বাম জামানার মন্ত্রী, আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
মুর্শিদাবাদের এক নেত্রীকে সমাজমাধ্যমে নানা কুরুচিকর বার্তার অভিযোগ ছিল বংশগোপালের বিরুদ্ধে। যা কার্যত ‘ভার্চুয়াল যৌন হেনস্থা’ হিসাবে অভিযোগ এসেছিল সিপিএমের কাছে। তার ভিত্তিতেই দলীয় স্তরে তদন্ত করে বংশগোপালকে বহিষ্কারের পথে হাঁটল সিপিএম।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলির ডানকুনিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের সময়েই কানাঘুষো শুরু হয়েছিল। তার পর দু’মাস যেতে না যেতেই তা সমাজমাধ্যমে দাবানলের আকার নেয়। আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে সরব হন মুর্শিদাবাদের এক সিপিএম নেত্রী। গত শনিবার থেকেই বংশের ঘটনাটি নতুন মাত্রা পাচ্ছিল। রবিবার ছিল বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। তা শেষ হওয়ার পর থেকেই নানাবিধ স্ক্রিনশট, অডিয়ো ক্লিপ সমাজমাধ্যমে ছড়াতে শুরু করেছে (যদিও ওই স্ক্রিনশট এবং অডিয়ো ক্লিপগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
অভিযোগকারিণী ওই সিপিএম নেত্রী জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলরও বটে। তিনি বলেন, ‘‘একটি সংগঠনের বিষয়ে আমাকে তথ্য দেবেন বলে বংশগোপাল জানিয়েছিলেন। সেই তথ্য না পেয়ে আমি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। পরবর্তী কালে উনি আমাকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন।’’ সেখানেই শেষ নয়। মুর্শিদাবাদের ওই নেত্রীর আরও অভিযোগ, “জেলায় দলের যে মুখপত্র রয়েছে, আমি তার সঙ্গে যুক্ত। সাংবাদিকতা বিষয়টি আমার মধ্যে রয়েছে। তাই আমি বংশগোপালকে আমার হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর দিয়েছিলাম। বুঝতে চেয়েছিলাম, উনি কী কী করতে পারেন। তার পরেই সেখানে তিনি আগল ভেঙে মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন।’’ অভিযোগকারিণীর এ-ও দাবি যে, গত বছর নভেম্বর মাসে তিনি জেলা সিপিএমকে অভিযোগ আকারে সমগ্র বিষয়টি জানিয়েছিলেন। দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির কাছে বিষয়টি পৌঁছেছিল। তার পর সব খতিয়ে দেখে বংশকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন।
রবিবার সিপিএমের প্রভাতী মুখপত্রে বংশগোপালের বহিষ্কার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার কথা। রাজ্য সিপিএমের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, “আমরা কোনও দিনই এই ধরনের ঘটনাকে দলের মধ্যে প্রশ্রয় দিইনি। ভবিষ্যতেও দেব না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লোকসভা, বিধানসভায় আসন থাক বা না থাক এই ধরনের প্রবণতাকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। কিন্তু এরাই পরে তৃণমূল বিজেপির সম্পদ হয়ে উঠবে না তো?” বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সিপিএমের সূত্রে জানার পর বংশগোপালের সঙ্গে আনন্দবাজার ডট কমের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।