হনুমান চালিসা বিতর্কে মন্তব্য উদ্ধবের। ফাইল চিত্র।
হনুমান চালিসা বিতর্ক থামার নাম নেই মহারাষ্ট্রে। আজ বরং কার্যত প্রথম বার ওই বিতর্কে মুখ খুলে শিবসেনা নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘‘আমাদের হিন্দুত্ব হনুমানের গদার মতো। কিন্তু কেউ যদি এ নিয়ে দাদাগিরি করতে আসে, আমরা জানি কী ভাবে তা গুঁড়িয়ে দিতে হয়।’’
মহারাষ্ট্রের মসজিদ থেকে মাইকের ব্যবহার কমানোর দাবিতে আগামী ৩ মে থেকে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। মাইক সংক্রান্ত বিবাদের জল এখন মহারাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের বাড়ির সামনে বসে স্থানীয় রাজনীতিতে বিরোধী সাংসদ ও বিধায়ক রানা দম্পতি হনুমান চালিসা পড়ার দাবি করেছিলেন। পাল্টা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বসে হনুমান চালিসা, নমাজ পড়ার আবেদন চেয়ে সরব হলেন শরদ পওয়ারের দলের সংখ্যালঘু নেত্রী ফাহমিদা হাসান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হনুমান চালিসা, নমাজ, শিখদের এক এক ওঙ্কার পাঠ করার আবেদন জানান। আজ ওই আবেদন খারিজ করে দেয় কেন্দ্র।
কিন্তু রাজনীতির অনেকেই মনে করছেন, রাজ ঠাকর ও রানা দম্পতির মাধ্যমে শাসক শিবসেনা শিবির তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে অস্বস্তিতে ফেলার যে কৌশল নিয়েছে তাতে অনেকটাই সফল বিজেপি। মহারাষ্ট্রের বঞ্চিত বহুজন আগাড়ি দলের নেতা প্রকাশ অম্বেডকরের মতে, ধর্মের ভিত্তিতে মেরুকরণের কৌশলে অনেকাংশেই সফল হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সামনেই মুম্বই পুরসভার নির্বাচন। তাতে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে হিন্দুত্ব ও মেরুকরণের রাজনীতির উপরেই ভরসা করেছে দল। প্রকাশ অম্বেডকরের মতে, সেই নির্বাচনে যে বিজেপি মেরুকরণে ভরসা রাখছে, হনুমান চালিসা বিতর্ক সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।
এ যাত্রায় বিজেপির পাতা ফাঁদে শিবসেনা নেতারা সব জেনেবুঝে পা দিয়েছেন বলেই মত প্রকাশের মতো নেতাদের। তাঁদের মতে, উদ্ধবের বাসভবনের সামনে হনুমান চালিসা পড়ার যে মঞ্জুর হবে না তা বিলক্ষণ জানতেন রানা দম্পতি। সেই আবেদন খারিজের সঙ্গেই দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। মহারাষ্ট্রে হনুমান চালিসা পড়ার শাস্তি গ্রেফতারি— ওই অভিযোগ তুলে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। অনেকের মতে, রানাদের বাড়তি প্রচার পাওয়ার সুযোগ যেমন শিবসেনা করে দিয়েছে, তেমনই আজ মুখ খুলতে হয়েছে উদ্ধব ঠাকরেকে। তিনি আজ রাতে বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে, আমরা হিন্দুত্বকে অবহেলা করেছি। হিন্দুত্ব কি ধুতি নাকি? আমাদের হিন্দুত্ব হল গদাধারী, হনুমানের গদার মতো।
যদি আপনি হনুমান চালিসা পাঠ করতে চান, বাড়িতে চলে আসুন। কিন্তু যদি দাদাগিরি করতে চান, আমরা জানি তা কী ভাবে গুঁড়িয়ে দিতে হয়।’’ রাজনীতির অনেকের মতে, বিজেপিও চাইছিল যাতে হিন্দুত্ব প্রশ্নে মুখ খোলেন উদ্ধব। সে ক্ষেত্রে হিন্দুত্বের চেনা পিচে উদ্ধব তথা শিবসেনাকে আগামী দিনে আক্রমণ শানানো অনেক সোজা হবে বিজেপির পক্ষে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy