Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
সেনা অভিযানে খতম জঙ্গিও

বাহিনীকে বাধা দিয়ে নিহত তিন

দিন তিনেক আগে ডেপুটি জেল সুপার আব্দুল সামাদ বাটের বা়ড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে হুমকি দিয়েছিল জঙ্গিরা। তাঁর ছেলে ও ভাইপোকে তুলেও নিয়ে যায় তারা। পরে তাদের ছেড়ে দিলেও গাড়িটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

পাল্টা: তখনও চলছে জঙ্গি দমন অভিযান। মঙ্গলবার কাশ্মীরের দরবা চাদুরায় জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।

পাল্টা: তখনও চলছে জঙ্গি দমন অভিযান। মঙ্গলবার কাশ্মীরের দরবা চাদুরায় জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সং‌বাদদাতা
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

দিন তিনেক আগে ডেপুটি জেল সুপার আব্দুল সামাদ বাটের বা়ড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে হুমকি দিয়েছিল জঙ্গিরা। তাঁর ছেলে ও ভাইপোকে তুলেও নিয়ে যায় তারা। পরে তাদের ছেড়ে দিলেও গাড়িটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয় আরও কয়েক জন পুলিশের পরিবারকে। ফলে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে চাপ বাড়ছিল বাহিনীর উপরে। আজ বাদগামের চাদুরা এলাকায় হিজবুল জঙ্গি তৌসিফ শেখকে খতম করল তারা। পুলিশের দাবি, আব্দুলের বাড়িতে হামলাকারীদের মধ্যে ছিল তৌসিফ। চাদুরায় বাহিনীকে বাধা দিতে গিয়ে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তিন স্থানীয় যুবক।

পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুলের বাড়িতে হুমকির পরেই জঙ্গিদের গতিবিধির উপরে নজরদারি বাড়ানো হয়। গোপন সূত্রে বাদগামের দরবা চাদুরায় তৌসিফ-সহ কয়েক জন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পায় বাহিনী। আজ সেনা, সিআরপিএফ ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরেই একটি বাড়ি থেকে গুলিবর্ষণ শুরু করে জঙ্গিরা। জবাব দেন জওয়ানরাও। ইতিমধ্যে বাহিনীকে আটকাতে রাস্তায় নামে স্থানীয় যুবকদের একাংশ। জওয়ানদের লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে তারা। চাদুরায় আসার পথে নগামেও বিক্ষুব্ধ জনতার মুখে পড়ে সিআরপিএফের কয়েকটি গাড়ি।

আরও পড়ুন:বাহিনীকে বাধা দিয়ে নিহত তিন

পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে শেষ পর্যন্ত গুলি চালায় বাহিনী। তাতে জাহিদ দার, সাকিব আহমেদ ও ইশফাক আহমেদ ওয়ানি নামে তিন যুবক নিহত হয়। আহত হয় ১৮ জন। এক ঘণ্টা লড়াইয়ের পরে খতম হয় জঙ্গি তৌসিফ শেখও। সংঘর্ষে এক প্যারা কম্যান্ডোও জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কাশ্মীরে জঙ্গি দমন অভিযানের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় এখন ভাবাচ্ছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে। প্রথমত, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময়ে বাধা দিতে পাথর ছুড়ছে স্থানীয় যুবকদের একাংশ। দ্বিতীয়ত, পুলিশকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে জঙ্গিরা। চাদুরার ঘটনায় এই দু’টি বিষয়েরই প্রভাব পড়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, পুলিশের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ায় বাহিনীর মনোবলে প্রভাব পড়ছিল। জঙ্গিদের পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি এস পি বৈদ্য বলেন, ‘‘জঙ্গিদেরও পরিবার আছে। আমরা তাদের হুমকি দিতে শুরু করলে ফল কী হবে সেটা তারা ভেবে দেখুক। ল়ড়াইটা জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের। পরিবারকে টেনে আনা ঠিক হবে না।’’ আজ রাতেও কুলগামে এক পুলিশ অফিসারের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে জঙ্গিরা। ঢুকতে না পেরে তারা গুলি ছোড়ে। জানালার কাচও ভেঙে দেয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, পাল্টা ব্যবস্থার ফলে বাহিনীর মনোবল হয়তো বাড়বে। কিন্তু অভিযানের সময়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভে রাশ টানা যাচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই বিষয়টি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে মিটতে পারে। স্থানীয়দের বোঝাতে পারেন নেতারা। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে পিডিপি অনেকটাই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ফলে আপাতত এই সমস্যা সমাধানের পথ পাওয়া যাচ্ছে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE