ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ।
বিভিন্ন উত্থান পতনের সময় তাদের পাশে থেকেছে ভারত। তাই নয়াদিল্লির ঋণ শোধ করতে চায় কৃতজ্ঞ তেহরান।
দু’দিন ধরে নয়াদিল্লিতে চলা বহুপাক্ষিক সংলাপ মঞ্চ ‘রাইসিনা ডায়লগ’ এ যোগ দিয়ে এ কথা জানান ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ। শুধ বলাই নয়, এ বিষয়ে ইরানের তৎপরতা বোঝাতে একাধিক যৌথ উদ্যোগের অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ইরানের প্রতি খড়্গহস্ত আমেরিকাকে বার্তা দেওয়ার এটি একটি কৌশল তেহরানের। সুন্নি আরব দেশগুলির বিরুদ্ধে কৌশলগত লড়াইয়ে ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশকে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে পাশে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তেহরানের।
জাভেদ জানিয়েছেন, ভারত এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে একটি করিডর তৈরির জন্য সক্রিয় হবে তাঁর দেশ। তাঁর বক্তব্য, উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে যারা ‘ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের’ নীতিতে বিশ্বাসী, তাদের সঙ্গে ভারতকে জুড়তে আগ্রহী ইরান। এই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে সুন্নি প্রধান লেবানন, সিরিয়ার মতো দেশগুলিও। পাশাপাশি ইরানের বিদেশমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন, নয়াদিল্লি এবং তেহরানের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন আরও বাড়াতে যৌথ বণিকসভা গঠন করা হোক। তাঁর কথায়, ‘‘ইরানের উপর বর্হিবিশ্বের (আমেরিকা) চাপ রয়েছে। কিন্তু আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো সত্ত্বেও ইরান এগিয়ে চলেছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ভারতের সঙ্গেও শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।’’
নয়াদিল্লিতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘উপসাগরীয় অঞ্চলে শন্তি স্থাপনে নতুন মঞ্চ গড়তে চায় আমার দেশ। বিশেষ করে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের জন্য আলোচনা শুরু প্রয়োজন। চার দশক ধরে বহু যুদ্ধের সাক্ষী এই অঞ্চল। ইরান এবং পরবর্তী সময়ে কুয়েতের প্রতি বিরুদ্ধে সাদ্দাম হুসেনের আগ্রাসন, আমেরিকার অভিযান এবং শেষ পর্যন্ত ইয়েমেনকে দুঃস্বপ্নের দিকে ঠেলে দেওয়া যার অন্যতম।’’
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইরানের বিপ্লবের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে তলানিতে ঠেকে যাওয়া তেহরানের সম্পর্ক পরে কিছুটা ভাল হয়েছিল ঠিকই। ১৯৯৯-তে দু’দেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও করেছে। কিন্তু আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক ফের খারাপ হতে শুরু করেছে। তেহরানের অভিযোগ, তালিবানকে উস্কানি দিয়ে গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে পাকিস্তান। আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের অক্ষ নিয়েও সরব ইরান। সেখানকার ওয়াহবি শিক্ষা তালিবান, অন্যান্য ইসলামিক উগ্রপন্থাকে পুষ্ট করে এসেছে বলেই মনে করে তেহরান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy