন্দা-খুনের মামলায় এক জন সাক্ষী হিসেবেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, কোনও সন্দেহভাজন হিসেবে নয়। পুলিশ কমিশনারের কথায়, “আমরা খোলা মনে সব বিচার করছি। তদন্তের মাঝপথে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাই না।”

গত কাল ঠিক কী কী প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন শশী? বিস্তারিত কিছু না বললেনও পুলিশ কমিশনার বাস্সি বলেছেন, “আগে-পরে কী হয়েছিল, খুনের দিন কী কী হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমে যা যা প্রকাশ্যে এসেছে এমন অনেক কিছু নিয়ে কথা হয়েছে ওঁর সঙ্গে।”

পুলিশের দাবি, শান্ত ভাবে বেশির ভাগ প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন শশী। মেনে নিয়েছেন, স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা হচ্ছিল। তবে গত বছর গোড়ায় সুনন্দার মৃত্যুর পর পরই শশী তদন্তকারীদের বলেছিলেন, “দু’জনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। কিন্তু আমরা সুখী দম্পতি ছিলাম।”

এ বার সিটের মুখোমুখি হওয়ার আগে সোমবার শশী নিজের বাড়িতে আইনজীবীর একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে দাবি একটি সূত্রের। সেখানেই তিনি ঠিক করে নেন, কোন প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর কী হবে। পুলিশের একটি সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে বেশ কিছু প্রশ্ন যা শশীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তার মধ্যে রয়েছে,

১) চিকিৎসক দেননি, অথচ সুনন্দার ঘরে কেন অ্যালপ্রাক্স পড়েছিল?

২) সুনন্দার দেহে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন কেন? আপনি কি ওঁকে আঘাত করেছিলেন?

৩) সুনন্দা সাড়া দিচ্ছেন না দেখেও কেন তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি? পুলিশকেও কেন তখনই ডাকা হয়নি?

৪) মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ নিয়ে এইমসের অধিকর্তার কাছে কেন মেল পাঠানো হয়েছিল?

৫) আপনি কেন বলেছিলেন সুনন্দার লুপাস হয়েছে, তাঁর এমন কিছু তো হয়নি?

৬) পাক সাংবাদিক মেহর তরারকে কী ভাবে চেনেন? দুবাইয়ে কি আপনি ওঁর সঙ্গে থাকতেন?

পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, কেটি (যাঁকে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেছেন ক্যাথি বা ক্যাথরিন) নামে এক মহিলা সম্পর্কেও শশীকে জেরা করা হয়। শশীর পরিচারক পুলিশকে বলেছিলেন, কেটি নামের ওই মহিলাকে নিয়ে সুনন্দার সঙ্গে প্রায়শই বাদানুবাদ হত তারুরের। শশী কিছু নির্দিষ্ট বিবিএম মেসেজ মুছে ফেলেছিলেন। কিন্তু সুনন্দা সেগুলি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। পুলিশ সেটিরও কারণ জানতে চেয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

sunanda pushkar shashi tharoor ipl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE