মাথার উপর ঋণের বোঝা! কিন্তু আর্থিক টানাটানি চলছিলই সংসারে। কী ভাবে ঋণ মেটাবেন সেই চিন্তা থেকেই মাথায় আসে এক পরিকল্পনা। সাজিয়ে ফেলেন এক চুরির গল্প। থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ধুলো দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি পরিকল্পনা। উল্টে মিথ্যা মামলা সাজানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন দিল্লির বাসিন্দা!
সোমবার এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, উত্তম নগরের বাসিন্দা বুট্টা সিংহ। তিনি এসি সারাইয়ের কাজ করেন। সেবক পার্ক এলাকায় একটি দোকানও রয়েছে তাঁর। কিন্তু সম্প্রতি তিনি আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। প্রচুর ঋণও রয়েছে। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবেন, তা ভাবতে বসে নিজের বাড়িতেই চুরির গল্প ফাঁদেন বুট্টা। গত ২১ মার্চ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সেই অভিযোগপত্রে তিনি জানান, বিকেল ৩টে থেকে ৬টার মধ্যে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ঢোকেন। বাড়ি থেকে সোনার নেকলেস, মঙ্গলসূত্র, দু’টি সোনার আংটি, হার এবং ৪৫ হাজার টাকা নগদ চুরি করে পালায়।
আরও পড়ুন:
তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযোগকারীর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি তদন্তকারীদের জানান, যে সময় বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় কিছু জিনিস কিনতে বেরিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী কাজের জন্য বাইরে ছিলেন আর বাচ্চারা স্কুলে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে তিনি দেখতে পান টাকা ও গয়না উধাও।
বুট্টার বাড়িতে তদন্তে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখতে পান জোরপূর্বক ভেতরে ঢোকার কোনও চিহ্ন নেই। বাড়ি চাবি ছিল শুধু মাত্র বুট্টা এবং তাঁর স্ত্রীর কাছেই। সন্দেহ হওয়ায় ওই বাড়ি আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। যে সময়ের চুরির কথা বুট্টা থানায় জানিয়েছেন, সেই সময় বাড়িতে অজ্ঞাতপরিচয় কারও ঢোকার কোনও ফুটেজ নেই। দেখা গিয়েছে অভিযোগকারীই এক বার বাড়ি ঢোকেন এবং বেরিয়ে আসেন।
তদন্তের স্বার্থে বুট্টাকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। জেরার মুখে নিজেই নিজের বাড়িতে চুরির গল্প ফাঁস করেন। জানান, ২০২২ সালে দোকান কেনার জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। পরে ঋণ নিয়ে একটি গাড়িও কিনেছিলেন। সব দিক থেকে ঋণের জালে আষ্টেপিষ্টে বাঁধা পড়ায় সোনার গয়না চুরি করেছিলেন তিনি।