স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪৫টি মামলা করেছিলেন এক মহিলা! এতগুলি ফৌজদারি মামলা দায়ের করার কারণ স্বামীর উপর মানসিক চাপ তৈরির পরিকল্পিত চেষ্টা। এক বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় এমনটাই জানিয়েছে ওড়িশা হাই কোর্ট। এই কারণে বিবাহবিচ্ছেদ রুখতে মহিলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্টের বিচারপতি বিপি রাউত্রে এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের বেঞ্চ।
ওড়িশার কটকের ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল ২০০৩ সালে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে দাম্পত্যজীবনে সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ স্বামীর। তাঁর অভিযোগ, বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন স্ত্রী। বিমার পলিসিতেও একমাত্র নমিনি হওয়ার জন্য স্বামীর উপর চাপ তৈরি করেছিলেন। এই নিয়ে প্রায়শই দম্পতির অশান্তি লেগে থাকত। ২০০৯ সালে স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন জানান। ওই আবেদেনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে এক পারিবারিক আদালত ৬৩ লক্ষ টাকা খোরপোশের শর্তে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করে। পারিবারিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন স্ত্রী।
আরও পড়ুন:
হাই কোর্টে মামলার শুনানিতে উঠে আসে, ওই মহিলা তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪৫টি মামলা দায়ের করেছেন। এতগুলি মামলাকে আইনি অধিকারের যুক্তিযুক্ত প্রয়োগের বদলে স্বামীর উপর মানসিক চাপ তৈরির চেষ্টা বলে মনে করছে আদালত। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের মতে, আইনের অপব্যবহার করে ক্রমাগত স্বামীকে হয়রানির চেষ্টা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তা মানসিক নিষ্ঠুরতার সমান বলে মনে করছে আদালত। পাশাপাশি হাই কোর্ট আরও জানিয়েছে, বৈবাহিক সম্পর্কে যখন সঙ্গী বার বার নিজের ক্ষতি করার হুমকি দেন, তখন সম্পর্কের ভিতই নড়ে যায় এবং সেটি একটি মানসিক যন্ত্রণার পরিস্থিতি তৈরি করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আত্মহত্যার চেষ্টার কথা বলে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হুমকি দেওয়ার পরিকল্পিত চেষ্টা করেছেন মহিলা। পাশাপাশি একের পর এক মামলা স্বামীর মানসিক অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি করেছে বলে মত আদালতের। সেই কারণে বিবাহবিচ্ছেদ আটকাতে চেয়ে মহিলার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।