আদালতের সিদ্ধান্ত, অভিযুক্ত হিসেবে এ বার বিচারের মুখোমুখি হতে হবে শশীকে। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
স্ত্রী সুনন্দা পুষ্করের মৃত্যু মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে শশী তারুরকে। মঙ্গলবার জানিয়ে দিল দিল্লির এক আদালত। আগামী ৭ জুলাই শশীকে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
গত মাসেই সুনন্দা মামলার চার্জশিট দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। তাতে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ শশীর নাম করা হয়েছে। ৩ হাজার পাতার চার্জশিটে পুলিশের দাবি ছিল, সুনন্দাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া ছাড়াও তাঁর সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন শশী।
চার্জশিটের সঙ্গে সুনন্দার জীবনের শেষ কিছু দিনের ইমেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা অংশও আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যুর ন’দিন আগে, ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারিতে একটি ইমেলে সুনন্দা লিখেছিলেন, “আমার বেঁচে থাকার আর কোনও ইচ্ছে নেই... শুধু মৃত্যুর কামনাই করি।” চার্জশিট দাখিল করে তদন্তকারীদের দাবি ছিল, ‘অবসাদে তলিয়ে যাওয়ার সময় স্বামী হিসাবে সুনন্দাকে উপেক্ষা করেছিলেন শশী।’
আরও পড়ুন: যেচে সময় চাইলেন ‘শত্রু’ অমিত, কাল বৈঠক উদ্ধবের সঙ্গে
সুনন্দার দেহে চোটের উল্লেখ করে পুলিশের আরও দাবি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিয়মিত ঝগড়াঝাঁটিও হতো। ওই চোট গুরুতর না হলেও, তা যে দম্পতির মধ্যে অশান্তির কারণেই হয়েছে, তা-ও মনে করছে পুলিশ।
মৃত্যুর আগে হোটেলে শশীর সঙ্গে প্রকাশ্যে ঝগড়া করতে দেখা গিয়েছিল সুনন্দাকে। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে দেখেই আদালতের সিদ্ধান্ত, অভিযুক্ত হিসেবে এ বার বিচারের মুখোমুখি হতে হবে শশীকে। চার্জশিট পেশ করার সময়ই পুলিশের সমস্ত দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ এবং ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন শশী। যদিও এ দিন বিকেল পর্যন্ত এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
আরও পড়ুন
‘ডখার’ খেদানোর আন্দোলনই পঙ্গু করে ফেলল শিলংকে
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলের স্যুট থেকে সুনন্দা পুষ্করের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর পর থেকেই তা নিয়ে জলঘোলা হতে থাকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, সুনন্দার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। ঘটনাচক্রে, মৃত্যুর আগেই হোটেলে শশীর সঙ্গে প্রকাশ্যে ঝগড়া করতে দেখা গিয়েছিল সুনন্দাকে। এক পাকিস্তানি মহিলা সাংবাদিকের সঙ্গে শশীর ‘সম্পর্ক’কে কেন্দ্র করে বাদানুবাদ হয় বলে ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য। ঘটনাচক্রে, সোশ্যাল মিডিয়ার ওই পাকিস্তানি সাংবাদিকের সঙ্গে শশীর সম্পর্ক নিয়ে অভিযোগ করার দু’দিন পরেই সুনন্দার দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে শশীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না আনলেও বিষক্রিয়ায় সুনন্দার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এর পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ। তবে তার পরের বছর কেন্দ্রে সরকার বদলের পর সুনন্দার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি খুনের মামলা রুজু করা হয়। তাতে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পায় শশীর দল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার অভিযোগ ছিল, “তারুরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনতে না-পেরে নরেন্দ্র মোদী এখন আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনেছেন। অথচ কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। দল তাঁর পাশে রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy