চলন্ত গাড়িতে খুন করা হল রূপটানশিল্পীকে। দিদির মৃত্যু চোখের সামনে দেখল বোন। ঘটনাস্থল আবার সেই উত্তরপ্রদেশ। অভিযোগ, চলন্ত গাড়িতে তিন যুবক মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। তাতে বাধা দেওয়ায় তরুণীর ঘাড়ে পর পর কোপ বসিয়ে দেওয়া হয়। গাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে গত কয়েক দিনে পর পর চার বার গণধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মতো অভিযোগে শিরোনামে উঠে এল উত্তরপ্রদেশ। বারাণসী, কাসগঞ্জ, রামপুরের পর এ বার খাস লখনউ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত তরুণী পেশাগত কারণে একটি বিয়েবাড়িতে কনে সাজাতে গিয়েছিলেন। তাঁকে সেখানে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বোনকে সঙ্গে নিয়ে বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। রূপটানশিল্পীকে নিয়ে যেতে বিয়েবাড়ি থেকে গাড়িও পাঠানো হয়। গাড়িতে ছিলেন তিন যুবক। বিয়েবাড়ির সাজ শেষ করে আবার সেই গাড়িতেই বাড়ি ফেরার জন্য উঠে বসেন দুই বোন। অভিযোগ, ফেরার পথে তাঁদের শ্লীলতাহানি করা হয়। নিহতের বোন জানিয়েছেন, তাঁর দিদির গায়ে হাত দেওয়া হচ্ছিল। তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্তেরা। কিন্তু দিদি তাতে বাধা দেন। এতেই রেগে গিয়ে এক জন তরুণীর ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। তাঁর বোনের কথায়, ‘‘ওরা আমাদের দু’জনেরই শ্লীলতাহানি করে। দিদিকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করছিল। দিদি বাধা দিতেই ওরা ঘাড়ে কোপ বসিয়ে দিল।’’
আরও পড়ুন:
তরুণীর বোন জানিয়েছেন, তাঁর চোখের সামনেই পর পর একাধিক বার দিদির ঘাড়ে কোপ বসানো হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় দিদি যখন ছটফট করছিলেন, সেই সময়ে চালক অসতর্ক হয়ে পড়লে তাঁদের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রাস্তার একটি ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায় গাড়ি। দুই বোনের চিৎকারে স্থানীয়েরা জড়ো হন এবং তাঁদের উদ্ধার করেন। তার আগেই অভিযুক্ত তিন জন পালিয়ে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, যাওয়ার সময়ে তাঁরা হুমকি দিয়েছিলেন, কাউকে এই ঘটনার কথা জানালে বা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তরুণীর বোন এবং গোটা পরিবারকেই খুন করা হবে।
ঘটনার পর নিহত তরুণীর স্বামী লখনউয়ের বঁথরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মৃতের দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দু’জনকে গ্রেফতার করা গেলেও তৃতীয় অভিযুক্ত এখনও ধরা পড়েননি। তাঁকে খুঁজছে পুলিশ। অভিযোগ, ওই তৃতীয় জনই খুন করেছিলেন রূপটানশিল্পীকে। এসিপি বিকাশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। যত দ্রুত সম্ভব তৃতীয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে কিছু দিন আগে এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। ২৩ জন মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বারাণসী গিয়ে এই ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ১৪ জন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার পরপরই গণধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে কাসগঞ্জ থেকে। অভিযোগ, সেখানে এক তরুণী তাঁর হবু স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন। তার পর উত্তরপ্রদেশের রামপুরে ১১ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ বার লখনউতে ধর্ষণের চেষ্টায় বাধা দেওয়ায় খুন হতে হল তরুণীকে।