Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

গোরক্ষা-হিংসা বন্ধে নির্দেশ

সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছিলেন, গোরক্ষক বাহিনীকে লাগাম পড়ানো রাজ্যের দায়িত্ব। জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টেও কেন্দ্র একই অবস্থান নিয়ে জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও রকম নজরদারি সমর্থন করে না।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

শুধু নরেন্দ্র মোদীর মুখের কথায় কাজ হবে না। গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডব রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যগুলিকে অবশ্যই কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে বলে রায় দিল শীর্ষ আদালত। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, গোরক্ষার নামে কেউ যাতে আইন হাতে না নেয় তা দেখতে প্রতিটি জেলায় এক জন করে ডিএসপি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দিতে হবে। গোরক্ষকদের তাণ্ডব মোকাবিলায় কেন্দ্র কী করছে, তা-ও জানতে চেয়েছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছিলেন, গোরক্ষক বাহিনীকে লাগাম পড়ানো রাজ্যের দায়িত্ব। জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টেও কেন্দ্র একই অবস্থান নিয়ে জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও রকম নজরদারি সমর্থন করে না। তবে আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের দায়িত্ব। তাই এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের কোনও ভূমিকা নেই।

কিন্তু কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে ওই বক্তব্য জানানোর পরে দেশের বিভিন্ন অংশে গোরক্ষক বাহিনীর হাতে ৬৬টি নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। তার পরিসংখ্যান দিয়ে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ আজ শীর্ষ আদালতে বলেন, ‘‘শুধু বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্র দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এটা এখন জাতীয় সমস্যা।’’ ইন্দিরা যুক্তি দেন, মহিলা ও শিশুরও মৃত্যু হয়েছে গোরক্ষক বাহিনীর হাতে। সংবিধানের ২৫৬-তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নিরীহ মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া কেন্দ্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ বিষয়েও কেন্দ্রকে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেয় আদালত। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘লোকে যাতে আইন হাতে তুলে নিতে না পারে, তার একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। এটা থামাতেই হবে।’’

সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশের পরে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এ বার কি রাজধর্ম পালন করবেন?’’ সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির সরকার এবং আরএসএসের জন্য এটা তিরস্কার। বিপদঘন্টিও বটে।’’ বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্রের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, গোসেবার সঙ্গে গোরক্ষার সম্পর্ক নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যকে এ বিষয়ে চিঠিও দিয়েছে।

কর্নাটক আর বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত এই মামলার শরিক। শেষ চারটি রাজ্যের প্রস্তাব ছিল, প্রতি ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে আইনকে নিজের পথে চলতে দেওয়া হোক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট নির্দিষ্ট অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিলে তারা তা মেনে নেয়। এই মামলার পরের শুনানি হবে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE