চার্জশিট প্রাপ্ত নেতাদের ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট।
শুধু সাজাপ্রাপ্ত নয়, ফৌজদারি মামলায় চার্জশিট পেশ হলেও কি নেতারা আর ভোটে লড়তে পারবেন না? এই প্রশ্নে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। তবে সংসদকে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলিকেও কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে।
একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই বিষয়ে তাঁরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে নারাজ। তবে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীরা যে হলফনামা জমা দেন, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও মামলায় চার্জশিট গঠন হলে তা বিস্তারিত ও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকেও এই সব প্রার্থীদের বিষয়ে দলের ওয়েবসাইটে জানাতে হবে। ভোটের প্রচার এবং সংবাদমাধ্যমেও চার্জশিটের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে এই সব প্রার্থীদের।
এ বছরের গোড়াতেই কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, দেশের ৩৬ শতাংশ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় বিচার চলছে। দেশে মোট সাংসদ ও বিধায়কের সংখ্যা ৪৮৯৬। তার মধ্যে বিভিন্ন মামলায় ১৭৬৫ জনের বিচার চলছে। মামলার সংখ্যা ৩০৪৫।
গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
‘পাবলিক ইন্টারেস্ট ফাউন্ডেশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে মূল জনস্বার্থ মামলাটি করেন আইনজীবী দীনেশ দ্বিবেদী। তাঁর বক্তব্য ছিল, দাগি নেতারা যাতে ভোটে লড়তে না পারে, সে রকম কোনও আইন কোনওদিনই পাশ করবে না সংসদ। তাই কোনও ফৌজদারি মামলায় কারও বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হলেই তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার কেড়ে নেওয়া হোক। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন রুখতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: হিমাচলে ট্রেকিংয়ে গিয়ে নিখোঁজ রুরকি আইআইটির ৩৫ ছাত্র সহ ৪৫ জন, উদ্বেগে পরিজনরা
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি শুরু হয়। বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি রোহিনটন নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মিশ্র। সরকার পক্ষে সওয়াল করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল কোট্টায়ন কাটানকোট বেনুগোপাল। বিপক্ষে তাঁরই ছেলে কৃষ্ণন বেনুগোপাল।
শুনানি চলাকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দিয়েছেন, বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই কাউকে দোষী ধরে নেওয়া এবং ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা সংবিধান বিরোধী। এতে ভোটাধিকার এবং ভোটে (রাইট টু ভোট) দাঁড়ানোর (রাইট টু কনটেস্ট) অধিকার লঙ্ঘন করা হবে। তিনি আরও বলেন, শীর্ষ আদালত নিশ্চয়ই এ বিষয়ে অবগত যে, রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে বহু ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের হয়।
আরও পড়ুন: পেট থেকে গাছ! মাটি খুঁড়তেই মিলল কঙ্কাল
জুনিয়র বেনুগোপালের পাল্টা যুক্তি, নেতাদের বিরুদ্ধে অধিকাংশ মামলাই প্রচুর দেরি হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তার মধ্যেই ভোটে দাঁড়িয়ে পাঁচ বছরের মেয়াদও সম্পূর্ণ করে ফেলেন এই সব নেতারা। একইসঙ্গে তিনি বলেন, এই সব চার্জশিট প্রাপ্ত নেতাদের ভোটে দাঁড়ানো ঠেকাতে আইন প্রণয়ন করা উচিত। তা ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলিকেও এই ধরনের প্রার্থীদের টিকিট না দেওয়ার জন্য পরামর্শ বা নির্দেশ দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy