Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Book Fair

বইমেলায় পছন্দের বইয়ের অপেক্ষায় থাকেন পাঠক

বই কেনাবেচা লক্ষ্য হলেও, তা ছাপিয়ে বইমেলা একটা আবেগ। কিন্তু, আবেগে মন ভরলেও, পেট ভরে না বইমেলা কেন্দ্র করে আবর্তিত এক বিরাট বাজারের।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অনিন্দিতা গুপ্ত রায়
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৯
Share: Save:

বাঙালির বই পড়া বা কেনার অভ্যেস নিয়ে যত বিতর্কই থাক, বইমেলা আজও কিন্তু শিক্ষিত বাঙালির আবেগ ও ভালবাসার জায়গা। হতে পারে, এই মেলা ততটা আমজনতার নয়, যতখানি কবি-লেখক-সাহিত্যিক-প্রকাশকদের কাছে। তবু বইপ্রেমী, সংস্কৃতিবান বাঙালির কাছে বইমেলা সারা বছরের সবথেকে ‘বড় উৎসব’।

মূলত, বই কেনাবেচা লক্ষ্য হলেও, তা ছাপিয়ে বইমেলা একটা আবেগ। কিন্তু, আবেগে মন ভরলেও, পেট ভরে না বইমেলা কেন্দ্র করে আবর্তিত এক বিরাট বাজারের। তাই পুস্তক প্রকাশনা ও সাহিত্যচর্চা— দুই-ই শিল্পের দু’টি রূপ হলেও, একত্রে লাভজনক আদানপ্রদানের সুযোগ তাতে থাকে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। কলকাতার বইমেলা হয়তো তা পূরণে কিছুটা সফল, মফঃস্বলের বইমেলা কিন্তু অন্য কথা বলে। বই কখনওই নির্দিষ্ট পাঠক ছাড়া অধিকাংশের কাছে অত্যাবশ্যক বস্তু নয়। বরং এক-দু’টি শখে কেনার মতো। তাই বাধ্য হয়েই মেলার আকর্ষণ বাড়াতে নানা কৌশল নিতে হয় উদ্যোক্তাদের। বিভিন্ন বইমেলায় যাওয়ার অভিজ্ঞতায় মাঝেমাঝে ভাবতে হয়, আসলে ঠিক কীসের মেলা এ সব? শাড়ি, শীতের পোষাক, অলঙ্কার, খেলনা, হস্তশিল্প, কার্পেটের সঙ্গেই দেদার খাবারের দোকান। দলবেঁধে শীতের সন্ধ্যায় ঘুরতে যাওয়া বা আড্ডার জায়গা যে কোনও মেলার মতো বইমেলাও হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। তাতে ভিড় বাড়ে, খাবারের বিক্রি বাড়ে, কিন্তু বইয়ের বিক্রি?

গ্রন্থাগারগুলির দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন প্রকাশক ও বিক্রেতারা। কিন্তু মুশকিল হল, কলকাতার বাইরে, বিশেষত উত্তরের জেলাগুলিতে বইমেলা জেলা শহরের বাইরে অনেকটা দূরবর্তী অঞ্চলে হলে প্রকাশকেরাও আসার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। বা এলেও সামান্য কয়েকটি বই নিয়ে আসেন। মেলার টিকিট বিক্রি আর বই বিক্রির অনুপাতে দীর্ঘ ফারাক রয়ে যায় বারবার। মেলা কমিটি মাঠ ভরানোয় যত ব্যস্ত থাকেন, বই বিক্রি নিয়ে মাথা ঘামানোর সুযোগ তত পান না। তবু এত সব হতাশাব্যঞ্জক কথাবার্তার মাঝখানেও বইমেলার দিকে তাকিয়ে আজও তরুণ লেখকের নতুন পাণ্ডুলিপি সেজে ওঠে দুই মলাটে। তাঁর রক্ত-মাংস-ঘাম-অশ্রু জীবন্ত হয়ে উঠবে বলে। ক্ষতি স্বীকার করেও প্রকাশক ঝাঁপ দেন পরবর্তী প্রকল্পে। মফঃস্বলের স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়ে সুযোগ পায় একসঙ্গে এত বইয়ের পাতা উলটে দেখার। আর এ সব লক্ষ্য, উপলক্ষ্য ছাপিয়ে মগ্ন পাঠক প্রেমিকের মতো অপেক্ষায় থাকেন মেলাপ্রাঙ্গনে কুয়াশার আড়ালে হ্যালোজেন ছাপিয়ে ওঠা চাঁদের আলোয় তার প্রিয় বই খুঁজে পেতে।

লেখক: ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা, খাগড়াবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy