—প্রতীকী চিত্র।
আলিপুরদুয়ার শহরের যৌনপল্লিতে মহিলাকে খুন করার পরে গণপিটুনিতে মৃত্যু হওয়া যুবকের পরিচয় জানতে পারল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম বিশ্বদীপ দাস (৩৫)। তার বাড়ি কোচবিহার জেলার পুন্ডিবাড়ি থানার পাতলাখাওয়া এলাকায়। যৌনপল্লিতে মঙ্গলবার রতের ঘটনায় মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জনকেও গ্রেফতার করেছে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বদীপের ছোড়া গুলিতে যৌনপল্লিতে মৃত্যু হওয়া কৌশল্যা মাহাতোর (৬০) সঙ্গে মনোজের দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। আবার সম্প্রতি মনোজের সঙ্গে বিশ্বদীপেরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই সূত্রেই বুধবার মনোজকে আটক করে জেরা শুরু করে পুলিশ। বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “শহরের যৌনপল্লিতে মহিলাকে যে যুবক গুলি ছুড়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ, তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে আর কিছু বলতে চাননি জেলার পুলিশকর্তারা। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার শহরের সমাজপাড়ার যৌনপল্লিতে কৌশল্যার মাথার পিছনে পিস্তল তাক করে গুলি ছোড়ে বিশ্বদীপ। তার পরে এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধাওয়া করে জনতা। এক সময় নিজেকে বাঁচাতে ইটখোলার কাছে জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে বিশ্বদীপ। গুলিতে জখম হয় পনেরো বছরের এক কিশোর। এর পরে কিছু দূরেই বিশ্বদীপকে ধরে ফলে জনতা। তার পরে শুরু হয় গণপিটুনি। তার জেরে মৃত্যু হয় বিশ্বদীপের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্তে নেমে কৌশল্যার সঙ্গে মনোজের বিবাদের বিষয়টি জানা যায়। মাস কয়েক আগে মনোজ অস্ত্র-আইনে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছিলেন। কিছু দিন জেলে ছিলেন। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, কৌশল্যার সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদ ছিল মনোজের। মাঝে এক বার যৌনপল্লিতেই কৌশল্যার সঙ্গে তাঁকে বচসা করতেও দেখা যায়। এরইমধ্যে বিশ্বদীপের পরিচয় জানার পরে তার সঙ্গে যে মনোজের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, সেটাও পুলিশ জানতে পারে। তার পরেই মনোজকে আটক করে জেরা শুরু করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, কোচবিহারের পাতলাখাওয়ার বাসিন্দা বিশ্বদীপ একটা সময় একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক ছিল। পাতলাখাওয়া-সহ আশপাশের এলাকায় গৃহশিক্ষকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিল। সেই যুবক কেন হাতে পিস্তল তুলে নিল, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও।
যদিও এ দিন কৌশল্যার পুত্রবধূ মামুন মাহাতো জানান, শাশুড়ির সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা তাঁরা কখন দেখেননি। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার সময় মা নিজের দোকানের সামনে রাখা একটি চৌকিতে বসেছিলেন। সামান্য দূরেই বাড়ির সামনে আমিও বসেছিলাম। তখনই দেখলাম, একটি লোক মায়ের দোকানে ঢুকল। কিছুক্ষণ পরে দোকান থেকে বের হয়ে সেই লোকটি শাশুড়ি মায়ের মাথার পিছনে হাত রাখলো, সেটাও দেখলাম। তার পরে একটা শব্দ হল, শাশুড়ি মা মুখ থুবড়ে নীচে পড়ে গেলেন।”
মঙ্গলবারের ঘটনার পরে এ দিনও থমথমে ছিল আলিপুরদুয়ার শহরের যৌনপল্লি। এলাকার দোকানপাট সব বন্ধ ছিল। কিছু কিছু জায়গায় ভিড় করেছিলেন যৌনকর্মীরা। কিন্তু অপরিচিত লোক দেখতেই তাঁরা ঘরে ঢুকে যান। সমাজপাড়ার যৌনকর্মীরা জানিয়েছেন, আপাতত কয়েক দিন যৌনপল্লিও বন্ধ থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy