ক’দিন বাদেই বিধানসভা ভোটের মরিয়া লড়াই। সভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন খোদ দলীয় সভাপতি। আর মঞ্চে নাক ডাকাচ্ছেন দলের তুলে ধরা মুখ্যমন্ত্রী-মুখ!
সেই কর্নাটক! সেই অমিত শাহ! সেই ইয়েদুরাপ্পা!
কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে সম্মানের লড়াইয়ে দলের সভাপতি অমিত শাহের নেতৃত্বে নেমেছে বিজেপি। কিন্তু প্রায় প্রথম দিন থেকে একের পর এক ঘটনায় মুখ পুড়ছে বিজেপির! আর ঘটনাচক্রে প্রায় সবটাই ঘটছে অমিত শাহের সৌজন্যে!
দিন তিনেক আগে দলের মুখ্যমন্ত্রী মুখ ইয়েদুরাপ্পাকে পাশে বসিয়ে অমিত বলেছিলেন, ‘‘দুর্নীতিতে ইয়েদুরাপ্পা সরকারই সেরা!’’ তার পরে অমিতের বক্তৃতার তর্জমা করতে গিয়ে দলের সাংসদ প্রহ্লাদ জোশী বলে বসেন, ‘‘মোদীই দেশের সর্বনাশ করবেন!’’ দু’-দু’বার মুখ পোড়ার পরে আজ প্রচারে বেরিয়ে প্রহ্লাদকে সরিয়ে অনুবাদক হিসেবে অমিত আনেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারকে। সভায় নিজের ভুলের কথা কবুলও করেন।
ভুল শুধরে, অনুবাদক বদলে অমিত তথা বিজেপি নেতৃত্ব যখন ভাবছেন, ‘অল ইজ ওয়েল’, তখনই নজরে এল সভায় বসে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন দলের মুখ্যমন্ত্রী মুখ! তাতেও শেষ হল না বিড়ম্বনার পালা। কিছু ক্ষণ পরে অমিতের সভায় দলিত কর্মীরা এমন বিদ্রোহ করলেন যে শেষে পুলিশ দিয়ে তাঁদের বের করতে হল! তার পর রাতে এক নিহত আরএসএস কর্মীর পরিবারকে অর্থসাহায্য করার অভিযোগে অমিতের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙার নালিশ ঠুকলেন রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব!
পরিস্থিতি বুঝে কর্নাটকে বিজেপি নেতারাই বলছেন ‘অল ইজ নট ওয়েল’। তাঁরা মানছেন, কর্নাটকে রাহুল গাঁধীর কৌশলের সামনে বিজেপি এখনও সে ভাবে এঁটে উঠতে পারেনি। বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাও বলছে, এ পর্যন্ত জেতার অবস্থায় নেই দল। তার উপরে এত বিড়ম্বনা! যা সামলাতে অমিতকে ছুটতে হচ্ছে কখনও রাজবাড়ি তো কখনও দলিতের কুঁড়েয়।
দলিতদের ক্ষোভ মেটাতে আজ বিজেপি একটি সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে আচমকা অমিতের সামনেই ক্ষুব্ধ কর্মীরা বলতে থাকেন, কর্নাটকে দলের নেতা অনন্ত হেগড়ে দলিতদের ‘কুকুর’ বলেছেন, সংবিধান বদলের কথা বলেছেন। অথচ দল কিছু করেনি। কোনও ভাবেই কর্মীদের বাগে আনতে না পেরে শেষে পুলিশ দিয়ে বিদ্রোহীদের বের করে দেওয়া হল। পরে অমিত বলেন, ‘‘অনন্ত হেগড়ের মন্তব্যের সঙ্গে দল একমত নয়।’’
বিজেপির হাল দেখে খুশি কংগ্রেস। আর বিজেপি আতঙ্কে— কে জানে আবার কখন কী হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy