দেখতে দেখতে দিনগুলো কেমন কেটে যায় তাই না? বছর ঘুরে আবার এসে গেল দুর্গাপুজো। আর মোটে এক মাস। মুম্বইয়ে এখন জোর কদমে চলছে গণপতি-আরাধনা। গণপতি পুজোর পর নবরাত্রি আর বাঙালির দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যদের এখন নিশ্বাস ফেলার সময় নেই। আসুন আপনাদের জানিয়ে দিই কয়েকটি পুজোর প্রস্তুতি সম্পর্কে।
চেম্বুর দুর্গাপুজো অ্যাসোসিয়েশন-এর এ বছর ষাট বছর পূর্তি। ১৯৫৫ সালে যখন এই পুজো শুরু হয় তখন তা ছিল মুষ্টিমেয় কয়েক জনের। কালে এ পুজোর কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। চেম্বুরের দুর্গাপুজো এখন মুম্বইয়ের বিখ্যাত পুজোগুলির অন্যতম। পুজো চেম্বুর হাইস্কুল গ্রাউন্ড, স্বামী বিবেকানন্দ চৌক, চেম্বুর নাকায়। এ বার পুজোর মণ্ডপ তৈরি হবে আমদাবাদের ‘অক্ষরধাম’ মন্দিরের আদলে। কলকাতা থেকে চল্লিশ জন কারিগর এসে নির্মাণ করছেন এই মণ্ডপ। মণ্ডপের অভ্যন্তরের কারুকার্য হবে অক্ষরধাম মন্দিরের অন্দর শৈলীর মতোই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিয়ে আসা হবে একটি চল্লিশ ফুটের ঝাড়লণ্ঠন, যেটি শোভা পাবে মণ্ডপের ভিতরে। প্রতিমাও নির্মিত হচ্ছে মন্দিরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। এ বার আসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথায়। ২৯ সেপ্টেম্বর পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু। ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে মুম্বইয়ের পূবালি সংস্থার সঙ্গীত ও নৃত্য। ১ অক্টোবর মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে-র স্মৃতিতে গানের অনুষ্ঠান। শিল্পী সূর্য ভট্টাচার্য। ২ অক্টোবর অষ্টমী-নবমীতে ইন্ডিয়ান আইডল-এর রাহুল সাক্সেনা ও তাঁর গ্রুপ-এর গান। ৩ অক্টোবর দশমীতে কলকাতার অমৃতা দত্তের গান। এ বারের পুজো বাজেট প্রায় পঞ্চাশ লাখ। সংগৃহীত অর্থের একটি অংশ দান করা হয় সেবামূলক কাজে। যেমন—অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিস, দুঃস্থ ও অনাথদের সাহায্য করা, মেডিক্যাল ক্যাম্প, ক্যানসার রোগীদের কম খরচে থাকার ব্যবস্থা করা। পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট সুরজিৎ লোধ এই সব তথ্য জানালেন। পুজোর সেক্রেটারি সুরজিৎ সেনগুপ্ত।
পওয়াই বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এ বারও বেশ বড় করে পুজো করছে। গত আট বছরের মতো নয়, মানে আর মন্দিরের আদলে মণ্ডপ নয়, এ বার মা আসছেন রাজবাড়ির আদলে বিরাট মণ্ডপে, জানিয়েছেন পুজো কর্তা পিনাকী দত্ত। আলোর দায়িত্বে চন্দননগরের শিল্পীরা। পিনাকী জানিয়েছেন, গত বার ২০ হাজার মানুষ ভোগ খেয়েছেন, এ বার সংখ্যাটা বাড়বে, তাই তাঁরা প্রস্তুত। তাঁর দাবি, অন্তত ১ কিমি এলাকা এ বারও আলোয় ভাসবে। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্পকলা তুলে ধরা হবে মণ্ডপে। ঢাকের আওয়াজে মেতে উঠবে পওয়াই। চার দিন থাকছে বর্ণাঢ্য সঙ্গীতানুষ্ঠান। পিনাকী আরও জানিয়েছেন, সমাজ সেবার দিকটাও তাঁরা ভুলছেন না। বয়স্ক দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এ বারও।
চলে আসি নবি মুম্বইয়ের পুজোয়। নবি মুম্বইয়ের বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন-এর পুজো এ বার যথারীতি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভাসি সেক্টর ওয়ানে নেতাজি সুভাষ গ্রাউন্ডে। কথা হল পুজোর প্রেসিডেন্ট সুকান্ত নাগের সঙ্গে। পুজো সংক্রান্ত সব খবর দিলেন তিনি। এ বারে পুজোমণ্ডপ হচ্ছে ঝুড়ি, কুলো ইত্যাদি জিনিস দিয়ে। দশমহাবিদ্যার রূপ ফুটিয়ে তোলা হবে মণ্ডপে। এ ছাড়া থাকবে বাংলার সংস্কৃতি বিষয়ক নানা শৈলী। মেদিনীপুর থেকে কারিগরেরা আসছেন মণ্ডপ নির্মাণ করতে। প্রতিমা হবে চিরাচরিত সাজের। মাকে পরানো হবে বেনারসি। অন্যান্য বারের মতো এ বারেও পুজো গ্রাউন্ডে থাকছে বিভিন্ন স্টল। থাকবে কিডস জোন। বিভিন্ন এনজিও-র পক্ষ থেকেও স্টল থাকবে। থাকবে শান্তিনিকেতনের কারুশিল্পী, বাংলা গানের সিডি ও ভিসিডি-র স্টল। খাবারের স্টলে বিশেষ আকর্ষণ কলকাতার ঝালমুড়ি ও মাংসের ঘুগনি। আর বইপ্রেমীদের জন্য সুখবর-- এ বছর এখানে বইমেলারও আয়োজন করা হচ্ছে। এ বার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানিয়ে দিই। ২৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চমীর দিন পুজোর উদ্বোধন। এ দিন কলকাতার শিল্পী ‘সহজ মা’-এর গান। ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীতে পুরুলিয়ার ‘ছৌ নৃত্য’। মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় অর্থাৎ পর দিন ‘গানে গানে সুচিত্রা-উত্তম’—পরিবেশনায় মুম্বইয়ের একটি গ্রুপ। ২ অক্টোবর অষ্টমী-নবমীর সন্ধ্যায় কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কার প্রদান, গুণিজন সংবর্ধনা এবং তার পর বাবুল সুপ্রিয় নাইট। এই দিন দুপুরে থাকবে বাউল গান। সপ্তমীতেও দুপুরে থাকবে মুক্তমঞ্চ। পুজোর কালচারাল সেক্রেটারি শর্মিলা সরকার এবং সেক্রেটারি বিভাস মাইতি। পুজোর খরচ সংক্রান্ত বাজেট আনুমানিক ষাট লাখ। উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যয় করা হবে সমাজকল্যাণমূলক কাজে।
চলে আসছি ভাসি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর দুর্গাপুজোয়। জেনে নেওয়া যাক সেখানকার পুজোর খবরাখাবর। এ বার এই পুজোর দশ বছর পূর্তি। পুজোর বাজেট প্রায় পঞ্চাশ লাখ। পুজোর প্রেসিডেন্ট মানস সামন্ত জানালেন পুজোসংক্রান্ত সমস্ত তথ্য। পুজো অনুষ্ঠিত হবে ভাসির সেক্টির টুয়েলভে এন এম এম টি গ্রাউন্ডে। পুজোমণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ঝুড়ি, বেত, কুলো, কাঠের পুতুল ইত্যাদি দিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিল্পীরা আসছেন মণ্ডপ নির্মাণে। মণ্ডপ হবে এথনিক স্টাইলে। প্রতিমাও মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই করে শৈল্পিক ধাঁচে তৈরি হবে। চলে আসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় অন্বেষার গান। সপ্তমীতে স্যাফায়ার গ্রুপের নৃত্যনাট্য। অষ্টমী-নবমীর সন্ধ্যায় বোলপুরের বাউল গান ও তার পর অনুপম রায়ের গান। এ ছাড়াও ষষ্ঠীতে থাকছে শঙ্খধ্বনি প্রতিযোগিতা, সপ্তমীর দুপুরে ‘বং ঢং’—বাংলার সাজে সাজো ও প্রশ্নোত্তর। এ বার পুজোয় অষ্টমী আর নবমী একদিনে, তাই দু’দিন ভোগপ্রসাদ। এ বারেও কিন্তু অন্যান্য বারের মতো থাকছে বইমেলা। এ ছাড়া গত দশ বছরে এই পুজো কমিটি যে সব সমাজকল্যাণমূলক কাজ করেছে, সে সম্পর্কে একটি প্যাভিলিয়ন রাখা হচ্ছে। পুজোর সেক্রেটারি পীযূষ মজুমদার।
এ বার নেরুলের ‘আমরা প্রবাসী’র দুর্গাপুজো। বাজেট আনুমানিক পঞ্চাশ লাখ। পুজোমণ্ডপ তৈরি হচ্ছে কর্ণাটকের বিধানসভা ভবনের অনুকরণে। প্রতিমার সাজ হবে সোনালি রঙের। পুজো অনুষ্ঠিত হবে নেরুলের সেক্টর টুয়েলভে রামলীলা ময়দানে গণেশ মন্দিরের কাছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ২৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চমীর সন্ধ্যায় নৃত্যনাট্য। পর দিন মহাষষ্ঠীতে স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠানে গানে গানে আর ডি বর্মনকে স্মরণ। সপ্তমীর সন্ধ্যায় সঞ্চারী বসু, তনুশ্রী রায়চৌধুরি ও অভী দত্তর গান। অষ্টমী-নবমীর সন্ধ্যায় গানের জলসায় জোজো। এ ছাড়া রয়েছে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি প্রতিযোগিতা এবং ‘শো ইয়োর ট্যালেন্ট’। পুজোর তিন দিন খাওয়া-দাওয়া। ষষ্ঠীর দিন রাতে ও পরের দু’দিন দুপুরে ভোগপ্রসাদ। এ বারে এখানে প্রতিমা বিসর্জন হবে একটু অভিনব। পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য থাকবে বিসর্জন শোভাযাত্রায়। বাইশ বছরে পড়ল এই পুজো। পুজোসংক্রান্ত তথ্য জানালেন সেক্রেটারি রথীন পাল। পুজোর প্রেসিডেন্ট জয়দীপ দাশগুপ্ত।
নেরুলের পর চলে আসি সিবিডি বেলাপুরে। এখানকার বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর দুর্গাপুজোর এ বার উনত্রিশ বছর পূর্তি। পুজো অন্যান্য বারের মতোই যথারীতি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বেলাপুরের সেক্টর থ্রি এ-তে রাজীব গাঁধী স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে। পুজোর প্রেসিডেন্ট জয়ন্ত বসুর সঙ্গে কথা হল। এ বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে। ওই দিন আনন্দমেলা এবং একটি অভিনব অনুষ্ঠান ‘খেলায় গানে সেরা দম্পতি’। ২৯ সেপ্টেম্বর ভাবনা দত্তের গান। ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে পুজো উদ্বোধন। ওই দিন নাচ ও গানের অনুষ্ঠান। মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় গতিতনাট্য এবং প্রমীলাদের পরিচালনায় বাংলা হাসির নাটক। পর দিন অষ্টমী-নবমীর সন্ধ্যায় ‘ঝংকার’-এর কত্থক নাচ এবং কলকাতার ইন্ডিয়ান ব্যালে ও মাইম গ্রুপের অনুষ্ঠান। পুজোয় এ বার পঞ্চমী ও ষষ্ঠীর রাতে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকছে এবং সপ্তমী ও অষ্টমী-নবমী এই দু’দিন দুপুরে ভোগপ্রসাদ। পুজো ছাড়াও সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কিছু সমাজকল্যাণমূলক কাজও করা হয়ে থাকে এখানে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টাটা ক্যানসার মেমোরিয়াল হসপিটালের সহযোগিতায় একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে। পুজোর সেক্রেটারি হলেন প্রণব পুরকায়স্থ।
এর পর বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, খারঘর। পুজো অনুষ্ঠিত হবে খারঘর সেক্টর ফিফটিনে ডি মার্টের কাছে। এ বছর মণ্ডপ নির্মাণ হচ্ছে টেরাকোটার জিনিস দিয়ে। একচালা ডাকের সাজের প্রতিমা। মূর্তি তৈরি করছেন রসরাজ পাল। পুজো গ্রাউন্ডে থাকছে বিভিন্ন স্টল। পুজো বাজেট আনুমানিক পনেরো লাখ। চলে আসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ৩০ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় সূর্য ভট্টাচার্যের গান। সপ্তমীতে বাংলা ব্যান্ড ‘ডিংগা’র লোকগীতি। অষ্টমী-নবমীতে দুপুরে ব্রহ্মতোষ চট্টোপাধ্যায়ের গান এবং সন্ধ্যায় প্রথম ‘ছৌ নৃত্য’ ও পরে সদস্যদের গানের অনুষ্ঠান। ভোগপ্রসাদের ব্যবস্থা ষষ্ঠী থেকে তিন দিন। এই সব তথ্য জানালেন কালচারাল কমিটি মেম্বার প্রদীপ সিংহ রায়। পুজোর প্রেসিডেন্ট বি বি প্রধান এবং সেক্রেটারি পি কে আদক।
নিউ পানভেলের ‘মিলন তীর্থ’ ক্লাব। তিরিশ বছরের পুরনো পুজো। এ বারের থিম দেবী দুর্গার রুদ্র রূপ। মহিষাসুরকে নিধন করার সময়ে তিনি রুদ্রাণীরূপে প্রকাশিত হয়েছিলেন— দেবীর সেই মহিষাসুরমর্দিনী রূপই ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জায়। মণ্ডপে পূজাবেদীর পশ্চাদপটে থাকবে পাহাড়, জঙ্গলের চিত্র। দেবী দুর্গা সিংহের পিঠে চড়ে অমিত বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন মহিষের দেহ থেকে নির্গত অসুরের ওপর। কলকাতার শিল্পীরা তৈরি করছেন মণ্ডপ। ওঁদের সাহায্য করছেন দেবাশিস জানা ও নীলকণ্ঠ। পুজোর বাজেট আনুমানিক চল্লিশ লাখ। পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিউ পানভেলের সন্ত সাঁইবাবা গ্রাউন্ডে। পুজোর প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌধুরি এবং সেক্রেটারি তন্ময় ভট্টাচার্য। চলে আসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠান। ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান। মহাসপ্তমীর সন্ধ্যায় ডালিয়া বসু সাহার আবৃত্তি এবং জ্যোতিপ্রকাশ চট্টোপাধ্যায়ের আধুনিক গান। মহাষ্টমী-মহানবমীর সন্ধ্যায় গানের জলসায় আসর মাতাবেন উষা উত্থুপ। দশমীতে ‘ডিংগা’ ব্যান্ডের গান। এ ছাড়াও থাকছে গান, নাচের প্রতিযোগিতা, নাটক, ছবি আঁকা, প্রশ্নোত্তর প্রভৃতি। থাকছে পুজো গ্রাউন্ডে বিভিন্ন স্টল।
এ বারে চলুন অন্য প্রান্তে যাই। কোপারখাইরানে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন-এর দুর্গাপুজো। কথা হল পুজো কমিটির সদস্য দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পুজো বাজেট আনুমানিক কুড়ি লাখ। পুজো অনুষ্ঠিত হবে কোপারখাইরানে সেক্টর সেভেনে ডি মার্টের কাছে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের মাঠে। এখানে ষষ্ঠীতে স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠান। সপ্তমীর সন্ধ্যায় কলকাতার ব্যান্ডের গান। অষ্টমী-নবমীতে সুরজিৎ নন্দী ও পিয়ালি ঘোষের গান। দু’দিন ভোগপ্রসাদ। পুজোর প্রেসিডেন্ট শিবাজী সান্যাল, সেক্রেটারি সঞ্জীব ঘোষদস্তিদার এবং কালচারাল সেক্রেটারি পিউ মিত্র।
কোপারখাইরান থেকে চলে যাওয়া যাক আইরোলি বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন-এর পুজোয়। বাইশ বছরে পড়ল এই দুর্গাপুজো। পুজো হবে আইরোলি সেক্টর ফিফটিনে ‘গরম মশালা’ হোটেলের বিপরীতে। পুজো সংক্রান্ত তথ্য জানালেন প্রেসিডেন্ট সুখেন্দু মণ্ডল। কলকাতা থেকে শিল্পীরা আসছেন মণ্ডপ নির্মাণে। মণ্ডপ তৈরি হবে মন্দিরের আদলে। এ বারে বিশেষত্ব, মণ্ডপ তিন দিক খোলা। থাকবে চন্দননগরের আলো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এ বার স্থানীয় শিল্পীরাই করবেন। পুজো বাজেট প্রায় দশ লাখ। পুজোর সেক্রেটারি তন্ময় বিশ্বাস।
চলে আসি আইরোলি কালীবাড়ি ট্রাস্টের পুজোয়। সাত বছরের পুজো। পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইরোলি সেক্টর ফাইভে। কালীবাড়ি ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট জানালেন, এ বারে বাজেট প্রায় পনেরো লাখ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠান। সপ্তমীতে উত্তম দাস বাউলের গান। অষ্টমী-নবমীতে অর্কেস্ট্রা। দশমীতে বিজয়া সম্মিলনী। দু’দিন ভোগপ্রসাদ। কৃষ্ণনগর থেকে শিল্পীরা আসছেন আলো ও মণ্ডপসজ্জার জন্য। থাকছে মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা। পুজোর প্রেসিডেন্ট পি কে দত্ত ও সেক্রেটারি শান্তি মিদ্যা।
চলে আসি ঘনসোলিতে। ঘনসোলি বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর দুর্গাপুজোর এ বারের বাজেট চার লাখের মধ্যে। পুজো হবে ঘনসোলি সেক্টর ছয়ে কালীমন্দিরের কাছে। জানান কমিটির সদস্য জয়ন্ত বিশ্বাস। পুজোর প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব পাল ও সেক্রেটারি সমরেশ মণ্ডল।
এ বার থানের বঙ্গীয় পরিষদ-এর দুর্গাপুজো। পুজোর ভাইস প্রেসিডেন্ট অলক বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোসক্রান্ত তথ্য জানালেন। পুজোর বাজেট প্রায় সত্তর লাখ। পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে হাইল্যান্ড ক্রেস্ট, ধোকালি রোড, বালকুম, থানে, হাইল্যান্ড গার্ডেনের উল্টো দিকে। এ বছর বাহান্নতম দুর্গাপুজো। কলকাতা থেকে শিল্পীরা আসছেন মণ্ডপ নির্মাণ করতে। চলে আসি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধেবেলা মিলনমেলা—খাবারের প্রতিযোগিতা ও বিক্রয়। ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আকাশ নীলের আবৃত্তি এবং অভিজিৎ বসুর লোকগীতি। ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে লক্ষ্মণদাস বাউলের গান, সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীদের নৃত্য এবং নৃত্যনাট্য ‘নির্ভয়া’। ১ অক্টোবর দুপুরে মায়া চক্রবর্তীর রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং সন্ধ্যায় সঞ্জিৎ-রথীজিৎ-এর গান। ২ অক্টোবর সঙ্গীত সন্ধ্যায় শিল্পী শান। ৩ অক্টোবর সুজিত কুমার-এর কণ্ঠে কিশোরের গান। পুজোর চেয়ারম্যান সুকুমার ঘোষ, প্রেসিডেন্ট প্রকাশ গুহ এবং সেক্রেটারি কানাই বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বারে বেশ কিছু পুজোর খবর দেওয়া হল। পুজোপ্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। পুরোদমে চলছে মণ্ডপ, প্রতিমা নির্মাণের কাজ। চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া। আমাদের এই রুক্ষ প্রবাস জীবনে এই দুর্গাপুজো যেন এক ঝলক ঠান্ডা বাতাসের মতো। এই প্রতীক্ষাটুকু বড় আনন্দের। এ বার এখানেই শেষ করি। সামনের সংখ্যায় আবার হাজির হব আরও পুজোর খবর নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy