বান্ধবগড়ে ১০টি হাতির মৃত্যুর কারণ প্রকাশ্যে এল। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বান্ধবগড়ে ১০টি হাতির মৃত্যুর কারণ প্রকাশ্যে। বিষ প্রয়োগ নয়, বাজরার ছত্রাকের বিষক্রিয়ায় প্রাণ গিয়েছে তাদের। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে একের পর এক হাতির মৃত্যুতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে ১০টি হাতির মৃত্যু হয়। হাতিমৃত্যুর কারণ ঘিরে নানা মহলে চলছিল জল্পনাও। কেউ কেউ বলছিলেন, বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে ওই হাতিদের। সাসপেন্ড করা হয়েছিল বন দফতরের দুই আধিকারিককেও। সেই আবহেই এ বার টক্সিকোলজি রিপোর্ট জানিয়ে দিল, ‘ইচ্ছাকৃত’ বিষপ্রয়োগে নয়, বরং কোদো বাজরায় জন্ম নেওয়া ছত্রাক থেকেই বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে হাতিগুলির।
বরেলির ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃত হাতিগুলিকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ খাওয়ানো হয়নি। ছত্রাক সংক্রামিত কোদো বাজরা খেয়েই ওই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে। ময়ানাতদন্তে হাতিগুলির পেটে মাত্রাতিরিক্ত বাজরা মিলেছে। মিলেছে বিষাক্ত সাইক্লোপিয়াজোনিক অ্যাসিড, যা কোদো বাজরার বীজে থাকা অন্যতম প্রধান মাইক্রোটক্সিনগুলির মধ্যে একটি। সেই থেকেই বিষক্রিয়া ছড়ায়।
হাতিমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এত দিনে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। ওই ঘটনার পরপরই তদন্তের নির্দেশ দেন মধ্যপ্রদেশের বনমন্ত্রী রামনিবাস রাওয়াত। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। একসঙ্গে ১০টি হাতির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করে মধ্যপ্রদেশ সরকার। সেই মতো দিল্লি থেকে বিশেষজ্ঞ দল বান্ধবগড়ে পৌঁছয়। ১৪ জন পশুচিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় ময়নাতদন্ত। প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে হাতিগুলির। মৃত হাতিগুলির সকলেরই পেটে প্রচুর পরিমাণে বাজরা পাওয়া গিয়েছিল। তবে কী থেকে বিষক্রিয়া, না কি এর নেপথ্যে বড় কোনও চক্রান্ত কাজ করছে, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন তদন্তকারীরা। বন দফতরের কিছু কর্মী আবার মনে করছিলেন, অতিরিক্ত কীটনাশক দেওয়া ফসল খাওয়ার ফলেও হাতিগুলির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। ছ’জন কৃষককে চিহ্নিতও করা হয়, যাঁদের ক্ষেত থেকে হাতিগুলি বাজরা খেয়েছিল। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে দিল সদ্য প্রকাশ্যে আসা টক্সিকোলজি রিপোর্ট।
গত ২৯ অক্টোবর বিকেলে বান্ধবগড় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের কোর খিটৌলি এলাকায় জঙ্গলে চারটি হাতির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বন দফতরের কর্মীরা। আশপাশের জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে আরও পাঁচটি হাতিকে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাদেরও মৃত্যু হয়। শুক্রবার মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরও একটি হাতিকে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দলে মোট ১৩টি হাতি ছিল। তার মধ্যে দলের একমাত্র পুরুষ হাতি-সহ ১০টির মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনটি হাতির উপর এখনও নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই তিনটি হাতি সুস্থ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy