বিজেপিই একমাত্র দল, যারা প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে আশাবাদীও দল। কিন্তু ভোট শুরু হওয়ার ছ’দিন আগেও তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করতে পারল না বিজেপি।
ছ’দিন আগেই আকবর রোডে ঘটা করে সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ, রাহুল গাঁধীরা মিলে কংগ্রেসের ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন। তারপর বিজেপি নেতৃত্বের উপরেও চাপ বেড়েছে। নেতা-কর্মীরা চান, নরেন্দ্র মোদী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা মিলে দলের ইস্তাহার প্রকাশ করে ঐক্যের ছবিটি তুলে ধরুন। কিন্তু এই মুহূর্তে দলে যা কোন্দল, তাতে সব মাথাকে এক করা বড়ই দুষ্কর। তাই সময় ঘনিয়ে এলেও এখনও পর্যন্ত ইস্তাহার প্রকাশ করতে পারছে না বিজেপি। প্রথমে স্থির ছিল আগামী পরশু ইস্তাহার প্রকাশ করা হবে। কারণ, মোদী সে দিন দিল্লির কাছাকাছি সভা করবেন। কিন্তু এখনও বিজেপি নেতারা নিশ্চিত নন, দু’দিনের মধ্যে দলের সব শীর্ষ নেতাকে রাজি করিয়ে হাজির করানো যাবে কি না।
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও আজ বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্রচারে তো অনেক বড় বড় কথা বলছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আদপে বিজেপি কোন মডেল জনতার কাছে হাজির করাতে চাইছে, তার লিখিত প্রতিবেদন তো এখনও এল না। গোটাটাই হাওয়া হাওয়ায় চলছে।’
বিরোধীরা যে এই অভিযোগ করবে, তা অজানা নয় বিজেপির। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে দলের নেতাদের সম্পর্কের চোরাস্রোত বাইরে চলে এসেছে, তারপর এখন সতর্ক হয়েই চলতে চাইছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। গত কালই আডবাণী মোদীর গুরুত্বকে খাটো করে তাঁকে ফের শিবরাজ সিংহ চৌহান ও রমন সিংহের সমতুল করে দেখিয়েছেন। তাঁর মতে, এই তিন জনই তৃতীয় বার জয়ী হয়েছেন। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় আজ ফের মোদীর তারিফ করেন আডবাণী। মহারাষ্ট্রের এক সভায় মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার আবেদন জানান বিজেপির এই প্রবীণ নেতা।
এই পরিস্থিতিতে ইস্তাহার প্রকাশ দেরি হওয়ার বিষয়টি তাই লঘু করে দলের নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘যাদের বিদায় নিশ্চিত, তারা তাড়াতাড়ি ইস্তাহার প্রকাশ করেছে। কিন্তু বিজেপি এ বারে ক্ষমতায় আসতে চলেছে। তাই সুচিন্তিত ইস্তাহার প্রকাশ করতে চাই।’
বিজেপি সূত্রের মতে, আগামী পরশু যদি সম্ভব না হয়, তা হলে অন্তত ৭ এপ্রিল অসম ও ত্রিপুরায় ভোট শুরুর আগে এই ইস্তাহার প্রকাশ করে দিতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, সব নেতাই এখন প্রচারে ব্যস্ত। স্বয়ং মোদী দিনে ৪-৫টি করে সভা করছেন। গত কাল রাতে তড়িঘড়ি সংসদীয় বোর্ড ডাকা হয়, সেখানেও সুষমা স্বরাজ উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ, তিনি মধ্যপ্রদেশে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে ব্যস্ত। তাই এই সপ্তাহের শেষে সকলকে দিল্লিতে থাকার বার্তা আগেভাগেই দেওয়া হয়েছে।
মুরলীমনোহর জোশী ইস্তাহার অনেক আগেই তৈরি করে রেখেছেন। রবিশঙ্কর প্রসাদও ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট তৈরি করেছেন। ইস্তাহার প্রকাশ নিয়ে টানাপড়েন দেখে এখন সেই চার্জশিট প্রকাশ করে দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy