দুপুরে গরম ধোসা আর ফিল্টার কফি আসছে ঠিকই। কিন্তু পাতটাই আলাদা হয়ে গিয়েছে সেন্ট্রাল হলে! ‘আম্মা’র সেই সুখী পরিবার এখন অতীতের রংচটা ছবিমাত্র। চলতি বাজেট অধিবেশনে সংসদে দেখা যাচ্ছে দু’টি এডিএমকে-কে! প্রথমটি শশিকলাপন্থী সংসদীয় দল, নেতৃত্বে থাম্বিদুরাই। দ্বিতীয়টি পনীরসেলভমপন্থী সাংসদরা। তাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন মৈত্রেয়ন।
তামিলনাড়ুর রাজ্যপাট নিয়ে লড়াইয়ের পরে দৃশ্যতই ‘ভেন্ন’ হয়ে গিয়েছে জয়ললিতার সংসদীয় দল। লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে এডিএমকে-র ৫০ জন সাংসদ। যার মধ্যে দলে ভারী শশিকলাপন্থীরাই (৩৭)। বাকি ১৪ জন পনীরের দিকে। মুখ দেখাদেখিটাই খালি এড়ানো যাচ্ছে না। কিন্তু একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর কথাবার্তা বন্ধ।
মৈত্রেয়নের কথায়, ‘‘আরে, শশিকলা এখন দুর্নীতির অভিযোগে জেলে বন্দি। ওঁর তাঁবেদারদের এটা বোঝা উচিত যে, আম্মার তৈরি করা এত দিনের গরিমা ধুলোয় মিশে গিয়েছে। আজ আম্মা থাকলে দলকে এই অবস্থা দেখতে হতো না।’’ এর ঠিক উল্টো কথা বলছেন থাম্বিদুরাই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২৭ বছর ধরে চিন্নাম্মা, আম্মা হরিহর আত্মা। আজ চিন্নাম্মার যাঁরা বিরোধিতা করছেন, তাঁরা আম্মার প্রতিই অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করছেন।’’
আগে অধিবেশনের বিরতির সময় উপস্থিত দলীয় সদস্যরা একসঙ্গে আসতেন সেন্ট্রাল হলে। দুপুরে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া চলত, সঙ্গে তামিলে আড্ডা। এখন দু’টি দল বসছে সেন্ট্রাল হলের দু’প্রান্তে। সংসদের দলীয় অফিসেও শশিকলাপন্থী সদস্যরা দলে ভারী থাকলে ঢুকেও বেরিয়ে আসছেন পনীরপন্থীরা। মুখোমুখি পড়ে গেলে না-চেনার ভান করছেন। লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় বসার আসন পাল্টানো সম্ভব নয়, তাই আড়ষ্ট ভাবে পাশাপাশিও বসতে হচ্ছে অনেককে। দুই শিবিরের উত্তেজনাও ক্রমশ বাড়ছে। পনীরসেলভম গোষ্ঠী এখন বিধানসভার আস্থাভোটকে (যেখানে জিতে শশীকলাপন্থী পালানিস্বামী মুখ্যমন্ত্রী হন) সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে বসেছে। আদালত কী রায় দেয়, তার জন্য কম্পিত হৃদয়ে অপেক্ষমান দু’পক্ষই।
তবে দু’তরফের এই চরম উত্তেজনার মধ্যেও একটা জিনিস বদলায়নি। প্রত্যেক সাংসদের দুধ সাদা ফিনফিনে শার্টের পকেটে আগের মতোই শোভা পাচ্ছে আম্মার ছোট ছবি। যা দেখে অন্য দলের অনেকেই ঠাট্টা করে জানতে চাইছেন, ‘‘এক দিকে আম্মা রয়েছেন ঠিকই। উল্টো পিঠে কার ছবি? শশিকলা না পনির!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy