স্বাগতম। নয়াদিল্লিতে যোগ শিক্ষকদের জাতীয় সম্মেলনে স্মৃতি ইরানি। সোমবার। ছবি: পিটিআই।
বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার আগেই চালু করেছিল। রাজ্যস্তরের স্কুলগুলিতে আগামী বছর থেকে যোগ শিক্ষা চালু করতে চলেছে ছত্তীসগঢ় সরকারও। গত কাল ধুমধাম করে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করার পরে আজই যোগ শিক্ষকদের জাতীয় সম্মেলনে সিবিএসই মাধ্যমের স্কুলগুলিতে যোগাসনকে পাঠ্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সিবিএসই মাধ্যমের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সমস্ত পড়ুয়ারা এর আওতায় আসতে চলেছে।
তবে এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির পিছু নিয়েছে বিতর্ক। স্মৃতি ইরানি প্রথমে বলেছিলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সিবিএসই স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের যোগ শিক্ষা আবশ্যিক পাঠ্যক্রমের আওতায় আসতে চলেছে। কিন্তু এই ঘোষণার পিছনে সরকারের গৈরিকীকরণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে বিরোধীরা মুখ খুলতেই টুইট করে অবস্থান পাল্টান স্মৃতি। পরে মন্ত্রক থেকে বলা হয়, শারীরশিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে এ বার যোগকেও বেছে নিতে পারবে সিবিএসই মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা। আর এটি আবশ্যিক বিষয় নয়। প্রাথমিক ভাবে সমস্ত কেন্দ্রীয় ও জহওর নবোদয় স্কুলে ওই পাঠ্যক্রম চালু হচ্ছে। মন্ত্রকের এক কর্তা আজ বলেন, ‘‘অন্য সিবিএসই মাধ্যমের স্কুলগুলি কী ভাবে তা রূপায়ণ করবে, তার জন্য নিয়ম তৈরি করছে সিবিএসই বোর্ড।’’
কিন্তু যোগশিক্ষা নিয়ে ঘোষণার সূচনাতেই সরকারকে যে ভাবে অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে, তাতে আগামী দিনে এ বিষয়ে আরও বড় ধরনের বিতর্কের আশঙ্কা করছে শিক্ষা মন্ত্রক।
গত এক বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে গৈরিকীকরণের একাধিক অভিযোগ উঠেছে স্মৃতি ইরানির মন্ত্রকের বিরুদ্ধে। মন্ত্রক অধীনস্থ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিত্বদের নিয়োগ করা নিয়ে একযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ বার পাঠ্যক্রমে যোগের অন্তর্ভুক্তি সেই অভিযোগে আরও ইন্ধন জোগাবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। বস্তুত কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা আজ বলেওছেন, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীরা যোগব্যায়াম করলে তাদের শরীর মন সতেজ থাকবে। কিন্তু এই সরকার গত এক বছরে সঙ্ঘ পরিবারের নির্দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টাও তার অঙ্গ নয় তো?’’
যদিও স্মৃতির দাবি, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয়টি নিতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘নতুন একটি বিষয় যুক্ত হওয়ার পরেও ছাত্রছাত্রীদের যাতে পড়ার চাপ না বাড়ে তার জন্য যোগের ৮০ শতাংশ নম্বর রাখা হয়েছে প্র্যাক্টিক্যালে। থিওরিতে থাকবে বাকি কুড়ি শতাংশ। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদেরও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে তারাও ভাল করে যোগাভ্যাস করবে।’’
পড়ুয়াদের যোগাসন শিক্ষা কেমন হচ্ছে, তা দেখতে আগামী বছর থেকে জাতীয় স্তরে যোগাসনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। বিজয়ী পাবেন পাঁচ লক্ষ টাকা। একই সঙ্গে যোগ শিক্ষকেরা কী পড়াবেন তার পাঠ্যক্রমও প্রকাশ করেছে মন্ত্রক। তৈরি করা হচ্ছে যোগ শিক্ষকদের প্যানেলও।
যদিও স্কুলের পাঠ্যসূচিতে যোগ সংক্রান্ত বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি এই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে শিবরাজ সিংহ চৌহানের মধ্যপ্রদেশ সরকার প্রথম সে রাজ্যের স্কুলে যোগকে পাঠ্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy