Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

লোয়া মৃত্যু স্বাভাবিক, নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টের

বিচারক ব্রিজগোপাল হরিকিষান লোয়া-র ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুতে নতুন করে নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

লোয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক, জানাল সুপ্রিম কোর্ট।

লোয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক, জানাল সুপ্রিম কোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪১
Share: Save:

তদন্ত হলে প্রথমেই আতসকাচের তলায় চলে আসতেন অমিত শাহ। লোকসভা ভোটের আগে নতুন অস্ত্র পেয়ে যেতেন রাহুল গাঁধী।

কিন্তু তা হল না। বিচারক ব্রিজগোপাল হরিকিষান লোয়া-র ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুতে নতুন করে নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের রায়, বিচারক লোয়ার স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছিল। তার পিছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে, তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলার ভিত্তি নেই। ব্যক্তিগত স্বার্থ, রাজনৈতিক টেক্কা দিতেই জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। রাজনৈতিক শত্রুতা গণতন্ত্রের আঙিনাতেই মেটানো উচিত। ভবিষ্যতে এ নিয়ে আর কোনও মামলাতেও কার্যত দাঁড়ি টেনে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

মৃত্যুর ঠিক আগে সিবিআই আদালতের বিচারক লোয়ার এজলাসে গুজরাতের সোহরাবুদ্দিন শেখ ভুয়ো সংঘর্ষ হত্যা মামলার শুনানি চলছিল। প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমান বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অভিযোগ, অমিতের তরফে বিচারক লোয়াকে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা হয়। তাঁর মৃত্যুর পরে নতুন বিচারক আসেন। এবং ঠিক এক মাসের মাথায় অমিত শাহ বেকসুর খালাস পেয়ে যান। স্বাভাবিক ভাবেই আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তিতে বিজেপি এবং অমিত শাহ।

বিচারক লোয়ার মৃত্যুতে তদন্তের আর্জির মামলা বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চে পাঠানো থেকেই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চার প্রবীণ বিচারপতির বিদ্রোহের সূত্রপাত। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, মোদী সরকারের পক্ষে স্পর্শকাতর সব মামলা প্রবীণ বিচারপতিদের এড়িয়ে নিজের বাছাই করা বিচারপতিদের কাছে পাঠাচ্ছেন দীপক মিশ্র।

আরও পড়ুন: অমিত-সত্য বেরোবেই, টুইট রাহুলের

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এ এম খানউইলকর। দু’জনেই মহারাষ্ট্রের। তাই বেঞ্চে এঁদের রাখা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। একই বিষয়ে মামলায় বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

মামলার আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেছেন, অপরাধকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। বিচারক লোয়ার কাকা শ্রীনিবাস লোয়ার মন্তব্য, ‘‘সবটাই খুব সাজানো মনে হচ্ছে।’’ আর বিচারক লোয়ার বোনের মন্তব্য, ‘‘আর কোনও আশা নেই।’’ অন্যতম মামলাকারী, বম্বে ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ আবদি জানিয়েছেন, তাঁরা রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন।

আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই মামলাটিকে ‘বিচার ব্যবস্থার উপর অপবাদমূলক আক্রমণ’ বলেছেন। বেঞ্চের হয়ে রায়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় লিখেছেন, এই মামলাগুলি ছিল ‘বিচার ব্যবস্থার উপর গুরুতর হামলা’ এবং বিচারপতিদের ‘গুরুতর ভাবে কালিমালিপ্ত’ করার চেষ্টা। বিচার ব্যবস্থার উপরে মানুষের বিশ্বাস গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদেরও রেয়াত করা হয়নি।

বিচারপতিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে, প্রশান্ত ভূষণদের একহাত নিয়েছে বেঞ্চ। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অপরাধের প্রক্রিয়া শুরুর কথা ভাবা হলেও না এগোনোর সিদ্ধান্তই হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court H Loya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE