প্রতীকা ছবি
মৃত্যুশয্যায় যাঁরা নিদারুণ কষ্ট ভোগ করেছেন তাঁদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এই অনুমতি মিলবে কঠোর নির্দেশিকা বা গাইডলাইনের ভিত্তিতে। শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
সুইত্জারল্যান্ডের মতো গুটিকয়েক পশ্চিমি দেশ আগে থেকেই স্বেচ্ছামৃত্যুকে অধিকার বলে মেনে নিয়েছে। যদিও ভারতে তা আত্মহত্যার সামিল, দণ্ডনীয় অপরাধ। সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়ে কিন্তু গোটা অবস্থাটাই বদলে গেল। স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে "কমন-কজ" নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বলেছিল, "বেঁচে থাকাটা মানুষের ব্যক্তিগত আধিকার। ঠিক তেমনই মরণাপন্ন কোনও ব্যক্তি যদি রোগ-যন্ত্রণা ভোগ করার বদলে সম্মানের সঙ্গে মরতে চান, তবে তাঁকেও সে অধিকার দেওয়া উচিত।"
আজকের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ প্যাসিভ ইউথ্যানাসিয়াকে স্বীকৃতি দিলেও চাপিয়েছে একগুচ্ছ কড়া শর্ত। সুইত্জারল্যান্ডের মতো দেশে সরাসরি বা অ্যাকটিভ ইউথ্যানাসিয়া চালু রয়েছে। এই ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে সরাসরি বিষ ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু এ দিনের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র পরোক্ষ বা প্যাসিভ ইউথ্যানাসিয়াকেই স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ‘টার্মিন্যাল স্টেজ’-এ রয়েছেন, এমন ব্যক্তিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাইরে থেকে দেওয়া জীবনদায়ী ব্যবস্থা কিংবা প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কখনও বা খাবার ও জল বন্ধ করে ধীরে-ধীরে ঠেলে দেওয়া হয় মৃত্যুর দিকে।
আরও পড়ুন- ৪২ বছর মৃত্যুশয্যায়, রেহাই পাননি অরুণা
আরও পড়ুন, গলদ শোধরায় না, কালি লাগায়! হতাশ ‘মূর্তিম্যান’
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, চিকিত্সায় সুস্হ হতে পারবেন না, এমন কোনও ব্যক্তি যদি ভেন্টিলেটর কিংবা আর্টিফিশিয়াল সাপোর্ট সিস্টেমের সাহায্যে বেঁচে থাকতে না চান, তবে তাঁকে সজ্ঞানে "লিভিং উইল" করে স্বেচ্ছামৃত্যু চেয়ে রাখতে হবে। রোগী যদি এমন অচেতন অবস্থায় পৌঁছে যান যে সেই অবস্থা থেকে ফেরানোর আর সম্ভাবনা নেই, তখন সেই উইল বা ইচ্ছাপত্রের ভিত্তিতে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন রোগীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা নিকট কোনও আত্মীয়। এর পর আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কমন কজের মতো সংগঠনগুলো স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, বেঁচে থাকাটা যাঁদের কাছে যন্ত্রণা, সেই সব মানুষেরা এ বার শান্তিতে মরতে পারবেন। এটাই বা কম কীসের?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy