Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বিরোধী জোটের রাস্তা খোলাই থাকল সিপিএমে

সাধারণ সম্পাদক হলেও পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি বরাবরই সংখ্যালঘু। কিন্তু এ বার বিজেপির জুজুতেই লড়াইটা প্রায় সমানে সমানে নিয়ে এসেছেন তিনি। ভবিষ্যতের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির বিতর্কে উপস্থিত ৮৩ জন সদস্যদের মধ্যে ৬৩ জন বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। তার মধ্যে ৩১ জন ইয়েচুরিকে সমর্থন করেছেন।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৩
Share: Save:

অমিত শাহদের আক্রমণকে হাতিয়ার করে দলের মধ্যে নিজের ‘প্রত্যাবর্তন’ ঘটিয়ে ফেললেন সীতারাম ইয়েচুরি!

অমিতের নেতৃত্বে বিজেপি কেরলে সিপিএমের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীরা দিল্লিতে সিপিএমের সদর দফতরের সামনে দু’সপ্তাহ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিজেপি-র এই মারমুখী মনোভাব দেখিয়েই ইয়েচুরি দলের নেতাদের বোঝালেন, এই বিজেপি-কে রুখতে অন্যান্য দলের সঙ্গে হাত মেলানো জরুরি।

কমিউনিস্টদের ইতিহাস আউড়ে ইয়েচুরির যুক্তি, ট্রটস্কি বলেছিলেন, ‘মার্চ সেপারেটলি বাট স্ট্রাইক টুগেদার’। কিন্তু এখন একসঙ্গে ‘মার্চ’ করাও জরুরি।

সাধারণ সম্পাদক হলেও পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি বরাবরই সংখ্যালঘু। কিন্তু এ বার বিজেপির জুজুতেই লড়াইটা প্রায় সমানে সমানে নিয়ে এসেছেন তিনি। ভবিষ্যতের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির বিতর্কে উপস্থিত ৮৩ জন সদস্যদের মধ্যে ৬৩ জন বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। তার মধ্যে ৩১ জন ইয়েচুরিকে সমর্থন করেছেন। আর ৩০ জন প্রকাশ কারাটের সুরে বলেছেন, বিজেপি-কে ঠেকাতে হলেও কংগ্রেস বা অন্য দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট নয়। দু’জন কোনও অবস্থান নেননি।

সমানে সমানে লড়াই হয়েছে বলেই পলিটব্যুরোর মতো কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটি করে ইয়েচুরির রাজনৈতিক লাইন খারিজ করে দিতে পারেননি কারাটেরা। অন্তত জানুয়ারি মাসের আগামী কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠক পর্যন্ত তা ঠেকিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি। ঠিক হয়েছে, সব রকম মতামত নিয়েই আপাতত পলিটব্যুরো দলের রাজনৈতিক রণকৌশলের খসড়া তৈরি করবে। জানুয়ারিতে তা চূড়ান্ত হবে। ইয়েচুরি লড়াইটা একেবারে এপ্রিলে হায়দরাবাদের পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাইছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কিছুই গৃহীত হয়নি। কিছু খারিজও হয়নি। সব সম্ভাবনার দরজাই খোলা।’’

বিজেপি-র বিক্ষোভের জন্য এ কে গোপালন ভবন এখন পুলিশের লোহার ব্যারিকেডে ঘেরা। তার মধ্যেই তিন দিন কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়েছে। কেরলের বিজেপি-আরএসএস নিশানা করছে সিপিএমকে। সেই কারণে কেরলের কিছু নেতাও এ বার ইয়েচুরির পক্ষ নিয়ে বিজেপি-কে ঠেকাতে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র ও বাংলার দু’জন বাদে বাকিরা ইয়েচুরির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। অন্ধ্র, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানার অনেকেও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে। বিহার, রাজস্থান অবশ্য কংগ্রেস বা অন্য আঞ্চলিক দলের পক্ষে জোটে সায় দেয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE