ভ্যানিলা চায নিয়ে আলোচনা ফরাসি প্রতিনিধিদের। — নিজস্ব চিত্র
উত্তর-পূর্বে ভ্যানিলা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে ফ্রান্সের একটি সংস্থা।
গারো পাহাড়ে পশ্চিমি হুলক গিবন বা উল্লুক সংরক্ষণের কাজ করছে বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত একটি সংগঠন। তাঁরাই ওই ফরাসি সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে ভ্যানিলা চাষ শুরু করছে।
শুক্রবার পশ্চিম গারো পাহাড়ের সিলসোতচিগরে গ্রামে ভ্যানিলা চাষে উৎসাহী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন ‘ইউরোভ্যানিল’ নামে ওই ফরাসি সংস্থার কর্তারা। ভ্যানিলা চাষের বিভিন্ন দিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে ভ্যানিলার বিপুল চাহিদার কথা জানান তাঁরা। ভ্যানিলা এক প্রজাতিক অর্কিড। যার সুগন্ধী ফল শুকিয়ে খাবারে গন্ধ যোগ করা হয়।
সংস্থাটির উৎপাদন অধিকর্তা নিকোলাস লেবাস ভারত, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বে অর্কিড-বান্ধব পরিবেশে ভ্যানিলা চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে এ দেশে এসেছেন। তিনি জানান, গারো পাহাড়ের পরিবেশ ভ্যানিলা উৎপাদনের জন্য আদর্শ। তাই, ওই সংস্থা আপাতত ১৪ বছরের জন্য কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি করতে চলেছে। অর্থাৎ যে পরিমাণ ভ্যানিলা উৎপাদিত হবে তার পুরোটাই ওই সংস্থা কিনে নেবে। বিক্রির জন্য বাজার ধরার কথা আপাতত ভাবতে হবে না কৃষকদের।
নিকোলাস জানান, সংস্থা দীর্ঘকালীন চুক্তিতে বিশ্বাসী। কারণ তাঁরা ধরতে চান ভারতের বাজার। তাঁর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ভ্যানিলা উৎপাদনের ৮০ শতাংশই মাদাগাস্কার থেকে আসে। কিন্তু সেখানকার বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা অস্থির হওয়ায় ভারতের দিকে বেশি করে নজর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতে তৈরি ভ্যানিলার ভাল চাহিদা তৈরি হয়েছে। অথচ এ দেশে এই চাষ এখনও তেমন জনপ্রিয় নয়।
একেবারে জৈব পদ্ধতিতে, বৃষ্টি অরণ্যে ভ্যানিলা অর্কিডের ফলন হয়। গারো পাহাড় তথা উত্তর-পূর্ব ভ্যানিলা চাষের ভবিষ্যৎ সমীক্ষার জন্য ও ভ্যানিলার চাহিদা বোঝানোর জন্য সংস্থার তরফে এই অঞ্চলে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হচ্ছে।
নোকরেক অভয়ারণ্য লাগোয়া এলাকায় ভ্যানিলা চাষ শুরু করা হচ্ছে। সংস্থার তরফে প্রথম পর্যায়ে বাছাই করা গ্রামে কৃষকদের পরিকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সুবিধা দেওয়া হবে। পরে আরও গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়া হবে ভ্যানিলার চাষ।
অতীতে মেঘালয় সরকারের তরফে ভ্যানিলা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়। গারো পাহাড়ে এসে ভ্যানিলা কেনার মতো ক্রেতা মিলছিল না। কিন্তু উল্লুক সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরিয়ান ম্যাগনে আশাবাদী, এ বার বিদেশি সংস্থা নিজের উদ্যোগে চাষ করা ও উৎপাদিত দ্রব্য কেনার চুক্তি করায় গারো গ্রামবাসীরা বিকল্প রোজগারের সন্ধান পাবেন। সেই সঙ্গে সংরক্ষণের কাজেও তা উপযোগী হবে।
নর্থ-ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটি বা নেহুর কৃষিজ পণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাও নিকোলাসের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy