বালাকোট অভিযানের ফলাফল নিয়ে প্রমাণ চাওয়ার জন্য বিরোধীদের সমানে তুলোধোনা করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ আর এক ধাপ এগিয়ে জঙ্গি দমনে প্রতি দেশবাসীর সমর্থনকেই অভিযানের ‘প্রমাণ’ হিসেবে দাবি করে বসলেন তিনি।
শুক্রবার গাজ়িয়াবাদে এসে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করার পরেই বিরোধীদের আক্রমণ শুরু করেন মোদী। মনে করিয়ে দেন, বালাকোটে বায়ুসেনার অভিযান নিয়ে পাকিস্তানই প্রথম টুইট করেছিল। এবং তার পরেও অভিযানের কৃতিত্ব নিতে কোনও ঘোষণাই করেনি তাঁর সরকার। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পাকিস্তান কি নির্বোধ (যে অকারণে এমন টুইট করবে)! দেশের ১৩০ কোটি মানুষই আমার প্রমাণ। দয়া করে পাকিস্তানকে খুশি করার চেষ্টা বন্ধ করুন।’’
দেশবাসীকে ‘প্রমাণ’ হিসেবে তুলে ধরার যুক্তি হিসেবে মোদী উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পরে তখনকার সরকার কিছুই করেনি। মানুষ যদি চাইতেন, আগামী দিনেও এমন হামলার পরে সরকার চুপ করে বসে থাকুক, তবে তাঁরা মোদীকে নির্বাচিত করতেন না। মোদীর প্রশ্ন, ‘‘পুলওয়ামায় জঙ্গিরা ৪০ জন জওয়ানকে হত্যা করার পরে কি মোদীর চুপ করে বসে থাকা উচিত ছিল? আগের সরকারের পথেই যদি চলতে হয়, মানুষ তবে আমাকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন কেন?’’
প্রকাশ্যে না বললেও ঘরোয়া মহলে বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, সীমান্তপারের সন্ত্রাস মোকাবিলার প্রতি সমর্থন আর অভিযানের প্রমাণ এক বিষয় নয়। যদি ধরেও নেওয়া যায় বালাকোটের মতো কোনও অভিযানকে দেশের মানুষ সমর্থন করছেন, তাতেও সেটাকে অভিযানের প্রমাণ হিসেবে দেখানো কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত? ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে মোদী সেটাই করলেন আজ। বিরোধীদের শুধু নন, পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানদের পরিজনেরাও বালাকোট অভিযানের প্রমাণ চান। টিভিতে দেখতে চান নিহত পাক জঙ্গিদের ছবি। তেমন বা সঙ্গত কোনও প্রমাণ দেওয়ার দায় এড়িয়ে মোদী কি বলতে চান, নিহত জওয়ানদের পরিবারগুলিও পাকিস্তানকে তোষণ করছে?
গেরুয়া শিবির অবশ্য এ সবে আমল না দিয়েই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদের। এ ব্যাপারে মোদী সরকারের পুরোপুরি পাশে রয়েছে আরএসএস এবং সহযোগী সংগঠনগুলি। সঙ্ঘের নীতি নির্ধারণ করে যে অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা, তার তিন দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে গ্বালিয়রে। প্রথম দিনে আজ যে বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে তাতে, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের ‘লঞ্চ প্যাড’-এ আঘাত হানার জন্য বায়ুসেনার এবং এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মোদী সরকারের প্রশংসা করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাকামীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ সম্পর্কে সঙ্ঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘দেশবিরোধী শক্তিগুলিকে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার ঠিক কাজই করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy