ফাইল চিত্র।
অক্সিজেন ও রেমডেসিভিয়ারের আকাল। সুরাহা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জরুরি ফোন করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু উদ্ধব সরকারের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, তিনি এখন পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথাই বলতে পারেননি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এ দিন পশ্চিমবঙ্গে আসানসোল ও গঙ্গারামপুরে জনসভা করেছেন। এই নিয়ে রাজ্যের ভোট প্রচারে দেড় ডজন সভা করলেন মোদী। দেশে আজও দৈনিক করোনা-আক্রান্ত পেরিয়েছে ২ লক্ষের গণ্ডি। এরই মধ্যে বাংলায় ভোটের প্রচার করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অক্সিজেনের অভাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময় নেই অভিযোগ ওঠায় তাকে হাতিয়ার হিসেবে লুফে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে ‘ফ্রড মাস্টার’ আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী। কাজের বেলায় কিচ্ছু নেই।” কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমও মোদীকে নিশানা করে বলেন, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে সবসময় মুখ্যমন্ত্রীদের এক ফোনের দূরত্বে থাকতে হবে। তাঁর উচিত দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর ডেস্কে বসে থাকা। কারণ এই সরকারে তিনিই সব সিদ্ধান্ত নেন। অথবা তাঁর দফতর। কোভিড সঙ্কট না সামলে প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে বারবার বাংলায় প্রচারে যাচ্ছেন, তা দেখে বাংলার মানুষও ভোটে এর জবাব দেবেন বলে চিদম্বরমের মন্তব্য।
উদ্ধবের অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক তোপের মুখে পড়ে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, হর্ষ বর্ধন আসরে নামেন। পীযূষ উদ্ধবের বিরুদ্ধে সস্তার রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অক্সিজেন পেয়েছে মহারাষ্ট্র। কেন্দ্র প্রতিদিনই যোগাযোগ রাখছে।’’ অন্য দিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন নিজেই উদ্ধবের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে আশ্বাস দেন, মহারাষ্ট্রকে পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অক্সিজেনের জোগান দেওয়া হবে। ১,১২১টি ভেন্টিলেটরও মহারাষ্ট্রকে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরও জানিয়েছে, শুক্রবারই অক্সিজেন সরবরাহের বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন মোদী। কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যোগাযোগ রয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকারের বক্তব্য, সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩,৭২৯ জন। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের জেরে সেখানে অক্সিজেন এবং রেমডেসিভিয়ারের আকাল। সেই সমস্যার সমাধানে মোদীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরেই উদ্ধবেরা অভিযোগ তোলেন। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী নবাব মালিকের কটাক্ষ, ‘‘মানুষ মারা যাচ্ছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে।’’
আজকের পরেও প্রধানমন্ত্রী আরও দু’দফায় রাজ্যে প্রচারে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ফ্রড মাস্টার। রাজ্যে রাজ্যে মিথ্যা কথা বলে দাঙ্গা ছড়িয়ে দিয়েছে, কোভিড ছড়িয়ে দিয়েছে। একটা কাজও করতে পারে না। আজকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর একটা বিবৃতি দেখলাম, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। যেহেতু তাঁদের ওখানে করোনা বাড়ছে, তাই অক্সিজেন চাইছেন, ভ্যাকসিন চাই। কিন্তু পিএমও থেকে তিনি শুনেছেন, মোদী বাংলায় গিয়েছেন নির্বাচনের জন্য। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেননি। বুঝুন এত বড় ইমার্জেন্সি! দেশের ২ লক্ষ লোক প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ছ’মাসে সবাইকে ভ্যাকসিন দিলে করোনা ছড়াত না। অন্য দেশকে ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছেন, আমাদের দেশের লোককে দেয়নি।”
কংগ্রেস নেতা চিদম্বরমের প্রশ্ন, “এটা কি জনসভা করার সময়? কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে এই সব জনসভায়। ওঁর উচিত নিজের ডেস্কে বসে টিকার জোগান, রাজ্যের অভাব মেটানো নিশ্চিত করা। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর জোগান নিশ্চিত করা। উনি যদি ভাবেন, এ সব প্রধানমন্ত্রীর পদের তুলনায় ছোট কাজ, তা হলে দুঃখিত, এগুলোই প্রধানমন্ত্রীর কাজ। দেশে যুদ্ধের সময় প্রধানমন্ত্রীরা কোথায় ছিলেন! নিজেদের ডেস্কে।” এখন আর সম্ভব না-হলেও, নির্বাচন কমিশন চাইলে আগেই অনেক কম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ভোটগ্রহণ সেরে ফেলতে পারত বলেও চিদম্বরমের মন্তব্য। তাঁর যুক্তি, কেরল-তামিলনাড়ু-পুদুচেরির ৪০৪টি আসনে এক দিনে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy