আমেরিকার সঙ্গে নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ এবং ‘বিকশিত ভারত’-এর নীতি নিয়ে এগোবে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ ক্ষেত্রে কোনও রকম আপস করা হবে না বলে দাবি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের। তিনি বলেন, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে কোনও আলোচনা করব না।’’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতি ইতিমধ্যেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ট্রাম্প প্রথমে ভারত-সহ এক গুচ্ছ দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপরে চড়া শুল্ক বসিয়ে বুধবার আচমকাই সেই সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন। এই ৯০ দিন সময়কে কাজে লাগিয়ে আমেরিকার সঙ্গে দ্রুত আংশিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সেরে ফেলতে চায় নয়াদিল্লি। উদ্দেশ্য, ভবিষ্যতে ট্রাম্পের শুল্ক এড়ানো। বস্তুত, শুক্রবার বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও এই বার্তা দিয়েছিলেন।
কিন্তু পীযূষ এ প্রসঙ্গে কিছুটা ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি আগেও অনেক বার বলেছি যে, আমরা বন্দুকের মুখে কোনও আলোচনা করব না। সময়সীমা নির্ধারণ করা ভাল। কারণ, এটি আমাদের দ্রুত আলোচনা করতে উৎসাহিত করবে, কিন্তু যত ক্ষণ না আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে সক্ষম হই, তত ক্ষণ তাড়াহুড়ো করা কখনওই ভাল নয়।’’ গত মাসে আমেরিকায় গিয়ে ট্রাম্প সরকারের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিরের ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন পীযূষ। সরকারি সূত্রের খবর, আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এপ্রিলের শেষে ভারতে আসছেন। তাঁর সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা নির্ধারণ।
এই আবহে পীযূষের বক্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে অনেকে মনে করছেন। বাণিজ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের অনেকের ধারণা, চুক্তি নিয়ে দর কষাকষির ক্ষেত্রে তাঁর ওই মন্তব্য পাল্টা চাপের কৌশলেরই অঙ্গ। ৯০ দিনের মধ্যে আংশিক বাণিজ্য চুক্তি সই কিংবা চুক্তির কাঠামো ও রূপরেখা ঘোষণা না হলে ট্রাম্পের চড়া হারের শুল্ক বিপাকে ফেলতে পারে ভারতীয় রফতানিকারকদের। যদিও বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর চুক্তির বিষয়ে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘প্রথম ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে চার বছর ধরে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা হয়েছিল। আমাদের সম্পর্কে কিছু মতামত ছিল ওদের। আমাদের আমেরিকা সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ছিল। সে বার চুক্তি হয়নি। এ বার নতুন করে ট্রাম্প সরকার আসার এক মাসের মধ্যে রফা হয়েছে যে, বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে।’’