Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্কুল শৌচাগারে মিলল খুদের নলিকাটা দেহ

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া প্রদ্যুম্নকে স্কুলের শৌচাগারে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার সহপাঠীরাই প্রথমে শিক্ষকদের খবর দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

প্রদ্যুম্ন ঠাকুর

প্রদ্যুম্ন ঠাকুর

সংবাদ সংস্থা
গুরুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বাবার হাত ধরে হাসতে হাসতে স্কুলে পৌঁছেছিল বছর সাতেকের ছোট্ট প্রদ্যুম্ন। কিন্তু ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ফোনে ছেলের মৃত্যুর খবর পেলেন বাবা। স্কুলের শৌচাগারে গলার নলি কাটা অবস্থায় উদ্ধার হল প্রদ্যুম্নর রক্তাক্ত দেহ।

শুক্রবার সকালে গুরুগ্রামের সোহনা এলাকায় রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, যৌন অত্যাচারের পর প্রদ্যুম্নকে খুন করা হয়েছে। তদন্তে নেমে শুক্রবারই এক স্কুলবাস চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, জেরার মুখে অপরাধের কথা কবুল করেছে সে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাসের খালাসি-সহ আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুরো বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে স্কুল চত্বরের ৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া প্রদ্যুম্নকে স্কুলের শৌচাগারে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার সহপাঠীরাই প্রথমে শিক্ষকদের খবর দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

প্রদ্যুম্নর বাবা বরুণ ঠাকুর অবশ্য ছেলের মৃত্যুতে সরাসরি স্কুলের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন সকাল ৮টা ৪৫ নাগাদ স্কুল থেকে ফোন করে বলা হয়, ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ছেলের খেয়াল রাখতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। আরও আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো ওকে বাঁচানো যেত।’’ সেই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি স্কুলের প্রিন্সিপাল নীরজা বাত্রা। তিনি বলেছেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষা না করে আমার গাড়িতে প্রদ্যুম্নকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছই।’’

সন্তানহারা: নিহত শিশুর মাকে সান্ত্বনা। গুরুগ্রামে। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, যে শৌচাগারে প্রদ্যুম্নর দেহ মিলেছে সেটি পড়ুয়ারা ছাড়াও ব্যবহার করতেন স্কুলবাসের চালক ও খালাসিরা। প্রশ্ন উঠছে, এই ধরনের অভিজাত স্কুলে তা কীভাবে সম্ভব? এই বিষয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এ দিন প্রদ্যুম্নর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলের গেটে ভিড় জমান উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও স্কুলের তরফে কোনও বার্তা না পেয়ে ভাঙচুর চালান ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ।

অভিজাত এই স্কুলে রহস্যমৃত্যুর ঘটনা প্রথম নয়। ২০১৬ সালে স্কুলের বসন্তকুঞ্জ শাখায় জলের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় ছয় বছরের এক পড়ুয়ার দেহ। গ্রেফতার হন স্কুলের প্রিন্সিপাল-সহ পাঁচ জন। ২০১৬-এর সেই ঘটনায় স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিন স্কুলের শৌচাগারে ফের এক পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে পড়ুয়া আর অভিভাবকদের মধ্যে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE