তাঁর নতুন টিম চূড়ান্ত করে শীঘ্রই ঘোষণা করে দিতে চাইছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইলেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই টিমে সামিল হওয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও নামই আসেনি।
অথচ শাহ শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় পরিষদের বৈঠকেও তিনি স্পষ্ট করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে আসন বাড়ানোই তাঁর লক্ষ্য। রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে বৈঠকেও অমিত শাহ পুরভোটকে মহড়া করে বিধানসভার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছিলেন। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভায় রাজ্যের দুই বিজেপি সাংসদের মধ্যে এক জনকেও ঠাঁই না দেওয়ার পর, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় টিমে সামিল হলে সদর্থক বার্তা যেতে পারে। কিন্তু বিজেপির এক শীর্ষ সূত্রের মতে, এখনও পর্যন্ত নতুন টিমের জন্য বাংলা থেকে কোনও প্রতিনিধির নাম আসেনি। অথচ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নাম চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
নাম না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে দিল্লিতে দলের এক নেতা আজ বলেন, অমিত শাহের নিজের বয়স ৫০। ফলে নতুন টিমে অধিকাংশ নেতাই হবেন কম বয়সি। টিম গঠনে রাজ্যগুলির থেকে তরুণ নেতার নামই চাওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের মধ্যে সাংগঠনিক কাজে যথেষ্ট পারদর্শী এমন তরুণ নেতা পাওয়া দুষ্কর, যিনি রাজ্য ছেড়ে গোটা দেশের কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন। আর এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে এমন নেতা থাকলেও বরং রাজ্যেই তাঁকে বেশি প্রয়োজন। যে ভাবে গো-বলয়ের রাজ্যগুলিতে বিজেপি নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে পেরেছে, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে সে কাজ এখনও বাকি। লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি এখন রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ বারে বুথে-বুথেও শক্তি বাড়াতে হবে। হয়তো সে সব ভেবেই বাংলা থেকে কোনও প্রতিনিধির নাম আসেনি। বিজেপির সূত্রের বক্তব্য, এমন নয় যে নাম এলেই তা চূড়ান্ত হয়ে যেত। তবে আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হতো।
কেননা, ১৯৯৩ সালে মুরলী মনোহর জোশীর সভাপতি থাকার সময়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। তপন শিকদার কিছু সময়ের জন্য সচিব হয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে এ নিয়ে দশ বার সভাপতি বদল হলেও কেন্দ্রীয় টিমে পশ্চিমবঙ্গের কোনও প্রতিনিধি সামিল হতে পারেননি।
বিজেপি শিবিরের ধারণা, শেষ মুহূর্তে শাহের টিমে বাংলা থেকে কেউ যদি সামিল না-ও হন, তা হলে নরেন্দ্র মোদী যখন মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করবেন, তখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ মন্ত্রী হবেন। মন্ত্রিসভা গঠনে আরও কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে বাদ পড়েছিল বাংলা। সেই সময় বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, মন্ত্রিসভার পরবর্তী সম্প্রসারণে বাংলার সাংসদকেও সামিল করা হবে। বিজেপি সূত্রের মতে, নতুন টিম গঠন ও মন্ত্রিসভার রদবদল- সবটাই মোদী ও অমিত শাহ মিলেই করছেন। প্রাক্তন সভাপতি রাজনাথ সিংহের টিমের অনেকেই মোদী মন্ত্রিসভায় গিয়েছেন। এখনও কয়েক জন দল থেকে মন্ত্রিসভায় যাবেন। যাঁরা বাকি থাকলেন, তাঁদের সঙ্গে আরও নতুন মুখ নিয়েই নতুন টিম তৈরি করতে চলেছেন অমিত শাহ। তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরের বক্তব্য, নতুন টিমের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শীঘ্রই ঘোষণা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy