চলবে না ‘চলতা হ্যায়’ মানসিকতা ।
বুধবার প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও)-র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়ে এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এখনও শেষ হয়নি ডিআরডিও-র ‘ছোট যুদ্ধবিমান তেজস’, ‘নাগ ক্ষেপণাস্ত্র’-র মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে মোদীর আবেদন, কোনও কাজ ফেলে রাখবেন না। সময়ের আগেই তা শেষ করার চেষ্টা করুন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “এটা সময়ের দাবি। সারা বিশ্ব আমাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকবে না। আমাদের সময়ের আগে দৌড়তে হবে।
তাই সময়ের আগেই আমাদের কাজ শেষ করা উচিত। কারণ পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে।”
মোদীর মতে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এই বিষয়টিকেই ডিআরডিও-র ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, “বিশ্ব যা ২০২০ সালে করবে, আমরা কি তা ২০১৮-তে করে ফেলতে পারি না!” তিনি বলেন, “এই ব্যাপারে সারা বিশ্বের সামনে ডিআরডিও-র একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত। অনুসরণ করে নয়, পথপ্রদর্শক হলেই আমরা বিশ্বনেতা হয়ে উঠতে পারব।”
আর এই লক্ষ্যেই ‘চলতা হ্যায়’ মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আক্ষেপ, “ভারতে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে একটা ‘চলতা হ্যায়’ মানসিকতা কাজ করে।”
সরকারের সঙ্গে ডিআরডিও-র তুলনা টেনে মোদী বলেন, “লোকে বলে, মোদীজি আপনার সরকারের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কাছেই মানুষ প্রত্যাশা করেন। যাঁরা কাজ করেন না, তাঁদের কাছে মানুষের কোনও প্রত্যাশা থাকে না। আমারও ডিআরডিও-র কাছে অনেক প্রত্যাশা আছে। কারণ আমি জানি, ডিআরডিও-র কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।”
তরুণরাই যে দেশের ভবিষ্যৎ, সে কথাও বলতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী। তাই তাঁদের উপর গুরুদায়িত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী মোদী। ডিআরডিও-র মোট ৫২টি গবেষণাগার রয়েছে। মোদীর মতে, ডিআরডিও-র এমন নিয়ম করা উচিত, যাতে অন্তত পাঁচটি গবেষণাগারে শুধু মাত্র ৩৫ বছরের কম বয়সি বিজ্ঞানীরা কাজ করবেন, এবং তাঁরাই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “চলুন তরুণদের সুযোগ দিয়ে আমরা একটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করি। তাঁদের বলি, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। আপনারা আমাদের পথ দেখান। ২০-২৫ বছরের যুবক-যুবতীরা সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে খুব ভাল জানেন।” মোদীর বক্তব্য, “আমরা বহু ঝুঁকি নিয়েছি। এ বার আর একটা ঝুঁকি নিয়ে দেখতে চাই। এখানে একটা তাজা হাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেটা আমাদের সবাইকে সাহায্য করবে।”
ডিআরডিও-র তৈরি অস্ত্রের প্রযুক্তিগত উন্নতির দিকেও জোর দিয়েছেন মোদী। তিনি মনে করেন, এই ব্যাপারে সেনাদের কথাও শোনা উচিত। কারণ তাঁরাই সেগুলি ব্যবহার করেন। মোদীর কথায়, “তাই এক জন সাধারণ সেনাও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির উন্নতিতে উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিতে পারেন।” এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্মের আদর্শ ও মূল্যবোধের বিনিময় এবং প্রসারের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে ডিআরডিও-কে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি। ডিআরডিও-র অবদানের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, “শেষ পাঁচ দশকে (ডিআরডিও স্থাপন করা হয় ১৯৫৮ সালে) অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র, আইএনএস আরিহন্ত পরমাণু ডুবোজাহাজ উপহার দিয়েছে ডিআরডিও।”
এ দিন ডিআরডিও-র বিভিন্ন বিজ্ঞানী এবং কর্মীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। গবেষণার সঙ্গে জড়িত নন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এমন কর্মীদের জন্যও পুরস্কার চালু করতে ডিআরডিও-কে আবেদন জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy