জয়প্রকাশ নারায়ণের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন রবিশঙ্কর প্রসাদ, অনন্ত কুমার, সুশীল মোদী। পটনায়। ছবি: শ্যামলী দে।
যুদ্ধ ক্ষেত্রে সুমো!
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে সংবাদ মাধ্যম, সর্বত্রই পরিচিত হয়েছিলেন ‘নমো’ নামে। নাম ও পদবির আদ্য অক্ষরে জুড়েই তাঁর এই পরিচিতি। বিহার নির্বাচনের আগে একই ভাবে বিজেপি নেতা সুশীল মোদী হয়েছেন সুমো। অনুগামীরা এই নামেই তাঁকে ডাকছেন, নামের অধিকারীরও তাতে যে আপত্তি আছে, এমন মনে হয় না।
সুমো-র লেখা আত্মজীবনী নিয়েই আজ সরগরম বিহার বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। রাজ্যে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে বিজেপি যে বিধানসভা ভোটে লড়বে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয় সার-রসায়ন মন্ত্রী অনন্ত কুমার। তবু আজ, জরুরি অবস্থার বর্ষপূর্তি দিবসকে সামনে রেখে রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীর লেখা আত্মজীবনী ‘বিচ সমর মে’-র প্রকাশ অনুষ্ঠানের ছবিটা কিন্তু অন্য কথা বলছে। বলছে, বিজেপি জিতলে মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্য দাবিদারদের থেকে তিনি অনেকটাই এগিয়ে। তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশের অনুষ্ঠানে গোটা বিহার বিজেপিকেই মঞ্চে হাজির করিয়েছেন সুমো। ব্রাহ্মণ নেতা অশ্বিনী চৌবে, রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে থেকে যাদব নেতা নন্দকিশোর যাদব, রামকৃপাল যাদব, ভূমিহার নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাধামোহন সিংহ থেকে অনন্ত কুমার, রবিশঙ্কর প্রসাদ সবাই কার্যত সুশীল মোদীর রাজনৈতিক ‘সংষর্ষ’-কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাই বললেন।
অনুষ্ঠানের আগে সকলে যান জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনের এক ও অদ্বিতীয় নেতা, জয়প্রকাশ নারায়ণের পটনার বাসভবনে। জেপি আন্দোলন থেকেই উত্থান নীতীশ, সুশীল মোদী, লালুপ্রসাদদের। আজ সুশীল মোদী-সহ বিজেপি নেতারা জয়প্রকাশের মূর্তিতে মালা দেন।
বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নন্দকিশোর যাদব দেরি করে পৌঁছোন বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে। মঞ্চে উঠে তিনি বলেন, ‘‘এতদিন সুশীল মোদীর বক্তৃতা শুনতাম। এখন লেখা পড়ব। বইটা পড়িনি। দেখতে হবে লেখাতে কতটা ‘ন্যায়’ করেছেন তিনি। তবে আমিও সাংবাদিক ছিলাম। লেখালেখি করেছি।’’ নন্দকিশোরের এই বক্তব্য বাদ দিলে গোটা অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল সুশীল মোদী এবং জরুরি অবস্থার সময় নিয়ে আলোচনা। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী রাধামোহন সিংহ বলেন, ‘‘আরএসএস এবং অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সব সময়ের কর্মী ছিলেন সুশীল মোদী। তার পরেই রাজনীতিতে আসেন। বিহারের রাজনীতিতে তাঁর অনেক কিছু দেওয়ার আছে।’’ বিহারকে কংগ্রেস ও তার সহযোগীদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য সকলকে এক হতে বলেন তিনি। আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘স্বয়ংসেবক থাকার সময় থেকেই সুশীলকে আমি চিনি। এক সঙ্গে এতদিন রাজনীতি করেছি। এত লড়াই করেছি। পুলিশের লাঠি খেয়েছি।’’ তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে যান অনন্ত কুমার। তিনি বলেন, ‘‘সুশীল মোদী শুধু বিহারের নন, জাতীয় ক্ষেত্রের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সংঘর্ষের প্রতীক। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন।’’ আর যাঁকে ঘিরে এই অনুষ্ঠান। সেই সুশীল মোদী জানিয়েছেন, নিজের লেখা বইটিতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইতিহাস রয়েছে। ‘‘বাকিটা বছর খানেক পরে, যদি সময় পাই তবে লিখব।’’
সময় পাবেন কিনা তা অবশ্য স্পষ্ট হবে বিধানসভা ভোটের পরেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy