কনরাড সাংমা। ফাইল চিত্র।
চার দিন পরেও পুলিশ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না, হঠাৎ কেন উত্তপ্ত হয়ে উঠল শান্ত শিলং। উঠে আসছে নানা রকম তত্ত্ব। পর্যটকরা পালাতে পারলে বাঁচেন। ভাল রকম বর্ষা নামার আগে শিলংয়ের পথে এখন পর্যটকদের গাড়ির লাইন লেগে থাকার কথা। পর্যটন মরসুমের সেই চেনা ছবিটা উধাও। দোকানপাট বন্ধ। গাড়ি অমিল। দু’দিন হোটেলবন্দি থেকে অনেক পর্যটক গুয়াহাটি বা অন্যত্র ফিরে গিয়েছেন। সেনাবাহিনীর ফ্ল্যাগ মার্চের পরেও পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আজও সান্ধ্য আইন ভেঙে রাতে ফের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয় শিলংয়ে। গত রাতে হাঙ্গামা হয় বড়বাজার এলাকায়। আজ মটফ্রাংয়ে উত্তেজিত জনতা কার্ফুর মধ্যেই পথে নেমে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশকর্মী ও সাংবাদিক-সহ অনেকে জখম হন। বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্র আরও ৪ কোম্পানি সিআরপি এবং ২ কোম্পানি ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ পাঠাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার সন্দেহ, হাঙ্গামার পিছনে ‘বাইরের কোনও শক্তির হাত’ রয়েছে।
কনরাডের কথায়, ‘‘যে ভাবে পঞ্জাবি লেনের ঘটনা বিরাট সংঘর্ষের আকার নিল, গুজব ছড়িয়ে সেটাকে সাম্প্রদায়িক চেহারা দেওয়ার চেষ্টা হল— তা থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে এর পিছনে বাইরের প্ররোচনা রয়েছে। সংঘর্ষস্থলে দামি মদ, নগদ টাকা মিলেছে। বোঝা যাচ্ছে, যারা পাথর ছুঁড়ছিল তাদের পিছন থেকে মদত দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু দিল্লিতে আজ জানান, শিলংয়ে শিখদের উপরে হামলা বা গুরুদ্বার ভাঙচুরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। গুজবে কান না দিতে টুইট করেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত কী থেকে?
একটি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে মটফ্রান এলাকায় পঞ্জাবি লেনে কল থেকে জল নেওয়া নিয়ে স্থানীয় হিন্দিভাষী মহিলাদের সঙ্গে এক বাসচালকের ছেলেদের ঝগড়া-মারধর থেকেই এই ঘটনা। অন্য সূত্র বলছে, পঞ্জাবি লেনে এক খাসি বাসচালক হিন্দিভাষী মহিলাকে ধাক্কা মারায় ঝামেলার সূত্রপাত। জোড়া হচ্ছে ইভ টিজিংয়ের সূত্রও।
আরও পড়ুন: দমবন্ধ রাত হোটেলে
এ পর্যন্ত মারধর ও ভাঙচুরে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । শিলংয়ের এসপি স্টিফেন রিংজা ও একাধিক পুলিশকর্মী-সহ ১৫ জন জখম হয়েছেন তিন দিনে। হরিজন কলোনি থেকে পালানো অন্তত ৩০০ মহিলা ও শিশুকে সেনাবাহিনীর শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় রয়েছে সান্ধ্য আইন। রাতভর কার্ফু গোটা শহরে। হরিজন কলোনি ও পাঞ্জাবি লেনের পুরুষরা এখনও বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে হরিজন কলোনি ও পঞ্জাবি লেনের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরাতে হবে। এ নিয়ে আজ বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাবা হচ্ছে বিকল্প স্থানের কথা। সেনাবাহিনীর ১০১ এরিয়ার জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস আহুজা আজ পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেন। ঘুরে দেখেন আশ্রয় শিবিরও।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস সাংমা জানান, আরও দু’দিন ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবা বন্ধ থাকবে। পেট্রল বোমা আটকাতে খোলা বাজারে বা বোতলে তেল বিক্রি বন্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy