মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের জাতিহিংসায় ঘরছাড়া হয়েছেন রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ। আপাতত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। সোমবার তেমনই একটি ত্রাণ শিবিরে গিয়ে গৃহহীন মানুষদের জন্য অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করার কথা ঘোষণা করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। একই সঙ্গে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বীরেন জানিয়েছেন, অন্তত তিন থেকে চার হাজার মানুষের থাকার জন্য অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই মানুষদের তাঁদের পুরনো আস্তানায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সরকার বিপন্নদের সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। যত দিন না গৃহহীনদের পুরনো আস্তানায় ফিরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে, তত দিন তিন-চার হাজার মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাড়ি তৈরি হচ্ছে।” দু’মাসের মধ্যে অস্থায়ী বাসস্থানে সরকারের তরফে যাবতীয় সুযোগসুবিধাও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বীরেন।
শনিবার এবং রবিবার রাতেও মণিপুরের কাংপোকপি জেলার একটি অঞ্চলে দু’টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। আবার মণিপুর প্রশাসন সূত্রে খবর, কুকি অধ্যুষিত হেংজাং গ্রামেও রবিবার মধ্যরাতে আগুন ধরিয়ে দেন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। মণিপুরে প্রায় দেড় মাস ধরে চলা হিংসায় এখনও পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রবিবার সব চেয়ে বেশি হিংসার খবর এসেছে ইম্ফল পশ্চিম জেলার চিংমাং গ্রাম থেকে। এই গ্রামে টহল দেওয়ার সময়েই এক দল দুষ্কৃতীর গুলিতে জখম হন ওই সেনাকর্মী। তাঁকে লেইমাখং-এর সেনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। ওই গ্রামেই অন্তত তিনটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। হিংসার কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মণিপুরের অনেক বাসিন্দা ঘরছাড়া। কেউ সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে মণিপুরের পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে আরও জটিল হয়ে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy