কৃষকদের মিছিলে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লাঠিচার্জ। ছবি: পিটিআই।
লাঠিচার্জ, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে আটকানো হল হাজার হাজার কৃষকের দিল্লি অভিযান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই এ নিয়ে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি ঢোকার সব কটি প্রবেশপথ। আহত হয়েছেন অনেক কৃষক। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের তরফে এই কিষান ক্রান্তি পদযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছিল। কাঁদানে গ্যাসের শেলের বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন ভারত কিষাণ ইউনিয়নের হরিয়ানা শাখার প্রধান।
কৃষিঋণ মকুব, বিদ্যুতে ভরতুকি, ৬০ বছরের বেশি কৃষকদের পেনশন ও জ্বালানি এবং স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ গুলিকে কার্যকর করার দাবিতেই ছিল এই কিষান ক্রান্তি পদযাত্রা। ২৩ সেপ্টেম্বর হরিদ্বারের টিকাইত ঘাট থেকে শুরু হয়েছিল এই পদযাত্রা। ডাক দেওয়া হয়েছিল দিল্লি অভিযানের। নয়াদিল্লির রাজঘাটে শেষ হওয়ার কথা ছিল এই অভিযানের।
যদিও কৃষকদের রাজধানীতে প্রবেশ আটকাতে সকাল থেকেই অতিরিক্ত তৎপর ছিল দিল্লি পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লিমুখী জাতীয় সড়কে ঢল নেমেছিল কৃষকদের। প্রায় তিরিশ হাজার কৃষক এই পদযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও দিল্লি পুলিশ জানায়, ২৫টির বেশি বাস তাঁরা দিল্লিতে ঢুকতে দেবে না। উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি ঢোকার সব কটি রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় তারা।প্রায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে পূর্ব দিল্লির প্রীত বিহার, ময়ূরবিহার, জগতপুর, শকরপুর, মধুবিহার, গাজিপুর, জগতপুরি, কল্যানপুরী। জনসভা, পাঁচ জনের বেশি জমায়েত, মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল্লি পুলিশ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে পদযাত্রা পৌঁছয় উত্তরপ্রদেশ-দিল্লি সীমানায়। ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লি ঢোকার চেষ্টা করেন কৃষকেরা। তাঁদের আটকাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে দিল্লি পুলিশ। আহত হয়েছেন অনেক কৃষক।
জলকামান, ব্যারিকেড দিয়ে কৃষকদের আটকানোর চেষ্টা দিল্লি পুলিশের। ছবি: পিটিআই।
ভারত কিষান ইউনিয়নের তরফে নরেশ টিকাইত বলেছেন, ‘‘আমাদের কেন আটকানো হল? আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল করছিলাম। আমাদের সমস্যার কথা আমরা কি দিল্লিকে না জানিয়ে পাকিস্তান বা বাংলাদেশে গিয়ে জানাবো?’’
আরও পড়ুন: মুসলিমরা রামের বংশধর, ফের বিতর্কিত মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের
কৃষকদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কেন তাঁদের দিল্লি ঢোকার রাস্তায় আটকানো হল, তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস, জনতা দল (ইউনাইটেড), সমাজবাদী পার্টি, সিপিএম, রাষ্ট্রীয় লোকদল সহ প্রায় সব কটি বিরোধী দল। মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিনে কৃষকদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনাকে নিষ্ঠুর বলে টুইট করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দু হয়েও ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্ব মোকাবিলার রাস্তা আছে, দেখিয়েছিলেন গাঁধী’
২৭ সেপ্টেম্বর মুজফফরাবাদে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মিছিল। ছবি: পিটিআই।
উত্তেজিত কৃষকদের ক্ষোভ মেটাতে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কৃষকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন কৃষকেরা। আপাতত যে যেখানে আছেন, সেখানেই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে জানানো হয়েছে ভারত কিষাণ ইউনিয়নের তরফে।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy