শ্রীশ্রী রবিশঙ্করকে সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের সদস্য করেছে।—ফাইল চিত্র।
রামমন্দির বিবাদের সমাধান না হলে ভারত সিরিয়ায় পরিণত হবে। এমনটাই মত দিয়েছিলেন শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর। যিনি এর আগে কোর্টের বাইরে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর মত ছিল, সমাধানের উপায়, দুই সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় মন্দির তৈরি।
এ হেন শ্রীশ্রী রবিশঙ্করকে আজ সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের সদস্য করেছে। আর তা নিয়ে প্রথম দিনেই প্রশ্ন উঠেছে। এমআইএম-এর প্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসি স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘যদি আরেকটু নিরপেক্ষ কাউকে মধ্যস্থ হিসেবে নিয়োগ করা হত, খুশি হতাম।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘রবিশঙ্কর এর আগে মন্তব্য করেছেন, মুসলিমরা অযোধ্যার দাবি না ছাড়লে, ভারত সিরিয়ায় পরিণত হবে। সুপ্রিম কোর্টের নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ করা উচিত ছিল।’’
আপত্তি তুলেছে নির্মোহী আখাড়াও। জমি বিতর্কে এই সংগঠনটি মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেছে। কিন্তু এ দিন আখাড়ার প্রধান মোহন্ত সীতারাম দাস বলেন, ‘‘শ্রীশ্রীকে এই কমিটির সদস্য করার বিরোধিতা করছি। কারণ, আমরা এই সমস্যার আইনি সমাধান চাই।’’
প্রাক্তন বিচারপতি ফকির মহম্মদ ইব্রাহিম কলিফুল্লার নেতৃত্বে শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর ও প্রবীণ আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আজ যে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল তৈরি করেছে, ঘটনাচক্রে তাঁরা তিন জনই তামিল। আর তাঁদের মধ্যস্থতা করতে হবে উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে বসে। এক দিকে থাকবেন মূলত সাধু-মহন্তরা, অন্য দিকে মুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ড, পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্যরা। সেখানে ভাষাগত সমস্যা হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি কলিফুল্লা দেশের বিশ্ববিদ্যালগুলিতে বৈদিক জ্যোতিষবিদ্যাকে বিজ্ঞানের কোর্স হিসেবে পড়ানোর রায় দিয়েছিলেন। আজ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের স রকম চেষ্টা করব।’’
আরও পড়ুন: অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতার পথেই হাঁটল সুপ্রিম কোর্ট, গঠিত হল তিন সদস্যের প্যানেল
রবিশঙ্কর পরে বলেন, ‘‘সকলকে সম্মান দিয়ে, স্বপ্নকে বাস্তব করতে, ঐক্য বজায় রাখতে আমাদের সকলকে এক সঙ্গে এই লক্ষ্যের দিকে এগোতে হবে।’’ কিন্তু তাঁর লক্ষ্য কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনীতিকদের মধ্যে। তাঁদের যুক্তি, রবিশঙ্কর
২০১৮-য় বলেছিলেন, মুসলমানদের উচিত হিন্দুদের রামমন্দির তৈরির জন্য জমিটা উপহার দিয়ে দেওয়া। কারণ সেটা রামের জন্মভূমি। মুসলিমদের জন্য জায়গাটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে জমিতে বিবাদ থাকে, সেখানে নমাজও আদায় হয় না। এ নিয়ে তিনি মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডকে চিঠিও লিখেছিলেন।
ইলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যায় ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি তিন ভাগে ভাগ করে এক ভাগ মুসলিমদের দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিল। রবিশঙ্করের যুক্তি ছিল, মুসলিমরা এক একর জমি হিন্দুদের উপহার দিলে অন্য কোথাও মসজিদ তৈরির জন্য হিন্দুরা পাঁচ একর জমি উপহার দিতে পারে।
মধ্যস্থতার চেষ্টায় মুসলিম ল’ বোর্ড ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শ্রীশ্রী। তার পরে তাঁর ‘আর্ট অফ লিভিং’ সংস্থা দাবি করে, মুসলিমদের দুই বোর্ডই মসজিদ অন্যত্র সরাতে রাজি হয়েছে। কিন্তু হনুমানগড়ি মন্দিরের মোহন্ত জ্ঞান দাস অভিযোগ তোলেন, তাঁরা একটা রফার চেষ্টা করছিলেন। শ্রীশ্রী তাতে বাধা দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy