কোচিতে সাংবাদিক বৈঠকে অমিত শাহ। ছবি:পিটিআই।
ধর্মান্তরণ-বিরোধী আইন সমর্থন করতে বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। উত্তর ভারতে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের ‘ঘর ওয়াপসি’ বা ‘ধর্মান্তরিত’ হিন্দুদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদে আপাতত প্রবল বিপাকে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
এই পরিস্থিতিতে আজ কেরল ও পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রায় একই সুরে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ ও মোহন ভাগবত। দু’দিনের কেরল সফর শেষে কোচিতে অমিতের বক্তব্য, “বিজেপিই একমাত্র দল যারা জোর করে ধর্মান্তরণের বিরোধী। সরকার ধর্মান্তরণ-বিরোধী আইন আনলে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির উচিত তাকে সমর্থন করা।” তবে কি বিজেপি বিষয়টি নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলবে?
অমিতের মতে, রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি না হলে এই বিষয়ে বেশি দূর এগোনো সম্ভব নয়। তবে ‘ঘর ওয়াপসি’ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি বিজেপি সভাপতি। তাঁর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। আদালত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত আমি এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”
কলকাতায় সঙ্ঘ পরিবারের জনসভায় প্রায় একই সুরে ভাগবত জানিয়েছেন, ধর্মান্তরণ বন্ধ করতে আইন আনা উচিত। বিরোধীদের সাহস থাকলে সেই আইন সমর্থন করুক। তাঁর দাবি, হিন্দু সমাজ থেকে যাঁরা অন্য ধর্মের পথে হেঁটেছেন তাঁরা স্বেচ্ছায় যাননি। তাই তাঁদের হিন্দুত্বে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা খুবই স্বাভাবিক। আরএসএস প্রধানের কথায়, “যদি কেউ ধর্মান্তরিত হিন্দুদের হিন্দুত্বের পথে ফেরানো পছন্দ না করেন, তবে অন্য সম্প্রদায়ের উচিত হিন্দুদের ধর্মান্তরণ বন্ধ করা।”
ভাগবত সাফ জানিয়েছেন, তাঁরা শক্তিশালী হিন্দু সমাজ গঠন করতে চান। হিন্দুদের উত্থানে কেউ আতঙ্কিত হলে তিনি স্বার্থপর। আরএসএস প্রধানের মতে, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের অনেক অপরাধ হিন্দুরা সহ্য করেছেন। পাকিস্তানে হিন্দুরা তেমন শক্তিশালী নন বলেই সে দেশে শান্তি নেই বলে মনে করেন ভাগবত। তাঁর কথায়,“ভারতে যত দিন হিন্দুরা আছেন তত দিনই দেশের অস্তিত্ব থাকবে। হিন্দুরা না থাকলে এ দেশের সব বাসিন্দাই বিপাকে পড়বেন।”
ভাগবতের মন্তব্যের চড়া সুরে বিরোধিতা করে আসরে নামতে চাইছে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ভারতের সংবিধান তো ধর্মনিরপেক্ষ। বিজেপি কি তাহলে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধান পাল্টে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে চাইছে?”
বিষয়টি নিয়ে সোম-মঙ্গলবার সংসদে শোরগোল করতে চায় তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত নিয়ে অন্য দলকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এই বিষয়ে বাকি বিরোধীদের পাশে পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। আগামী কাল দিল্লি আসছেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যন্তরমন্তরে ধর্না দেওয়ার কথা নীতীশ ও লালু প্রসাদের। সেই ধর্নায় এ বার ধর্মান্তরণকেও অন্যতম মূল বিষয় করতে নীতীশকে অনুরোধ করবে তৃণমূল। আবার সোমবারই চেন্নাইয়ে নেতাজি রহস্য উদ্ঘাটনের দাবিতে এমডিএমকে নেতা ভাইকোর সভায় যোগ দেবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ ভাবেই বিরোধী ঐক্য গড়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বেগ দিতে চাইছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy