গুজরাতে তিনিই ছিলেন সর্বময় কর্তা। কিন্তু দিল্লিতে যে আমলাদের হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা রয়েছে তা হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন নরেন্দ্র মোদী। কড়া প্রশাসকের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তাই আমলাতন্ত্রে বড় রদবদল ঘটালেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে ইউপিএ জমানায় মুখ্য পদে থাকা আমলাদের সরাতে ব্যস্ত হননি মোদী। বরং জমানা বদলের সঙ্গে সঙ্গে আমলাদের সরানোর এই চিরপরিচিত চিত্রে সামিল হতে চান না বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। তাই বদলায়নি স্বরাষ্ট্র, বিদেশ-সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলির সচিব। পদে থাকার মেয়াদ বেড়েছে ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠের।
কিন্তু এই ‘উদারতা’য় আমলাদের একাংশের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছিল বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। এক শীর্ষ নেতা জানান, মোদী খুব বেশি রদবদল না করায় কিছু আমলা তাঁকে দুর্বল ভাবতে শুরু করেছিলেন। সচিব ও যুগ্ম সচিব স্তরের আমলারা নীতি নির্ধারণ ও কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। তাঁরা কাজ না করলে যে প্রশাসনে গতি আনার প্রতিশ্রুতি কথার কথা হয়ে যাবে তা বুঝতে পেরেছেন মোদী। তাই কড়া প্রশাসকের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে রাজধানীর আমলাতন্ত্রের অচলায়তনে বড় ধাক্কা মারার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজেপি সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আমলাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মোদী। ট্রাইয়ের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্রকে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি পদে নিয়োগ করতে যে অর্ডিন্যান্স ছাড়া পথ নেই সে কথা মোদীকে আগে জানাননি আমলারা। দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ নিয়েও বিব্রত হতে হয়েছে মোদী সরকারকে।
আমলাতন্ত্রে বড় বদল আনতে বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন মোদী। ব্রাজিল সফরে যাওয়ার ঠিক আগে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় সবুজ সঙ্কেত দেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে হাজির ছিলেন অরুণ জেটলি-সহ শীর্ষ নেতারা নয়া নির্দেশ অনুযায়ী, টেলিকম দফতর ও সার দফতরের সচিব হয়েছেন রাকেশ গর্গ ও যুগলকিশোর মহাপাত্র। ভারী শিল্প মন্ত্রকে সচিব পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর রাজন এস কাটোচ। কর্মিবর্গ দফতরের সচিব হয়েছেন সঞ্জয় কোঠারি। এ ছাড়াও বস্ত্র মন্ত্রক-সহ কয়েকটি ক্ষেত্রে শীর্ষ পদে বদল আনা হয়েছে।
এই বদল মোদীর দর্শন আমলাদের বোঝাতে পারবেন কি না তা বলবে সময়ই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy