বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন। ফাইল ছবি।
বছর তিনেক আগে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন তৈরির সময় প্রতিটি রেকে খরচ পড়েছিল প্রায় ১০৬ কোটি টাকা। এখন উন্নত প্রযুক্তির ওই ট্রেন (১৬ কোচ) তৈরিতে কমবেশি ১১৫ কোটি টাকার খরচ পড়তে পারে বলে জানাচ্ছে রেল। অর্থাৎ নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তৈরির জন্য রেক-পিছু খরচ বাড়ছে প্রায় ন’কোটি টাকা। তবে রেলকর্তাদের বক্তব্য, বেশি সংখ্যায় রেকের উৎপাদন শুরু হলে খরচ কিছুটা নেমে আসতে পারে।
আগামী অগস্টে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য এক জোড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের মহড়া দৌড় শুরু হওয়ার কথা। মহড়া সন্তোষজনক হলে পরের ধাপে আরও বেশি সংখ্যায় ট্রেনের উৎপাদন ত্বরান্বিত করা হবে। এখন নয়াদিল্লি থেকে বারাণসী ও কাটরার মধ্যে দু’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চলছে।
মহড়ার জন্য যে-দু’টি রেক তৈরি করা হচ্ছে, তার চাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে কোনও মতে স্থলপথে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ওই চাকা ভারতে আনা হয়েছে আকাশপথে। প্রযুক্তিগত ভাবে নতুন রেকগুলি আগের তুলনায় উন্নত বলে রেলকর্তাদের দাবি। দুর্ঘটনা এড়াতে তাতে আছে ‘ট্রেন কলিশন অ্যাভয়েড্যান্স সিস্টেম’ বা সংঘর্ষ এড়ানোর রক্ষাকবচ। ঠিক যেমন থাকে বিমানে। কোথাও সিগন্যাল উপেক্ষা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে ওই ব্যবস্থায় ট্রেন নিজের থেকেই থেমে যাবে। এ ছাড়াও ট্রেনে কেন্দ্রীয় ভাবে কোচ মনিটরিং সিস্টেম থাকবে। স্মার্ট কোচ হওয়ার ফলে কোনও প্রত্যঙ্গ বিকল হলে নির্দিষ্ট সেন্সর সঙ্গে সঙ্গে তা জানিয়ে দেবে। এ ছাড়া চালকের কেবিন থেকেই কোচের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে স্বয়ংক্রিয় ভাবে। আগুন লাগার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে আগেভাগে তার আঁচ পাওয়া যাবে। বৈদ্যুতিক কেব্ল বা বাতানুকূল যন্ত্র থেকে যাতে আগুন না-ছড়ায়, তার ব্যবস্থাও থাকবে। প্রতিটি কামরায় স্বয়ংক্রিয় দরজা, ভেস্টিবিউলে কাচের স্লাইডিং দরজা ছাড়াও এ বার আপৎকালীন ব্যবস্থার সুবিধা হিসেবে ইমার্জেন্সি লাইট এবং টক ব্যাকের সুবিধা থাকবে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কামরায় বিশেষ বোতাম টিপে সরাসরি চালকের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন যাত্রীরা। এ ছাড়াও প্রতিটি কামরায় দু’টির বদলে চারটি করে আপৎকালীন দরজা থাকবে।
যাত্রীদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বন্দে ভারতে আগের আসন বদলে বিমানের মতো আসন বসানো হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর। ট্রেনে ঝাঁকুনি কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের লাগেজ রাখার ব্যবস্থাও আগের তুলনায় উন্নত করা হচ্ছে। নতুন রেকের মহড়া দৌড় সম্পূর্ণ হলে চেন্নাই, রায়বরেলী এবং কপূরথালার কারখানায় মাসে ১০টি করে বন্দে ভারত রেক উৎপাদন করতে চায় রেল। প্রথম পর্বে ৭৫টি ট্রেনের উৎপাদন মিটলে পরে আরও ৪০০ রেকের উৎপাদন শুরু করা হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy