পুণের বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার অন্তরা দাসের খুনের নেপথ্যে তাঁর পরিচিত যুবক সন্তোষ কুমারই কি না, তিন দিন বাদেও তা স্পষ্ট হয়নি পুলিশের কাছে। তবে অন্তরার পরিবারের অভিযোগ মতো সন্তোষকে বেঙ্গালুরু থেকে আটক করেছে পুণের পুলিশ। অন্তরার কল লিস্ট খতিয়ে দেখে, পুণের কিছু লোকজনকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র ও অন্তরার পরিবারের দাবি, পুণে অফিসে যোগ দেওয়ার আগে বেঙ্গালুরুতে প্রশিক্ষণে ছিলেন অন্তরা। সেখানেই সন্তোষের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর পর থেকে সন্তোষ নানা ভাবে অন্তরাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকেন। অন্তরা প্রত্যাখ্যান করলেও সন্তোষ মানতে চাননি। অন্তরা পুণেতে চলে এলে সন্তোষ এক বার সেখানে এসেছিলেন। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনেও অন্তরাকে উত্ত্যক্ত করতেন তিনি। অন্তরার যমজ বোন সঞ্চারী আগেই জানিয়েছেন, অন্তরা একাধিক বার সন্তোষের মোবাইল ফোন নম্বর ‘ব্লক’ করেছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই নতুন নতুন নম্বর থেকে অন্তরাকে ফোন করতেন এবং এসএমএস পাঠাতেন সন্তোষ। অন্তরার খুনের পর তাঁর বাবা দেবানন্দ দাস পুণের ডেহু রোড থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে সন্তোষ কুমারকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করেন দেবানন্দবাবু।
পুণে পুলিশের এক কর্তা সোমবার জানান, তাদের একটি দল রবিবার রাতে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে সন্তোষের সঙ্গে দেখা করে। এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরে এ দিন রাতে তাঁকে নিয়ে পুণে পৌঁছয় তদন্তকারী দলটি। ‘‘সন্তোষকে বিশদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই পুণেতে নিয়ে আসা হচ্ছে,’’ বলেন ওই পুলিশকর্তা।
এর পাশাপাশি তদন্তের জাল আরও ছড়িয়েছে। পুণেতে অন্তরার বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পুণেতে অন্তরার কোনও শত্রু তৈরি হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে অন্তরার।
গলার ক্ষতের ধরন দেখে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, অন্তরাকে খুনের জন্যই কোপ মারা হয়েছিল। সুতরাং আততায়ী কোনও পেশাদার খুনি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। মোবাইলের কললিস্ট দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের দিন রাত ৮টা নাগাদ অন্তরার সঙ্গে তাঁর কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁকে যে যুবক ‘হোম ডেলিভারি’তে খাবার দিতেন, সেই সজনেম শেখের সঙ্গেও কথা হয়েছিল অন্তরার।
এর থেকে পুলিশের অনুমান, অফিস থেকে বেরিয়ে কেএনবি চক পর্যন্ত নির্জন ও আলো-আঁধারি রাস্তা ধরে অন্তরা যে হেঁটেই ফিরবেন, তা আততায়ীর জানা থাকতে পারে। তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘বেশ কিছু সূত্র মিলেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই সে সব জানানো সম্ভব নয়।’’ এ দিন অন্তরার পরিবারের সঙ্গেও একাধিক বার কথা বলেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy